মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরে। বুধবার স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ৯টার দিকে এক ফেসবুক ভাষণে তিনি তার পদত্যাগের ঘোষণা দেন। শুধু তা-ই নয়, মহারাষ্ট্র আইন পরিষদের সদস্যপদও ছেড়ে দিয়েছেন তিনি। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা গেছে।
দেশটির সুপ্রিম কোর্ট বুধবার এক আদেশে উদ্ধব ঠাকরেকে আগামীকালের মধ্যে সংসদে তার সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে বলে। কিন্তু দলের বিধায়কদের বড় একটি অংশ, সব মিলিয়ে ৩৯ জন বিধায়ক শিবসেনার জ্যেষ্ঠ নেতা একনাথ সিন্ধের নেতৃত্বে উদ্ধব ঠাকরের সঙ্গ ত্যাগ করেন। ফলে উদ্ধব বিধানসভায় তার সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারান।
উদ্ধব তার ভাষণে বলেন, আমরা সুপ্রিম কোর্টের আদেশ পালন করি।
এনডিটিভির খবরে বলা হয়, বুধবার সুপ্রিম কোর্টে একটি মামলা হয়। সেই মামলায় সর্বোচ্চ আদালত জানায়, এনসিপির অনিল দেশমুখ ও নবাব মালিক বৃহস্পতিবারের আস্থা ভোট দিতে পারবেন। এ সময় শিবসেনার আবেদন খারিজ করে দেয় সুপ্রিম কোর্ট। সাফ জানিয়ে দেয়, বৃহস্পতিবারই হবে আস্থা ভোট। তার পরই স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ৯ টার দিকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন উদ্ধব।
সুপ্রিম কোর্ট অবশ্য বলেছে, বৃহস্পতিবারের ভোটের ফল ১১ জুলাই তার রায়ের সাপেক্ষে হবে। এদিন ঠাকরের পক্ষের অনুরোধে শিবসেনার বিধায়কদের একটি অংশকে অযোগ্য ঘোষণা করা হবে কি না, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
নিজ দলের ৩৯ জন বিধায়ক উদ্ধবের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। এতে নেতৃত্বে দিচ্ছেন একনাথ শিন্ডে, যিনি একজন জ্যেষ্ঠ শিবসেনা নেতা।
তারা বলছে, মুখ্যমন্ত্রীর দলের চেয়ে শিবসেনা অনেক বড় দল। তাদের অবশ্যই বর্তমান সরকার থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। বিজেপির সঙ্গে জোট বাঁধতে হবে। উদ্ধব ঠাকরের নেতৃত্বাধীন মহা বিকাশ আঘাদি সরকারের কংগ্রেস এবং শরদ পাওয়ারের এনসিপি রয়েছে।
একনাথ শিন্ডে কিছুদিন আগে বিধায়কদের একটি দল নিয়ে গভীর রাতে মুম্বাইয়ে বিদ্রোহ শুরু করেছিলেন। পরে তারা গুজরাটের সুরাটে রওনা হন; স্পষ্টতই বিজেপির নির্দেশে। একদিন পর ঠাকরের প্রতিনিধিরা তাদের কয়েকজনের সঙ্গে দেখা করতে করেন। পরে বিদ্রোহীরা গুয়াহাটিতে চলে যায়।
গুয়াহাটিতে শিবসেনার সদস্য দ্রুতগতিতে বাড়ছে। এখন পর্যন্ত তাদের ৩৯ জন এমএলএ আছে, যা পার্টিকে বিভক্ত করার জন্য এবং ঠাকরের অপসারণ নিশ্চিতের জন্য যথেষ্ট। কেবল মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে নয়, তার পিতা যে দলের প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তার সভাপতি পদ থেকে সরে যেতে হচ্ছে ঠাকরেকে।
বলা হচ্ছে, বিজেপি এবং কিছু স্বতন্ত্র বিধায়কের সমর্থন নিয়ে শিন্ড পক্ষ ভোটে ক্ষমতাসীন সরকারকে ছাড়িয়ে যাবে।
news24bd.tv/আলী