বঙ্গমাতা বাঙালির মুক্তিসংগ্রামের অন্যতম অগ্রদূত

সংগৃহীত ছবি

বঙ্গমাতা বাঙালির মুক্তিসংগ্রামের অন্যতম অগ্রদূত

অনলাইন ডেস্ক

বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের রেখে যাওয়া আদর্শকে ধারণ করে তরুণ প্রজন্মকে দেশমাতৃকার কল্যাণে নিজেদের নিয়োজিত করার আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ৯২তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে তিনি এই আহ্বান জানান।

সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, স্বাধীনতার মহান স্থপতি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিণী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ৯২তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি এই মহীয়সী নারীর চিরঅম্লান স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান। বঙ্গমাতার জন্মবার্ষিকীতে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব পদক ২০২২ প্রদান একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ।

তিনি পদকপ্রাপ্তদের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। বঙ্গমাতার এবারের জন্মবার্ষিকীর প্রতিপাদ্য ‘মহীয়সী বঙ্গমাতার চেতনা, অদম্য বাংলাদেশের প্রেরণা’  অত্যন্ত বস্তুনিষ্ঠ ও সময়োপযোগী হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

আবদুল হামিদ বলেন, বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব ১৯৩০ সালের ৮ আগস্ট গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ছোটবেলা থেকেই তিনি ছিলেন অত্যন্ত  নম্র, শান্ত ও অসীম ধৈর্যের প্রতিমূর্তি।

তিনি বুদ্ধিমত্তা, ধৈর্য ও সাহস নিয়ে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা করতেন। তিনি আমৃত্যু স্বামীর পাশে থেকে একজন যোগ্য ও বিশ্বস্ত সহচর হিসেবে দেশ ও জাতি গঠনে অসামান্য অবদান রেখে গেছেন।

রাষ্ট্রপতি বলেন, বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব কেবল জাতির পিতার সহধর্মিণীই ছিলেন না, বাঙালির মুক্তিসংগ্রামেও তিনি ছিলেন অন্যতম অগ্রদূত। দেশের স্বার্থে বঙ্গবন্ধুকে অসংখ্যবার কারাবরণ করতে হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব সেই কঠিন দিনগুলোতে ছিলেন দৃঢ় ও অবিচল। বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণের নেপথ্যেও ছিলেন তিনি। তাঁরই পরামর্শে বঙ্গবন্ধু হৃদয় থেকে উৎসারিত অলিখিত এ ভাষণ প্রদান করেন।

রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালে হানাদার বাহিনীর হাতে গৃহবন্দি অবস্থায় পাকিস্তানে কারাবন্দি স্বামীর জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণেও তিনি সীমাহীন ধৈর্য, সাহস ও বিচক্ষণতার সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করেন। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধুর সাথে তিনি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গড়ার কাজে আত্মনিয়োগ করেন। দেশ ও জাতির জন্য অপরিসীম ত্যাগ, সহমর্মিতা, সহযোগিতা ও বিচক্ষণতা তাঁকে বঙ্গমাতায় অভিষিক্ত করেছে।

আবদুল হামিদ বলেন, বঙ্গমাতা রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর পত্নী হয়েও সবসময় সাদামাটা জীবনযাপনে অভ্যস্ত ছিলেন। নির্লোভ, পরোপকারী ও নিরহংকার মুজিবপত্নীর মাঝে বাঙালি মায়ের চিরন্তন প্রতিচ্ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। ক্ষমতার চূড়ায় থেকেও তিনি অমায়িক ও আন্তরিক ব্যবহারে সবাইকে আপন করে নিয়েছিলেন। তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে নিজ জীবনে লালন ও ধারণ করে তাঁর সন্তানদেরকেও একই আদর্শে গড়ে তোলেন। তাঁর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও একই শিক্ষা, আদর্শ ও চেতনাকে অবলম্বন করে বাংলাদেশকে আজ বিশ্বের বিস্ময়, উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে গড়ে তুলেছেন।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাতে স্বামী-পুত্র-পুত্রবধূসহ নিকটাত্মীয়ের সাথে তিনি ধানমন্ডির নিজ বাসভবনে স্বাধীনতাবিরোধী ঘাতকচক্রের হাতে নির্মমভাবে শহীদ হন। জাতির ইতিহাসে যা এক কলঙ্কজনক অধ্যায়। বঙ্গমাতা আমাদের মাঝে না থাকলেও তাঁর রেখে যাওয়া আদর্শকে ধারণ করে তরুণ প্রজন্ম দেশমাতৃকার কল্যাণে নিজেদের নিয়োজিত রাখবেন বলে তিনি এ প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।

তিনি বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের জন্মবার্ষিকীতে তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।

news24bd.tv/আলী