মহালয়া কেন এত তাৎপর্যপূর্ণ?

সংগৃহীত ছবি

মহালয়া কেন এত তাৎপর্যপূর্ণ?

অনলাইন ডেস্ক

হিন্দুধর্মের পবিত্র উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। মহালয়া থেকেই মোটামুটি পূজার আবহের শুরু। উপমহাদেশের আবহমান সংস্কৃতিতে যার গুরুত্ব অপরিসীম। শাস্ত্রমতে মহালয়া হলো পিতৃপক্ষ ও দেবীপক্ষের সন্ধিক্ষণ।

ভাদ্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের প্রতিপদ থেকে শুরু হয়ে পরবর্তী অমাবস্যা পর্যন্ত (যা আশ্বিন মাসে গিয়ে পৌঁছায়) সময়কে পিতৃপক্ষ বলে। পুরাণমতে, ব্রহ্মার নির্দেশে পিতৃপুরুষেরা এই ১৫ দিন মনুষ্যলোকের কাছাকাছি চলে আসেন।

পিতৃপক্ষের এই সময় তাদের উদ্দেশ্যে তাই যেকোনো কিছু অর্পণ করার রীতি রয়েছে। বিশ্বাস করা হয়, এসময়ে আত্মাদের উদ্দেশ্যে কিছু অর্পণ করা হলে তা সহজেই তাদের কাছে পৌঁছায়।

এই বিশ্বাস থেকেই গোটা (পিতৃ) পক্ষকাল ধরে পিতৃপুরুষদের স্মরণ করা হয়, অর্পণ করা হয়। যার চূড়ান্ত দিন বা মহা লগ্নটি হল এই মহালয়া।

তবে অনেক শাস্ত্রবিশারদের মতে, দিনটি আসলে দেবীপক্ষের সূচনা। মহালয়া পিতৃপক্ষের শেষ দিন। পরের দিন শুক্লা প্রতিপদে দেবীপক্ষের সূচনা। সেই দিন থেকে কোজাগরী পূর্ণিমা পর্যন্ত ১৫ দিন হল দেবীপক্ষ। শাস্ত্র বলছে, মহালয়া হল একটি অমাবস্যা তিথি। এ তিথিতে সাধারণত পিতৃপুরুষের শ্রাদ্ধ-তর্পণ করা হয়। এ দিন তর্পণ করলে পিতৃপুরুষরা নরকযন্ত্রণা থেকে মুক্তি পান বলে বিশ্বাস। তারা এই প্রাপ্তিতে আমাদের আশীর্বাদও করেন।

উপমহাদেশের অনেক জায়গায় মহালয়ার দিনে দেবী দুর্গার বোধনও হয়। 'বোধন' অর্থে জাগরণ। মহালয়ার পরে দেবীপক্ষের তথা মাতৃপক্ষের তথা শুক্লপক্ষের প্রতিপদে ঘট বসিয়ে শারদীয় দুর্গাপূজার সূচনা করা হয়। শ্রাবণ থেকে পৌষ- এই ছ'মাস দক্ষিণায়ন। 'দক্ষিণায়ন' দেবতাদের ঘুমের সময়। তাই বোধন করে দেবতাদের সেই ঘুম থেকে জাগানো হয়।

মহালয়ার পরে প্রতিপদে যে বোধন হয় সে সময় সংকল্প করে দুর্গাপূজার আয়োজন করা চলে। একে বলে কল্পারম্ভ। যদিও ষষ্ঠী থেকে পূজার প্রধান ক্রিয়াকর্ম শুরু হয়। তাই বলা হয় ষষ্ঠ্যাদিকল্পারম্ভ। সপ্তমী থেকে বিগ্রহতে পূজা। প্রতিপদ থেকে শুধু ঘটে পূজা চলে। সঙ্গে চণ্ডীপাঠ। বলা হয়, মহালয়ার দিনেই দেবীদুর্গা দেবতাদের কাছ থেকে মহিষাসুর বধের দায়িত্ব পেয়েছিলেন।

news24bd.tv/FA