অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে ভারতের বিশ্বরেকর্ড

সংগৃহীত ছবি

অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে ভারতের বিশ্বরেকর্ড

অনলাইন ডেস্ক

বিশ্বরেকর্ড বরাবরই বড় এক অর্জন। আর সেটা যদি হয় চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের হটিয়ে, তাহলে তো কথাই নেই। হায়দরাবাদে আজ সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টি২০ ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে ৬ উইকেটে হারিয়ে ভারত সিরিজ তো জিতেছেই, সঙ্গে গড়েছে এক বছরে সর্বোচ্চ (২১) টি২০ ম্যাচ জয়ের রেকর্ড।

২০২১ সালে এক বছরে সর্বোচ্চ টি২০ ম্যাচ জয়ের রেকর্ড গড়েছিল পাকিস্তান।

২৯ ম্যাচের মধ্যে জিতেছিল ২০টিতেই। অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে সেই রেকর্ডটাই নিজেদের করল ভারত। এই জয় চলতি বছর তাদের ২১তম জয়। সেটাও এলো মাত্র ২৭ ম্যাচেই।

১-১ সমতায় থেকেই আজ সিরিজ নির্ধারণি ম্যাচটি খেলতে নামে ভারত-অস্ট্রেলিয়া। টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে ক্যামেরুন গ্রিন এবং টিম ডেভিডের ঝড়ো ফিফটিতে নির্ধারিত ওভার শেষে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৮৬ রানের লক্ষ্য দাঁড় করায় অস্ট্রেলিয়া। সেই রান তাড়া করতে নেমে ভারত জয় পায় ১ বল হাতে রেখে ৬ উইকেটের বিনিময়ে।

গ্রিন এবং ডেভিডের ফিফটির জবাব দেন ভারতের সূর্য কুমার যাদব এবং বিরাট কোহলি। তারা দুজনেও তুলে নেন ফিফটি। সূর্য কুমারের ব্যাট থেকে আসে ৬৯ রান। কোহলি করেন ৬৩ রান। হার্দিক পান্ডিয়া-দীনেশ কার্তিক ভারতকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে ছাড়েন মাঠ। ইনিংসের শেষ ওভারে ড্যানিয়েল স্যামসের করা পঞ্চম বলে চার মেরে সিরিজ জয় নিশ্চিত করেন হার্দিক।

জয়ের জন্য শেষ ওভারে ভারতের দরকার ছিল ১১ রান। প্রথম বলেই ছক্কা মেরে কোহলি সমীকরণ করে তোলেন সহজ। যদিও দ্রুত খেলা শেষ করার নেশায় দ্বিতীয় বলেই এক্সট্রা কাভারে অ্যারন ফিঞ্চকে ক্যাচ দেন কোহলি। তাতে অবশ্য খুব একটা ঝামেলায় পড়তে হয়নি ভারতকে।

লক্ষ্য তাড়ায় নেমে স্বাগতিকরা ৩০ রানের মধ্যে দুই ওপেনার লোকেশ রাহুল (১ রান) এবং রোহিত শর্মার (১৭ রান) উইকেট হারালেও সূর্য কুমার যাদব এবং বিরাট কোহলি ঘুরিয়ে দেন ম্যাচের দৃশ্যপট। শুরুতে চাপে পড়া ভারত তাদের ব্যাটেই দেখায় দাপট। এ দুজন তৃতীয় উইকেট জুটিতে যোগ করেন ১০৪ রান।

কোহলি একটু রয়েসয়ে খেললেও সূর্যের ব্যাট কথা বলছিল খোলা তরবারির মতো। মাত্র ২৯ বলে ফিফটি তুলে নেন এই তারকা ব্যাটার। সেটাও আবার ছক্কা মেরে। অ্যাডাম জাম্পাকে এরপরের বলেও ছক্কা হাঁকান এই ডানহাতি। তবে ম্যাচ শেষ করে আসতে পারেননি তিনি। আরও দ্রুত রান তোলার নেশায় জস হ্যাজেলউডকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে লং-অফে ফিঞ্চের তালুবন্দী হন তিনি।

