ব্যর্থতা স্বীকার করে ১০ দিন সময় চাইলেন প্রতিমন্ত্রী

ব্যর্থতা স্বীকার করে ১০ দিন সময় চাইলেন প্রতিমন্ত্রী

অনলাইন ডেস্ক

বিদ্যুৎ বিতরণে ব্যর্থতার কথা স্বীকার করেছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। এ সমস্যা সমাধানে ৭ থেকে ১০ দিন সময় চেয়েছেন তিনি। বলেছেন, ১০ দিনের মধ্যে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে লোডশেডিং কীভাবে আরও কমিয়ে সূচি মেনে চলা যায়, সে জন্য নেওয়া হবে নতুন পরিকল্পনা।

ঢাকার গুলশানে নিজ বাসভবনে শুক্রবার প্রতিমন্ত্রী বলছেন, ‘আমি বলছি যে এক সপ্তাহ দেখব।

আমাদের ডেটাটা আমরা এক সপ্তাহ দেখতে চাই। কোনো কোনো জায়গায় এক ঘণ্টার বেশি হচ্ছে, আমরা দেখতে পাচ্ছি। একটা ফিডার বন্ধ করলাম, সেখান থেকে বিদ্যুৎ আসতে আসতে দুই-তিন ঘণ্টা লেগে যাচ্ছে। কোনো কোনো এলাকায় আমি লক্ষ্য করেছি চার ঘণ্টা হয়েছে।
আমার নিজের এলাকাতেও হয়েছে। আমরা এগুলো দেখার জন্য কিন্তু এক সপ্তাহ সময় নিয়েছি। ’

তিনি বলেন, ‘এক সপ্তাহ সময় নিয়ে আমরা দেখছি, আমাদের কতটুকু লোডশেড করা দরকার। কীভাবে এটাকে আমরা আরেকটু কমিয়ে নিয়ে আসব। ১০টা দিন হলে পরে আস্তে আস্তে ঠিক করে নিয়ে আসব, বেটারের দিকে যাবে। ’

প্রতিমন্ত্রী জানান, দেশে যে ডিজেল আমদানি করা হয়, তার মাত্র ১০ ভাগ বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহার করা হয়। সেই ১০ ভাগ ডিজেল বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহার না করায় প্রতিদিন এক হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে।

ডিজেল সাশ্রয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ রাখা কতটা ফলপ্রসূ হচ্ছে, তা অঙ্ক কষে সিদ্ধান্ত নেয়ার কথাও জানান নসরুল। তিনি বলেন, ‘দেখতে চাই আগামী এক সপ্তাহ, ১০ দিন কী হলো। এক হাজার মেগাওয়াট বন্ধ করলাম, ডিজেল সেভ করলাম, এতে পরিস্থিতিটা কী হলো? আমি যদি লোডশেড না করতাম ইকনোমিক্যালি আমাদের কতটা পক্ষে আসত, আর লোডশেড করে আমার কতটুকু লস হলো। বিষয়টি আমি এক সপ্তাহ দেখতে চাচ্ছিলাম। ওই ক্যালকুলেশনের মধ্যে আছি। না হলে করব না। ’

নসরুল হামিদ বলেন, ‘বিপিসি (বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন) ইতোমধ্যে ছয় হাজার কোটি টাকা ব্যয় করে ফেলছে ডিজেল কিনতে গিয়ে। ফলে ডলারের ওপর চাপ বেড়েছে। এটা তো বুঝতে হবে। কারণ বিপিসি তার প্রাইস সমন্বয় করেনি। ইন্ডিয়া বহু আগে করে ফেলেছে। আমরা যাইনি। ’

পিক আওয়ারে শিল্প উৎপাদনে গ্যাসের চাপ বেড়ে যায় বলে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ঘাটতি ওঠানামা করার কথা জানান প্রতিমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘পিক আওয়ারে ইন্ডাস্ট্রির গ্যাসের ডিমান্ড বেড়ে যায়। ওরা সন্ধ্যাবেলা চালায়। একটা সপ্তাহ আমরা দেখতেছি। অ্যাভারেজে কত হচ্ছে, কোনো কোনো সময় দুই হাজার হচ্ছে, কোনো কোনো সময় দুই হাজার ২০০ হচ্ছে, আবার কোনো কোনো সময় দেড় হাজার হচ্ছে।

‘এই সপ্তাহের রেজাল্ট পেলে পরে নেক্সট সপ্তাহে আরেকটা প্ল্যান করব। আমাদের টাইমিং শিডিউলটা ঠিক করব। টাইমিং ঠিক রাখতে পারছি কি না। শহরে আমরা পারতেছি; গ্রামে আমরা পারতেছি না। কোনো কোনো গ্রামে তিন, চার, পাঁচ ঘণ্টাও হয়ে যাচ্ছে। ওখানে আমরা কী মেজার নেব, এক সপ্তাহ পরে আমরা চিন্তাভাবনা করব। ’

গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় লোডশেডিং কম। কোনো কোনো এলাকায় বেশি ভোগান্তি হচ্ছে বলে সাধারণ মানুষ যে অভিযোগ করেছেন, তা অবশ্য মানছেন না প্রতিমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘কোনো ভিআইপি বা অ-ভিআইপি এলাকা নির্দিষ্ট করা নেই। একটা ফিডার বন্ধ করলে ওখানে ভিআইপি পারসন যাদেরকে বলি, তারাও আছেন, সাধারণও আছেন। এমন কিছু নেই। ’

কূটনৈতিকপাড়া থেকে বিষয়টি বিবেচনার একটি অনুরোধ প্রতিমন্ত্রীর কাছে এসেছে বলেও জানান তিনি।

নসরুল হামিদ বলেন, ‘ডিপ্লোম্যাটিক জোন থেকে অনুরোধ করা হয়েছে যেন একটু লক্ষ রাখা হয়। তারা কিন্তু বলেনি, লোডশেডিং বন্ধ করে দিতে হবে। তারা লক্ষ রাখতে বলেছেন, বিষয়টি আমরা লক্ষ রাখছি। ’

news24bd.tv তৌহিদ