কুমিল্লা সিটি নির্বাচনে বিজয়ী আওয়ামী লীগ প্রার্থী রিফাত

ইসির পরীক্ষায় নৌকার জয়

কুমিল্লা সিটি নির্বাচনে বিজয়ী আওয়ামী লীগ প্রার্থী রিফাত

অনলাইন ডেস্ক

গতকাল বুধবার রাত সাড়ে ৯টায় শেষ হয়েছে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের (কুসিক) আলোচিত নির্বাচন। বেসরকারিভাবে ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী, নৌকার প্রার্থী আরফানুল হক রিফাত প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কুর চেয়ে মাত্র ৩৪৩ ভোট বেশি পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। রিফাত পেয়েছেন ৫০ হাজার ৩১০ ভোট।

দুইবারের সাবেক মেয়র এবং নির্বাচনের জন্য বিএনপি ছেড়ে আসা মনিরুল হক সাক্কু পেয়েছেন ৪৯ হাজার ৯৬৭ ভোট।

নির্বাচনে নেমে বিএনপি থেকে বহিষ্কার হওয়া নিজাম উদ্দিন কায়সার ২৯ হাজার ৯৯ ভোট পেয়ে তৃতীয় হয়েছেন।

ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার পর প্রতিদ্বন্দ্বী মেয়র প্রার্থীরা ভোটের পরিবেশ নিয়ে সন্তোষ জানিয়েছেন। তাঁরা সুষ্ঠু ভোট আয়োজনে নির্বাচন কমিশন প্রথম পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে বলেও সনদ দিয়েছেন।

দিনের বেলায় ভোট নিয়ে সন্তুষ্ট সাক্কু রাতে ফল প্রত্যাখ্যানই কেবল করেননি, আইনি লড়াই করবেন বলেও জানিয়ে দিয়েছেন।

তবে ফলাফলে সন্তুষ্ট আওয়ামী লীগের প্রার্থী রিফাত।

গতকাল সারা দিনে কুমিল্লায় কোনো সহিংসতার ঘটনা ঘটেনি। সকালে বৃষ্টির কারণে ভোটার উপস্থিতি কম ছিল। আর ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ভোটগ্রহণের গতিকে কিছুটা মন্থর করেছে। কয়েকটি কেন্দ্রে ইভিএম বিগড়ে গিয়ে বিড়ম্বনাও তৈরি করেছে। এর বাইরে পুরো দিন কেটেছে শান্তিপূর্ণভাবে।

 সকাল ৮টায় শুরু হয়ে ভোট চলে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। কয়েকটি কেন্দ্রে সোয়া ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ হয়েছে ভোটার উপস্থিতির কারণে। নগরীর শিল্পকলা একাডেমি থেকে সাড়ে ৪টার পর কেন্দ্রীয়ভাবে ফল ঘোষণা শুরু হয়।

ভোট শান্তিপূর্ণ হওয়ার কারণও আছে। সকালেই দিনের গতি ঠিক করে দিয়েছে প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী। জাল ভোট দেওয়ার চেষ্টা এবং গোলযোগ সৃষ্টির চেষ্টার দায়ে ১২ জনকে আটক করে তিন দিন থেকে তিন মাস পর্যন্ত কারাদণ্ড দিয়ে জেলে পাঠানো হয়।

জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ কামরুল হাসান বলেন, যাদের গ্রেপ্তার করে সাজা দেওয়া হয়েছে, তারা বহিরাগত। খবর ছড়িয়েছে, সাজাপ্রাপ্তদের বেশির ভাগ ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মী এবং স্থানীয় এমপির অনুসারী। তাতে সারা দিনে আর কোনো অঘটন ঘটেনি।

কুমিল্লা জেলা শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণে ফল ঘোষণা ৯০ কেন্দ্র পেরোলে মনিরুল হক সাক্কুর সমর্থকরা সেখানে আসতে থাকে। তারা মনিরুল হকের নাম ও ঘড়ি প্রতীকের স্লোগান দেয়। কাছাকাছি সময়ে রিটার্নিং অফিসার ঘোষণা করেন, মেয়র পদের কিছু কেন্দ্রের ফল বাকি আছে। আপাতত কাউন্সিলর প্রার্থীদের ফল ঘোষণা করতে চান।

ওই সময় সাক্কুর সমর্থকরা উত্তেজিত হয়ে ওঠে। ফল ঘোষণার দাবি জানাতে থাকে। একটু পর প্রার্থী সাক্কুও সেখানে আসেন। এ সময় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। একটু ধাক্কাধাক্কিও হয়। পুলিশ সাক্কুর সমর্থকদের সরিয়ে দেয়। সাক্কু এরপর সমর্থকদের নিয়ে ফল ঘোষণা মঞ্চের সামনে এসে বসেন।

আধাঘণ্টা পর আওয়ামী লীগের প্রার্থীর সমর্থকরা মিছিল নিয়ে সেখানে আসে। তারা শিল্পকলার ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করলে পুলিশ আটকে দেয়। এরপর মেয়র প্রার্থীদের প্রাথমিক ফল ঘোষণা করেন রিটার্নিং অফিসার।

উল্লেখ্য, কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে এবার মেয়র পদে পাঁচজন, ২৭ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ১০৬ জন এবং সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৩৬ জন প্রার্থী ছিলেন।