জ্বালানি নিরাপত্তা জোরদার করছে ইউরোপ

সংগৃহীত ছবি

জ্বালানি নিরাপত্তা জোরদার করছে ইউরোপ

অনলাইন ডেস্ক

রাশিয়ার জ্বালানির ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভর ইউরোপের দেশগুলো। মস্কো থেকেই বেশিরভাগ জ্বালানি আমদানি করতো তারা। তবে এতে বিপত্তি বাধায় ইউক্রেন যুদ্ধ। ইউরোপের দেশটিতে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের পর থেকেই মস্কোর ওপর একের পর এক নিষেধাজ্ঞা দিতে থাকে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমারা।

এর জেরে অঞ্চলটিতে জ্বালানি রপ্তানি কমিয়ে দেয় মস্কো।

এর মধ্যে মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দাঁড়ায় নর্ড স্ট্রিম পাইপলাইনের লিকেজ। এর জন্য পশ্চিমারা রাশিয়াকে দায়ী করলেও বিষয়টি অস্বীকার করছে তারা। লিকেজের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকেও অভিযুক্ত করা হয়েছে।

এ দিকে জ্বালানি নিরাপত্তায় ভুগতে ইউরোপরে দেশগুলো নিজেদের নিরাপত্তায় বেশ তৎপর হয়েছে। জ্বালানি নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে ইতোমধ্যে চুক্তি সেরেছে ইউরোপের বৃহৎ অর্থনীতির দেশ জার্মানি। নিজেদের গ্রিড অপারেটরগুলো ট্রান্সমিশন লাইনের সুরক্ষা বাড়িয়েছে তারা। সমুদ্র তলদেশের পাইপলাইন রুটে নৌ নজরদারি বাড়িয়েছে ইতালি। অন্যদিকে নিজেদের জ্বালানি স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদার করার ঘোষণা দিয়েছে নরওয়ে।

কাতার ভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম আল-জাজিরা এক প্রতিবেদনে জানায়, পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি তেল ও গ্যাস উৎপাদনকারী দেশ নরওয়ে। বাল্টিক সাগরের ওই ঘটনার পর নাশকতার আশঙ্কায় নিজেদের তেল ও গ্যাস স্থাপনাগুলোতে নিরাপত্তা জোরদারে সমুদ্র এলাকায় নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ড মোতায়েন করবে তারা। নিরাপত্তা জোরদারে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানি তাদের সহায়তা দেবে। নর্ড স্ট্রিম পাইপলাইনগুলোতে একাধিক লিকেজের ঘটনার পরই এমনটা করলো স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশটি।

গত সপ্তাহে ডেনমার্ক ও সুইডেন উপকূলে রাশিয়ার নর্ড স্ট্রিম পাইপলাইন-১ ও ২ এ একাধিক লিকেজ দেখা দিয়েছে। বিস্ফোরণের মাধ্যমে এমনটি হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে। এতে করে সাগরে প্রচুর পরিমাণ গ্যাস নির্গত হচ্ছে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সন্দেহ, রাশিয়া ইচ্ছাকৃত নাশকতার মাধ্যমে কাজটি করেছে। অন্যদিকে শুক্রবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের মিত্ররা পাইপলাইনগুলোতে বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন।

শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে নরওয়ের প্রধানমন্ত্রী জোনাস ঘার স্টোয়েরে বলেন, ‘আমাদের মিত্রদের সঙ্গে কথা হয়েছে। আমাদের সীমানার বাইরে নিরাপত্তা জোরদারে জার্মানি, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স হ্যাঁ বলেছে। ’

নরওয়েতে সরাসরি হুমকির কোনো ইঙ্গিত না থাকলেও নিরাপত্তা জোরদার করা বুদ্ধিমানের কাজ বলে জানিয়েছেন তিনি।

ন্যাটো সদস্য দেশটি কী পরিমাণ সহায়তা পাবে তার বিশদ বিবরণ না দিয়ে স্টোয়েরে বলেন, ‘এমন পরিস্থিতিতে মিত্র থাকা জরুরি। ’

ইউরোপে ক্রমবর্ধমান গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হয়ে উঠেছে নরওয়ে। এ অঞ্চলের মোট চাহিদার প্রায় ৩০ শতাংশ সরবরাহ করতে গ্যাস উৎপাদন বাড়িয়েছে স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশটি।

নরওয়ের সমুদ্র উপকূল থেকেই বেশিরভাগ তেল ও গ্যাস উত্তোলন করে। সেখান থেকে সমুদ্র তলদেশে পাইপলাইন দিয়ে জ্বালানি সরবরাহ করে দেশটি।

news24bd.tv/মামুন