এবার ঘোড়ার গাড়িতে নারী ফুটবলাররা 

সংগৃহীত ছবি

এবার ঘোড়ার গাড়িতে নারী ফুটবলাররা 

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি

ইতিহাস তৈরি করে দক্ষিণ এশিয়ার শ্রেষ্ঠ হয়ে বাংলাদেশের মহিলা ফুটবল দল। সেই থেকেই অদম্য মেয়েদের সাফল্যে গোটা দেশ আনন্দে মেতে ওঠে। হিমালয়ের দেশ থেকে ট্রফি ছিনিয়ে যারা এনেছে তাদেরকে নিয়ে এখন উৎসবে মেতেছে গোটা দেশ। তবে এই উৎসবের বাড়তি উন্মাদনায় এখন বুদ ময়মনসিংহবাসী।

কারণ জেলার ধোবাউড়া উপজেলার কলসিন্দুর গ্রামেরই আট কন্যা ছিল ইতিহাস রচনা করা সেই ফুটবল দলে।

সাফজয়ী দলের কলসিন্দুরের আট ফুটবলকন্যা নিজেদের জেলা ময়মনসিংহে ফিরে গত বৃহস্পতিবার জেলা ক্রীড়া সংস্থা ও ফুটবল এসোসিয়েশনের অভ্যর্থনা ও ভালোবাসায় সিক্ত হন। এরপর শুক্রবার জেলা পুলিশের বর্ণিল সংবর্ধনায় উৎসবের রং যেন আরও গারো হয়। আপ্লুত হন সানজিদা আক্তার, মারিয়া মান্ডা, দুই শামছুন্নাহার, শিউলি আজিম, তহুরা খাতুন, সাজেদা আক্তার ও মার্জিয়া আক্তাররা।

শুক্রবার সকালে নগরীর টাউন হল মোড়ের পুলিশ অফিসার্স মেস থেকে ফুলের মালা পরিয়ে দুটি ঘোড়ার গাড়িতে চড়িয়ে বিশেষ নিরাপত্তায় পুলিশ লাইন্সের সংবর্ধনাস্থলে নেয়া হয় ফুটবলার ও তাদের গড়ে তোলার কারিগরদের। মঞ্চে উঠার পর জানানো হয় ফুলেল শুভেচ্ছা। এছাড়াও তাদের দেয়া হয় সম্মাননা ক্রেস্ট ও নগদ অর্থ পুরস্কার।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে জেলা পুলিশ সুপার মাছুম আহমেদ এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন রেঞ্জ ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্য্য। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন নারী ফুটবলার গড়ার কারিগর কলসিন্দুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিনতি রানী শীল, কলসিন্দুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক মফিজ উদ্দিন, কলসিন্দুর উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নারী ফুটবল টিমের ম্যানেজার মালা রানী সরকার, জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি একে এম দেলোয়ার হোসেন মুকুল, সাধারণ সম্পাদক মাসুদ আহম্মেদ রানা, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সহ-সভাপতি সাজ্জাদ জাহান চৌধুরী শাহীন, সাধারণ সম্পাদক এহতেশামুল আলম, নারী ফুটবলার সানজিদা আক্তার ও মারিয়া মান্ডা। এসময় জেলা ক্রীড়া সংস্থা, জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন এবং ফুটবল কন্যাদের পরিবারের সদস্যসহ পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এসময় ফুটবলার সানজিদা আক্তার বলেন, নেপালকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর থেকে মানুষের এত ভালোবাসা পাব তা কোনদিন ভাবতে পারেনি। এমন সংবর্ধনা আমাদের ভালো খেলার স্পৃহাকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। নতুনরাও উদ্দীপ্ত হচ্ছে।  

কলসিন্দুর উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নারী ফুটবল টিমের ম্যানেজার মালা রানী সরকার বলেন, আমার প্রতিষ্ঠানে আরও ৫০ জন ফুটবলার আছে। তারাও সানজিদাদের এই জয়জয়কার দেখে উজ্জীবিত হবে। তাদের হাত ধরে একদিন তারা বিশ্ব জয় করবে এটাই আমার প্রত্যাশা।  

জেলা পুলিশ সুপার মাছুম আহমেদ ভূঞা বলেন, হিমালয় জয় করা মেয়েদের সংবর্ধিত করতে পেরে আমরা নিজেরা গর্বিত ও আনন্দিত। ফুটবলের উন্নয়নে মেয়েদের পাশে থেকে জেলা পুলিশ তাদের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করবে। কারণ এটি শুধু ফুটবলের বিজয়ই না এটি নারীদের এগিয়ে যাওয়ার একটি স্বার্থক রূপায়ন।  

রেঞ্জ ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্য্য বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বদৌলতে আজ মেয়েরা প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে হিমালয় জয় করেছে। বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেচ্ছা মুজিব গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট চালু না হলে মেয়েদের কারণে দেশের এতো সুনাম হতো না। আমি প্রত্যাশা করি, মেয়েরা তাদের এ অর্জন ধরে রাখবে ও এগিয়ে যাবে বীরদর্পে।

news24bd.tv/আজিজ