‘যে কোন ব্যথাকে অবহেলা করা যাবে না’

সংগৃহীত ছবি

বিএসএমএমইউতে সেমিনার

‘যে কোন ব্যথাকে অবহেলা করা যাবে না’

পেটের রোগের অন্যতম কারণ হচ্ছে পেটে ব্যথা। অসংখ্য রোগী এ কারণে চিকিৎসা নিতে আসেন। তবে অধিকাংশ কারণ নির্ণয় করা গেলেও প্রায় ৩০ ভাগ কারণ নির্ণয় সম্ভব হয় না। পেট ব্যথার অন্যতম কারণগুলোর মধ্যে পেপটিক আলসার, অগ্ন্যাশয়ের প্রদাহ, আইবিএস, পিত্তথলীর  প্রদাহ, পিত্তথলী ও পিত্তনালীর ভেতর পাথর, লিভারের প্রদাহ (হেপাটাইটিস) ইত্যাদি।

কিছু ক্ষেত্রে পেট ব্যথায় মৃত্যুও ঘটতে পারে। যেমন পাকস্থলী, অগ্ন্যাশয়,  কোলন, পিত্তথলীর ক্যান্সার ইত্যাদি। তবে রোগীর ইতিহাস, শারীরিক ও ল্যাবরেটরি পরীক্ষার মাধ্যমে পেট ব্যথার সঠিক কারণ নির্ণয় করে চিকিৎসা নেয়া সম্ভব।

রবিবার (১১ সেপ্টেম্বর) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) পেট ব্যথা নিয়ে এক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল সাব কমিটির আয়োজনে এ ব্লক মিলনায়তনে এই সেমিনারের আয়োজন করা হয়।  বক্তারা আরো বলেন, কিছু ক্ষেত্রে বুকের ইসিজি, আল্ট্রাসনোগ্রাফি, সিটি স্ক্যান, এন্ডোসকপি, কোলনস্কপি পরীক্ষার প্রয়োজন হয়। অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের উপসর্গ হিসেবে পেটে ব্যথার অন্যতম যা অনেকাংশই অনির্ণীত থাকে, যেমন হার্টের রোগ। বয়স্ক রোগী, নারী ও অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসের রোগীরা এ সমস্যায় বেশী ভোগেন। পেট ব্যথার অনেক উপসর্গ যেমন এপেন্ডিসাইটিস, পিত্তথলির পাথর, অন্ত্র ফুটো হয়ে যাওয়া, অন্ত্রে প্যাচ লেগে যাওয়া, নারীদের ক্ষেত্রে ডিম্বাশয়ের নালীতে প্যাচ লেগে যাওয়া ইত্যাদি উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসকের কাছে রোগীরা আসেন। যদি কোন রোগীর পেটে ব্যথা সাধারণ ওষুধে না কমে এবং ৬ ঘণ্টার বেশী সময় ধরে থাকে তাহলে দেরী না করে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে অথবা হাসপাতালের জরুরি বিভাগে যোগাযোগ করতে হবে। অবহেলা করা যাবে না।

সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. জাহিদ হোসেন, উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক ডা. একেএম মোশাররফ হোসেন। সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল সাব কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. বেলায়েত হোসেন সিদ্দিকী। সঞ্চালনা করেন সেন্ট্রাল সাব কমিটির সদস্য সচিব নিউরোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. শহীদুল্লাহ (সবুজ) ও  রেসপাইরেটরি মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. সম্প্রীতি ইসলাম।

সেমিনারে  মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিশু গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মো. রোকুনুজ্জামান, সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. এসএম সাঈদ উল আলম, গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. ফজলুল করিম চৌধুরী।  

সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো: শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, যে কোন ব্যথাই মৃত্যুর কারণ হতে পারে। সঠিকভাবে পরীক্ষা না করে রাতে পেটে ব্যথা হলে গ্যাসের ওষুধ খেয়ে শুয়ে থাকলে মৃত্যুও হতে পারে। ভোর রাতের ব্যথা মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। মনে রাখতে হবে, ভোর রাতেই ব্যথায় মৃৃত্যুর হার বেশী। অনেক কারণেই পেটে ব্যথা হতে পারে। তবে পেটের ব্যথাকে গ্যাসের ব্যথাভেবে ওষুধ খাওয়া ঠিক না।

তিনি বলেন, 'আমরা খুব তাড়াতাড়ি ২৫ জন চিকিৎসককে পিএইচডি কোর্সে ইনরোলমেন্ট করতে যাচ্ছি। বিভাগের ফ্যাকাল্টির পাশাপাশি রেসিডেন্টদেরকে গবেষণায় আগ্রহী করতে অনেক উদ্যোগ রয়েছে।  আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা আমাদের স্বপ্নের সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল উদ্বোধন করবেন। এটি চালু হলে স্বাস্থ্যখাতে আরেকটি নব দিগন্তের সূচনা হবে।

news24bd.tv/desk