প্রায় তিন যুগ আগের হত্যা মামলার পলাতক আসামিকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। এক চরমপন্থীকে ছিনিয়ে নিতে প্রায় তিন যুগ আগে নাটোরের গুরুদাসপুর থানায় হামলা চালায় তার সহযোগীরা। এ সময় অস্ত্র লুট ও এক কনস্টেবলকে হত্যা করেছিলেন তারা। ওই মামলায় যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত এক আসামি সাইফুল ইসলামকে সম্প্রতি গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
শনিবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঢাকার কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-৩ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ এ তথ্য জানান।
র্যাব জানায়, গতকাল শুক্রবার রাতে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থেকে সাইফুলকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি ছাত্তার নামে আত্মগোপনে ছিলেন। ১৯৮৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে চরমপন্থীরা গুরুদাসপুর থানায় প্রবেশ করে অস্ত্রের মুখে নিয়ন্ত্রণ নেয়।
জামিনে বেরিয়ে তিনি ৩০ বছর ধরে আত্মগোপনে ছিলেন সাইফুল। ২০০৪ সালে সাইফুল ঢাকায় চলে আসেন। ঢাকায় কিছুদিন তিনি বাসচালকের সহকারী হিসেবে কাজ করেন। ট্রাকে মালামাল ওঠানামার কাজও করেছেন। পরে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে তাঁর এক আত্মীয়ের বাসায় আশ্রয় নেন। এ সময় তিনি নিজের পরিচয় লুকিয়ে ছাত্তার নাম ধারণ করেন। পাশাপাশি একটি পোশাক কারখানায় চাকরি নিয়ে সেখানেই বসবাস করছিলেন। রূপগঞ্জে সাত্তার নামে নিজের জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করে স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে বসবাস করছিলেন।
নারায়ণগঞ্জে বসবাস করলেও সাইফুল ইসলাম সর্বহারা দলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন জানিয়ে র্যাব-৩-এর অধিনায়ক বলেন, চরমপন্থীদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযান স্তিমিত হলে তিনি মাঝেমধ্যে এলাকায় গিয়ে সর্বহারা দলের সঙ্গে বিভিন্ন অপকর্ম করতেন। চরমপন্থী দলের অন্তর্দ্বন্দ্বে তারেক খুন হলে তিনি দলের সঙ্গে যোগাযোগ কমিয়ে দেন।
সাইফুল ইসলামকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে র্যাব জানায়, তিনি ১৯৮৪ সালে চরমপন্থী নেতা তারেকের মাধ্যমে পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টিতে যোগ দেন। চরমপন্থী নেতা তারেক প্রতি সপ্তাহে চাটমোহর এলাকায় তরুণদের বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে উঠান বৈঠক করতেন। তারেক বলতেন, দলে যোগ দিলে কোনো অভাব-অনটন থাকবে না। তাঁরা সবার সমান অধিকার নিশ্চিত করবেন। কেউ তাঁদের কাজে বাধা দিলে তাঁদের পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে। যদি সরকার বা সরকারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাঁদের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়, তবে তাঁরা পুলিশ হত্যা করে থানা ফাঁড়ি লুট করবেন। ওই সময় তারেকের মাধ্যমে তিনি চরমপন্থী দলে যোগ দেন।
news24bd.tv/আজিজ