‘আমার জন্মের পর প্রথম এতো লাশ একসাথে দেখলাম’

সংগৃহীত ছবি

‘আমার জন্মের পর প্রথম এতো লাশ একসাথে দেখলাম’

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় মাটিকোড়া গ্রামে বজ্রপাতে নিহতদের পরিবার শোকে স্তব্ধ হয়ে পড়েছে। পরিবারের উপার্জনশীল ব্যক্তিদের হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ছেন তারা। আদরের সন্তানদের হারিয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছে মা-বাবাসহ স্বজনরা। একই সাথে পুরো ইউনিয়ন জুড়ে চলছে শোকের মাতম।

একসাথে এতো মৃত দেখে স্তব্ধ হয়ে পড়েছে গোটা এলাকা।  

বৃহস্পতিবার বিকেলে বজ্রপাতে উপজেলার পঞ্চক্রোশী ইউনিয়নের মাটিকোড়া দক্ষিণপাড়া গ্রামের মাঠে একটি শ্যালো মেশিন ঘরে বজ্রপাতে মারা যায় ১০ জন। এ ঘটনায় আহত হন আরো ৩ জন। বৃহস্পবিার রাত ১২টার দিকে মাটিকোড়া দক্ষিণপাড়া গ্রামের নিহত আব্দুল কুদ্দুস, শাহ আলম, রিতু খাতুন, জান্নাতী ও নদীকে গ্রমের কবরস্থানে দাফন করা হয় এবং উল্লাপাড়া পৌরসভার শিবপুর গ্রামের কবরস্থানে দাফন করা হয় কৃষি শ্রমিক শমসের আলীসহ তার পরিবারের সদস্য আফসার আলী, শাহিন, মোবাক্ষর ও মোন্নাফ আলীকে।

 

শুক্রবার নিহত রিতু খাতুনের বাড়ীতে গিয়ে দেখা যায়, মা আছিয়া খাতুন মেয়ে হারানোর বেদনায় কাঁদতে কাঁদতে মুছড়ে যাচ্ছেন। বিলাপ করছেন আর বলছেন ‘আমার রিতুরে আইনা দাও, রিতুরে ছাড়া আমি বাইচতে পারমু না’। স্বজনেরা বার বার তাকে শান্তনা দেওয়ার চেষ্টা করলেও থামানো যাচ্ছে না আছিয়ার কান্না। একই অবস্থা স্বজন হারানো নদীর পরিবারে। শোকবিহল পরিবার একেবারেই মুষড়ে পড়েছেন।  

উপজেলার শিবপুর গ্রামে শমসের আলীর পরিবারের ৫ জনের মর্মান্তিক মৃত্যুতে শোকবিহ্বল স্ত্রী শান্তি খাতুনসহ গোটা পরিবার। শান্তি খাতুন কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে বার বার বলছিলেন, পরিবারের উপার্জনের লোক ছিল তার স্বামী শমসের আলী ও তার সন্তান শাহীন। দুজনই মারা গেলেন। এখন কীভাবে  চলবে তাদেও সংসার? স্থানীয়রা বলছেন, এক পরিবারের পাঁচজন মারা যাওয়ায় আমরা সবাই বাকরুদ্ধ। পরিবারটি এখন পুরুষ শূণ্য হয়ে পড়ায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়লেন শান্তি খাতুন।

উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ উজ্জল হোসেন জানান, বজ্রপাতে নিহত প্রতিটি  পরিবারকে ২৫ হাজার টাকা করে অনুদানের ঘোষণা দেয়া হয়েছে। দ্রুত টাকাগুলো পরিবারগুলোকে প্রদান করা হবে।

উল্লাপাড়া পৌরসভার মেয়র এস এম নজরুল ইসলাম বৃহস্পতিবার রাতে শিবপুর নিহতের বাড়ীতে গিয়ে প্রতি পরিবারকে ৩০ হাজার টাকা অনুদানের ঘোষণা দিয়েছেন।  

পঞ্চক্রোশী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফিরোজ সেখ জানান, আমার জন্মের পর প্রথম এতো লাশ একসাথে দেখলাম। এ ঘটনা মেনে নেয়ার মতো না। তিনি বজ্রপাত রোধে সরকারের কাছে জনসচেতনামুলক কর্মকাণ্ড পরিচালনার দাবী জানান।  

news24bd.tv/আজিজ

এই রকম আরও টপিক