শিক্ষার্থীদের মধ্যে তৃতীয় শক্তি ঢুকে পড়েছে: প্রধানমন্ত্রী

ফাইল ছবি

শিক্ষার্থীদের মধ্যে তৃতীয় শক্তি ঢুকে পড়েছে: প্রধানমন্ত্রী

নিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক

শিক্ষার্থীদের নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এদের মধ্যে তৃতীয় শক্তি ঢুকে পড়েছে। তৃতীয় শক্তি মানুষ না। এরা পারে না এমন কোনো কাজ নেই। আমি স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে খুবই শঙ্কিত।

অভিভাবক ও শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিক্ষার্থীদের রাস্তা থেকে তুলে স্কুলে পাঠান। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার দায়িত্ব আপনাদের। তাদের লেখাপড়া শেখাটা সবচেয়ে বেশি জরুরি।

আজ রোববার প্রধানমন্ত্রী তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ১০ জেলার ৩০০টি ইউনিয়নে অপটিক্যাল ফাইবার সংযোগ উদ্বোধন করেন।

সেই অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গুজব ও অপপ্রচারে কান না দিতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘একদল লোক অপপ্রচার চালিয়ে দেশের পরিস্থিতিকে জটিল করে তোলার চেষ্টা করছে। দয়া করে আপনারা কোনো ধরনের গুজবে কান দেবেন না। কোনো মিথ্যা প্রচারে বিভ্রান্ত হবেন না। আপনার যা-ই দেখেন বা শোনেন, প্রথমে তা যাচাই করে দেখতে হবে। বিশেষ করে আমি স্কুলশিক্ষার্থী ও তরুণদের এ অনুরোধ করছি। ’

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তোমাদের সব দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে। ট্রাফিক আইনটি আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। চূড়ান্ত অনুমোদন শেষে এটি সংসদে পাশ করা হবে। তাই ফিরে গিয়ে পড়াশুনায় মন দাও। মানুষের মতো মানুষ হয়ে দেশের মুখ উজ্জ্বল করতে হবে। তোমাদের মধ্যে এখন তৃতীয় শক্তি ঢুকে পড়েছে। এরা পারে না এমন কোন কাজ নেই। স্বাধীন দেশের ভাবমূতি যাতে নষ্ট না হয় সেদিকে তোমাদেরকেই খেয়াল রাখতে হবে। দেশের অর্জনকে ধরে রেখে আমাদের সামনে এগিয়ে যেতে হবে।

শেখ হাসিনা আরও বলেন, গত কয়েকদিন ধরে তারা যা ইচ্ছা তাই করেছে। তাদের অনুভূতি আমি বুঝি। কিন্তু যথেষ্ট হয়েছে। র‌্যাব, পুলিশ, বিজিবি যথেষ্ঠ ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছে। মন্ত্রী-এমপি সবাই তাদের সহযোগিতা করেছে। আমি বলেছি ওরা যাই করুক ধৈর্য ধরতে হবে। শিক্ষার্থীদের দাবি-দাওয়া সব মেনে নেওয়া হয়েছে। আশা করছি তারা ঘরে ফিরে যাবে। তাদের মূল দায়িত্ব পড়াশুনা করা।  

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ট্রাফিক আইনটি আইন মন্ত্রণালয়ে চূড়ান্ত অনুমোদন শেষে সংসদে পাশ করা হবে। সবাইকে ট্রাফিক আইন ও নিয়ম মানতে হবে। আমাদের হাইওয়ে হয়েছে। চালকরা যাতে পথিমধ্যে বিশ্রাম করতে পারে সে ব্যবস্থা করা হচ্ছে। চালকের সহকারীকেও প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।

বর্তমান সময়ে প্রযুক্তির গুরুত্বের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রযুক্তির শিক্ষা না নিলে আমরা পিছিয়ে থাকবো। বিশ্বের সঙ্গে তাল মেলাতে পারবো না। আমরা ২৫ হাজার পোর্টাল দিয়ে তথ্য বাতায়ন খুলেছি। আমরা মানুষের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছে দিচ্ছি। ভর্তি, চাকুরির আবেদন, বিদেশ যাওয়ার বিষয়ে যাবতীয় যোগাযোগ এখন অনলাইনে করা যায়। তবে প্রযুক্তি ব্যবহার করে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। গুজব ছড়ানো হচ্ছে। গুজবে কান দেবেন না। মিথ্যা অপপ্রচারে বিভ্রান্ত হবেন না। কোনো তথ্য বিশ্বাস করার আগে যাচাই-বাছাই করে নেবেন। প্রযুক্তি ভালো কাজে ব্যবহার করবেন, নোংরা কাজে নয়। জীবনকে সুন্দর করার কাজে, শিক্ষা গ্রহণে, ভালো কাজে প্রযুক্তিকে ব্যবহার করতে হবে। বাজে কাজে নয়।

গত ২৯ জুলাই বাসচাপায় রাজধানীতে দুই শিক্ষার্থীর নিহতের ঘটনায় নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ চলছে সারা দেশে। এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ ঘটনায় আমরা অত্যন্ত দুঃখিত। পথচারী-চালক সবাইকে ট্রাফিক আইন মানতে হবে। স্কুলেই শিশুদের ট্রাফিক আইন শেখাতে হবে। রাস্তায় দৌড় মারা যাবে না। এভাবে দুর্ঘটনার শিকার হলে দায়টা কে নেবে?

সম্পর্কিত খবর