চাঁপাইনবাবগঞ্জে পদ্মার ভাঙনে বিলীন জমি, বসতবাড়ি
চাঁপাইনবাবগঞ্জে পদ্মার ভাঙনে বিলীন জমি, বসতবাড়ি

চাঁপাইনবাবগঞ্জে পদ্মার ভাঙনে বিলীন জমি, বসতবাড়ি

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলায় পদ্মা নদীতে ক্রমশই পানি বাড়ছে। এতে দেখা দিয়েছে ভাঙন। ফলে আবাদি জমিসহ পদ্মা পাড়ের বাসিন্দাদের বসতবাড়ি বিলীন হচ্ছে নদী গর্ভে। নদী তীরবর্তী কয়েকটি এলাকার মানুষ এখন নদীভাঙন আতঙ্কে দিন পার করছে।

স্থানীয়রা জানান, শিবগঞ্জ উপজেলার দূর্লভপুরের মনোহরপুর এলাকায় গত কয়েকদিন ধরেই তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। কয়েকদিন ধরে ভাঙন তীব্র হওয়ায় পদ্মাপাড়ের অনেক বাসিন্দা ভিটামাটি ছেড়ে নিরাপদ দূরত্বে আশ্রয় নিয়েছেন।

এ ছাড়াও নদীভাঙন দেখা দেওয়ায় হুমকির মুখে রয়েছে- নামো জগন্নাথপুরের পন্ডিত পাড়া, আয়ুব বিশ্বাসের পাড়া, বাদশা পাড়া, পন্ডিত পাড়া, দোভাগী এলাকার হাজার বিঘা ফসলি জমি ও বেশকিছু সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা।

পদ্মাপাড়ের বাসিন্দা খাদেমুল বাশার রুবেল বলেন, মনোহপুরে কিছুদিন ধরে নদী ভাঙন বন্ধ ছিল।

এখন নদীতে পানি বাড়ছে, তাই ভাঙনও শুরু হয়েছে। এখনই প্রতিরোধের ব্যবস্থা না নিলে আশপাশের কয়েকটি এলাকার মানুষও নদী ভাঙনের শিকার হবেন।

ওই এলাকারই আরেক বাসিন্দা আমিনুল ইসলাম বলেন, মনোহপুরের পদ্মাপাড়ের মানুষ ভালো নেই। চাষাবাদের জমি আর ভিটামাটি হারিয়ে অসহায় হয়ে পড়ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাদের চোখের পানি থামছেই না। ভাঙন কবলিত এলাকায় সরকার নজর দিলে এখনও অনেক মানুষের কান্না থামানো সম্ভব।

মনোহরপুরের যেসব জায়গায় ভাঙন ধরেছে, ওই সব স্থানে জিওব্যাগে মাটি ভর্তি করে ভাঙন রোধ করার প্রচেষ্টা চালানোর কথা রয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো)। ভাঙন কবলিত এলাকায় জিও ব্যাগও পৌঁছেছে।

মনোহপুরের বাসিন্দা ডালিম বলেন, এখন নদীতে পানি বাড়ছে, যার কারণে ভাঙন তীব্র হচ্ছে। এখন যদি সংশ্লিষ্টরা ভাঙন রোধে কাজ না করে, তাহলে যারা ভিটামাটি হারাচ্ছে তাদের কী হবে। সরকার তো সবার জন্য সহায়তা দেয়, কিন্তু আমরা তা পাই না।

মনোহপুরের ইউপি সদস্য আনারুল বলেন, বেশ কয়েকদিন আগে মনোহপুরে জিওব্যাগ আনা হয়েছে। কিন্তু জিও ব্যাগের যে কাজ সেটা এখনও দেখা যায়নি।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোখলেছুর রহমান বলেন, মনোহরপুর এলাকায় জিও ব্যাগ পাঠানো হয়েছে। ওই এলাকা অনেক দূর, নৌকায় যেতে হয়। শ্রমিক সংকটের কারণে জিওব্যাগে মাটি ভর্তি করে যথার্থ স্থানে ফেলা হয়নি। আশা করি খুব শিগগির এ সমস্যার সমাধান হবে।

প্রতি বছরই নদী ভাঙনের কারণে দুর্লভপুরের হাজার হাজার বিঘা ফসলি জমি নদীতে তলিয়ে যায়। এছাড়াও প্রায় দেড়শ থেকে দুশ পরিবারের ভিটামাটি নদীগর্ভে বিলীন হয়। পদ্মাপাড়ের বাসিন্দাদের দীর্ঘদিনের দাবি স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের। কিন্তু পাউবোর প্রতিশ্রুতি অধরাই রয়ে গেছে।

এ ব্যাপারে জেলার পাউবোর প্রকৌশলী মোখলেছুর বলেন, এবারে নদীভাঙন রোধ করা হবে জিও ব্যাগ দিয়ে। প্রায় ৬০ লাখ টাকার কাজ হবে মনোহরপুর এলাকায়। আর স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের বিষয়ে যাচাই-বাছাইয়ের কাজ চলছে।

news24bd.tv/তৌহিদ