সঙ্গীকে হারালেও কোহলি ভারতের জয়ের পথ আরও প্রশস্ত করেন। ৩৭ বলে টি২০ ক্যারিয়ারের ৩৩তম ফিফটি তুলে নেওয়ার পর হার্দিকের সঙ্গে অসিদের ম্যাচ থেকে পুরোপুরি ছিটকে দেন কোহলি। শেষ ওভারের দ্বিতীয় বলে আউট হওয়ার আগে ৪৮ বল খেলে ৬৩ রান করেন তিনি। এরপর কার্তিককে (১ রান) নিয়ে হার্দিক ১৬ বলে ২৫ রানের অপরাজিত থেকে উৎসব করতে করতে ছাড়েন মাঠ।

অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ২ উইকেট নিতে স্যামস খরচ করেন ৩৩ রান। মার খেয়েছেন হ্যাজেলউড-জাম্পা-কামিন্সরাও। হ্যাজেলউড-কামিন্স একটি করে উইকেট পেতে খরচ করেছেন ৪০ রান। জাম্পা তো ৪৪ রান দিয়েও থেকেছেন উইকেটশূন্য।

এর আগে অস্ট্রেলিয়াকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন দলটির ওপেনার ক্যামেরুন গ্রিন। প্রথম ওভারেই ১২ রান তুলেছিলেন তিনি। তার ঝড়ো ব্যাটিংয়েই ৩ ওভারে স্কোরবোর্ডে ৪০ রান তুলে ফেলে অস্ট্রেলিয়া। অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ ফিরলেও থামেনি গ্রিনঝড়। ফিঞ্চ আউট হয়ে যাওয়ার পরের তিন বলেই মারেন তিন চার।

তবে অতিরিক্ত আগ্রাসী ব্যাটিং করতে গিয়েই নিজের বিপদ ডেকে আনেন তিনি। মাত্র ১৯ বলে ফিফটি করার পর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি তিনি। ৭ চার ও ৩ ছক্কায় ২১ বলে ৫২ রান করেছেন গ্রিন। দুই ওপেনারের বিদায়ের পর জুটি গড়েন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ও স্টিভেন স্মিথ। তবে এই জুটি টেকেনি বেশিক্ষণ। ৮ম ওভারে ম্যাক্সওয়েল কাটা পড়েন রানআউটের ফাঁদে। জীবন পেয়েও বেশি দূর যেতে পারেননি স্মিথ (৯)। যুজবেন্দ্র চাহালের বলে স্টাম্পিংয়ের শিকার হন তিনি।

টিম ডেভিড ও জস ইংলিসের জুটিতে ১২তম ওভারে এক শ রান পেরিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। ১৩ ওভার শেষে যা ৪ উইকেটে ১১৫ রান। পরের ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে বড় ধাক্কা খায় অস্ট্রেলিয়া। ২২ বলে ২৪ রান করে ইংলিস ফিরেছেন অক্ষরের দ্বিতীয় শিকার হয়ে। একই ওভারে ফিরতি ক্যাচে সাজঘরের পথ দেখান ম্যাথু ওয়েডকে।

তবে একপ্রান্ত আগলে ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে অস্ট্রেলিয়াকে এগিয়ে নিতে থাকেন ডেভিড। ১৮তম ওভার শেষে ঝড়ো ব্যাটিংয়ে দলের রান ৬ উইকেটে ১৬১-তে পৌঁছে দেন এই ব্যাটসম্যান। ডেভিডকে দারুণ সঙ্গ দেন ড্যানিয়েল স্যামস। ২৫ বলে নিজের প্রথম আন্তর্জাতিক ফিফটিও পূরণ করে নেন ডেভিড। এক বলে পরেই অবশ্য হর্ষল প্যাটেলের বলে রোহিত শর্মাকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। ২৭ বলে ২ চার ও ৪ ছক্কায় ৫৪ রান করেন এই ব্যাটসম্যান। অস্ট্রেলিয়া থামে ৭ উইকেটে ১৮৬ রানে।

news24bd.tv/সাব্বির