ভিজিডি কার্ডের চাল আত্মসাতের অভিযোগ ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে

ভিজিডি কার্ডের চাল আত্মসাতের অভিযোগ ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে

নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলায় দুস্থ মহিলা উন্নয়ন কর্মসূচির (ভিজিডি) কার্ডের চাল আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে বিয়াঘাট ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো. বেলাল হোসেনের বিরুদ্ধে। ২১ মাস ধরে কার্ডের চাল তুলছনে ইউসি সদস্য বেলাল। এ ঘটনায় ভুক্তভুগী নারী গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

অভিযোগের বিষয়ে ইউপি সদস্য কিছু জানানে না বলে দাবি করেছেন।

তবে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।

জানা গেছে, শেফালী বেগম নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার বিয়াঘাট ইউনিয়নের যোগেন্দ্রনগর গ্রামের বাসিন্দা।
সংসারে অভাব অনটনের কারণে স্থানীয় ইউপি সদস্য বেলাল হোসেনের কাছে একটি ভিজিডি কার্ডের জন্য অনুরোধ করেন তিনি। কার্ড করে দেওয়ার জন ইউপি সদস্য বেলাল তার কাছ থেকে জাতীয় পরিচয়পত্র, ছবিসহ
যাবতীয় কাগজপত্র নেন।

পরে ভিজিডি কার্ড হয়েছে কিনা ইউপি সদস্যের কাছে জানতে চান শেফালি। কিন্তু কার্ড হয়নি বলে জানান ওই ইউপি সদস্য। পরে কার্ডের বিষয়ে আর কোনো খোঁজ নেননি তিনি।  

গত (বৃহস্পতিবার ২৯ সেপ্টেম্বর) দশ টাকা কেজি চালের কার্ড নবায়ণ করতে বিয়াঘাট ইউনিয়ন পরিষদে যান তার স্বামী সাহেব আলী। সেখানে গিয়ে সাহেব আলী জানতে পারেন তার দশ টাকা কেজি চালের কার্ড বাতিল করা হয়েছে। বাতিল হওয়ার কারণ জানতে চাইলে পরিষদ থেকে বলা হয় একই পরিবারে দুইটি কার্ড থাকলে একটি বাতিল হয়। তখন তার সাহেব আলী জানান তাদের পরিবারের জন্য শুধু একটি কার্ড রয়েছে। তাহলে আরেকটি কার্ড কিসের? তখন ইউনিয়ন পরিষদ থেকে জানানো হয় তার স্ত্রীর নামে ভিজিডি কার্ড রয়েছে। কিন্তু ভিজিডি কার্ডের বিষয়ে শেফালি এবং তার স্বামী সাহেব আলী কিছুই জানেনা।  

সাহেব আলী জানান, ইউপি সদস্য বেলাল হোসেন তার স্ত্রীর নামে বরাদ্দ চাল তুলে নিয়েছেন। কারণ ভিজিডি কার্ড করার জন্য তাকেই বলা হয়েছিলো। তদন্ত করে আইনী ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান। একই সঙ্গে আত্মসাত করা চাল ফেরত চান তিনি।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য মো. বেলাল হোসেন জানান, ভিজিডি কার্ড চেয়ারম্যান বরাদ্দ দেন। এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।

ইউপি সচিব আব্দুল হান্নান বলেন, আমি কয়েকদিন আগে এখানে যোগদান করেছি। এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না।  

বিয়াঘাট ইউপির সাবেক সচিব ও বর্তমান নাজিরপুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মো. জালাল উদ্দিন শেফালী বেগমের নামে ভিজিডি কার্ড থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তবে কে চাল তুলছেন তা তিনি জানে না বলে দাবি করেন।

ইউপি চেয়ারম্যান মো. মিজানুর রহমান সুজা জানান, পরিষদ থেকে এমন ঘটনার কথা শুনেছি। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

গুরুদাসপুর উপজেলার মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা রেখা মনি পারভিন বলেন, যার নামে কার্ড বরাদ্দ হয়েছে,
নীতিমালা অনুযায়ী তিনিই চাল পাবেন। এক জনের কার্ডের চাল অন্য কেউ নিতে পারবে না। ঘটনাটির তদন্ত
করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শ্রাবণী রায় বলেন, তদন্তের মাধ্যমে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে শাস্তির আওতায়
আনা হবে এবং কার্ডধারীকে তার প্রাপ্য অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া হবে।

news24bd.tv/হারুন