‌'বিদেশিরা অনেক সময় স্বার্থের ফিকিরে নিষেধাজ্ঞা দেয়'

সংগৃহীত ছবি

‌'বিদেশিরা অনেক সময় স্বার্থের ফিকিরে নিষেধাজ্ঞা দেয়'

অনলাইন ডেস্ক

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, বিদেশিরা অনেক সময় বিভিন্ন রকমের ফন্দিফিকিরের কারণে, অনেক কিছু স্বার্থের ফিকিরে বিভিন্ন রকম কথা বলেন, স্যাংশন (নিষেধাজ্ঞা) দেয়। তাদের পাবলিক ফেস এক আর প্রাইভেট ফেস এক। এটা আমাদের উপলব্ধি করার সময় এসেছে। ’ 

মঙ্গলবার বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, পদ্মা সেতু নির্মাণে দুর্নীতির ‘মিথ্যা ও বানোয়াট’ অভিযোগ তুলে বাংলাদেশকে অপমান করা হয়েছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী কোনো প্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ না করে বলেন, ‘যারা এই অপমান করেছে, তাদেরকে বলব, আপনাদের উচিত হবে ক্ষমা চাওয়া। স্বেচ্ছায় ক্ষতিপূরণ দিয়ে তাদের এই অপরাধ ও নিজেদের গ্লানিটা দূর করা প্রয়োজন বলে আমি মনে করি। ’

অনুষ্ঠানে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘বিদেশিদের কথায় অনেকে লাফালাফি করেন।

আমি সে জন্য খুব দুঃখ পাই। আমি সবাইকে বলতে চাই, পদ্মা সেতু আমাদের শিক্ষা দিল যে আমরা আমাদের মানুষের কথা চিন্তা করে, আমাদের দেশের অবস্থান বিবেচনা করে বিদেশিদের কথায় শুধু লাফাব না। বিদেশিরা অনেক সময় বিভিন্ন রকমের ফন্দিফিকিরের কারণে, অনেক কিছু স্বার্থের ফিকিরে বিভিন্ন রকম কথা বলেন, স্যাংশন দেয়, তাদের পাবলিক ফেস এক আর প্রাইভেট ফেস এক। এটা আমাদের উপলব্ধি করার সময় এসেছে। ’

প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা মসিউর রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একক সিদ্ধান্ত ও দৃঢ়তার কারণে এই সেতু বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়েছে। তিনি দেশের মানুষের কল্যাণকে সে সময় সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রভাগে রেখেছিলেন। তিনি পদ্মা সেতুকেন্দ্রিক ঘটনাপ্রবাহের আর্কাইভ তৈরি করতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে পরামর্শ দেন।

বিশেষ অতিথি পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকন্যা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বলেই সেতু তৈরি সম্ভব হয়েছে। এলডিসিভুক্ত অনেক দেশই বিদেশি সংস্থার ঋণের বেড়াজালে পড়েছে। পদ্মা সেতু তৈরির জন্য আমাদেরও এই বেড়াজালে পড়তে হয়েছিল। তবে সব বেড়াজাল ভেদ করে সেতু তৈরি সম্ভব হয়েছে। ’

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘পদ্মা সেতুর ৪১টি স্প্যান। তবে আমি মনে করি স্প্যান একটি। সেটি হলো শেখ হাসিনা। পদ্মা সেতু নিয়ে অনেকে সমালোচনা করেছেন। তবে সেতু উদ্বোধনের পর এখন সেই সমালোচনা আর নেই। ’

সেতু বিভাগের সাবেক সচিব ও বর্তমানে জার্মানিতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ‘একটি মিথ্যা, বানোয়াট ও ভুয়া অভিযোগ নিয়ে বিশ্বব্যাংকের মতো প্রতিষ্ঠান যে সময় ও অর্থ নষ্ট করেছে, তা কোনোভাবে হতে পারে না। ’

পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, পদ্মা বাস্তবায়ন ছিল লিটমাস টেস্ট। বাংলাদেশ সেটা পাস করেছে। পদ্মা সেতু এখন নতুন বাংলাদেশের পরিচয়। পদ্মা সেতু এখন নতুন ব্র্যান্ডিংয়ের নাম।

জার্মানিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, পদ্মা সেতু ষড়যন্ত্রের বিষয়ে সেই সময়ে টক শোতে সঠিক তথ্য না জেনেশুনে অনেকেই কথা বলেছেন। এ ছাড়া বিশ্বব্যাংকের মতো প্রতিষ্ঠান উড়ো চিঠিও বিশ্বাস করেছে। তারা অর্থসহায়তা থেকে সরে গেছে। অনেক ঘটনাই ঘটেছে। তবে এই সেতু নিয়ে যাঁরা বিরোধিতা করেছিলেন, তাঁরাও এখন খুশি।

অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক সেলিম রায়হান বলেন, পদ্মা সেতু প্রধানমন্ত্রীর একক সিদ্ধান্তের ফসল। এটি একটি মেগা ফিজিক্যাল স্ট্রাকচার।

news24bd.tv/desk