নতুন ইতিহাস গড়ার চেষ্টা করবে মেয়েরা: বাংলাদেশ কোচ

বাফুফে

সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপ 

নতুন ইতিহাস গড়ার চেষ্টা করবে মেয়েরা: বাংলাদেশ কোচ

অনলাইন ডেস্ক

এক ইতিহাস গড়ে আরেক ইতিহাসের সামনে বাংলাদেশের নারী ফুটবল দল। চলমান নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের গ্রুপ পর্বে প্রথমবারের মতো ভারতকে হারানোর স্বাদ। সেই আত্মবিশ্বাসের জোরে টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে ভুটানকে নিয়ে রীতিমতো ছেলেখেলা করেন সাবিনা-কৃষ্ণারা।

সেমিফাইনালে শক্তিশালী নেপালকে এড়াতে ভারতের বিপক্ষে জিততেই হতো বাংলাদেশকে।

যেটা একপ্রকারে ছিল অসম্ভব। কেননা সাফে আগে কখনও যে দলটিকে হারাতে পারেনি লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। তবে গোলাম রব্বানী ছোটনের শিষ্যরা অসম্ভবকে সম্ভব করেছে। গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে ভারতকে উড়িয়ে দিয়েছে ৩-০ গোলে।

এরপর সেমিফাইনালে ভুটানের বিপক্ষে ৮-০ গোলের বিশাল জয়। যে জয়ে স্বপ্ন বুনছেন দেশের অসংখ্য ফুটবলপ্রেমীরা। স্বপ্নটা প্রথমবারের মতো সাফ জয়ের। আজ কাঠমান্ডুতে শিরোপার লড়াইয়ে স্বাগতিক নেপালের বিপক্ষে নামবে বাংলাদেশ। আত্মবিশ্বাসের তুঙ্গে থাকা ছোটনের শিষ্যরা ইতিহাসকে বুড়ো আঙুল দেখাতে পারলেই হয়ে যাবে স্বপ্নপূরণ।

ইতিহাসকে বুড়ো আঙুল দেখাতে হবে, কেননা এর আগে বাংলাদেশের নারী ফুটবল দল কখনও হারাতে পারেনি নেপালকে। ৭ ম্যাচের মধ্যে হেরেছে পাঁচটিতে। এর মধ্যে সাফে তিনবারের দেখায় প্রত্যেকবারই মাথানিচু করে মাঠ ছাড়তে হয়েছে সাবিনাদের। তবে এবারের হিসাব-নিকাশ সম্পূর্ণ আলাদা। পুরো দল আছে দারুণ ছন্দে। প্রতিটি বিভাগ দেখিয়েছে মুন্সিয়ানা।

পরিসংখ্যান কিংবা ইতিহাস সবকিছু নেপালের পক্ষে কথা বলছে। তার ওপর ম্যাচটি হবে নেপালের মাঠেই। বাংলাদেশ কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন সেসব দূরে রেখে নিচ্ছেন না কোনো চাপ। আজ সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘স্বাগতিক দেশের বিপক্ষে খেলা খুব কঠিন। তবে আগের চার ম্যাচের দিকে যদি আমরা তাকাই, বাংলাদেশ খুবই ভালো খেলেছে। এ কারণে আমাদের মেয়েরা খুব আত্মবিশ্বাসী এবং কোনো চাপ নিচ্ছে না। তারা তাদের নিজেদের খেলাটাই খেলবে। ’

ম্যাচ পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন ও অধিনায়ক সাবিনা খাতুন  ৥ বাফুফে

নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশ যেমন কখনও শিরোপা ছুয়ে দেখতে পারেনি, তেমনি নেপালও চার চারটি ফাইনাল খেলে হেরেছে প্রতিটিতেই। স্বাগতিকরা তাই শিরোপা জেতায় আরও মরিয়া। তবে বাংলাদেশ কোচের প্রত্যাশা নতুন ইতিহাস গড়ে ট্রফি নিয়েই দেশে ফিরতে পারবেন তারা, ‘ফুটবলাররা সর্বোচ্চটা দেবে নতুন কিছু পাওয়ার জন্য। একটা ভালো দিক যে দুই দলের কেউই আগে সাফ চ্যাম্পিয়ন হয়নি। নতুন একটা ইতিহাস গড়ার জন্য মেয়েরা অবশ্যই চেষ্টা করবে। ভালো ফুটবল খেলে জয়ী হবো। ’

নারী সাফে বাংলাদেশ ফাইনাল খেলেছে একবারই। সেটা ২০১৬ সালে। ৬ বছর পর যখন আরও একটি ফাইনালে বাংলাদেশ, তখন দক্ষিণ এশিয়ার সেরা হওয়ার ট্রফি ছোঁয়ার সুযোগ হাতছাড়া করতে চাইছে না সাবিনার দল। এই ম্যাচের দিকে যে বাংলাদেশের সমর্থকরাও তাকিয়ে আছেন সেটাও জানেন ছোটন, ‘আমি বিশ্বাস করি বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষ সঙ্গে আছে এবং আমাদের জন্য প্রার্থনা করছেন। ’

জাতীয় দল এখন পর্যন্ত কোনো বহুজাতিক টুর্নামেন্ট জিততে না পারলেও বয়সভিত্তিক সাফল্য আছে অনেক। নেপালে কাল সোমবার সেই শিরোপা জয়ের অভিজ্ঞতাই কাজে লাগাতে চাইছেন কোচ, ‘আমাদের মেয়েরা কিন্তু ২০১৫ সালে অনূর্ধ্ব-১৪ দলের বিপক্ষে জিতেছিল। তাজিকিস্তানে ২০১৬ সালে জিতেছিল ৯-০ গোলে। ভুটানে অনূর্ধ্ব-১৮ সাফে গ্রুপ পর্বে জয়ের পর আমরা নেপালকে ফাইনালেও হারিয়েছিলাম। বয়সভিত্তিক ফুটবলে এসব জয়ের অভিজ্ঞতা আমাদের আগামীকালের ফাইনালে নেপালের মূল দলের বিপক্ষে কাজে দেবে। ’

news24bd.tv/সাব্বির