ঘূর্ণিঝড় ইয়ানে লণ্ডভণ্ড ফ্লোরিডা

ছবি: নিউইয়র্ক টাইমস

ঘূর্ণিঝড় ইয়ানে লণ্ডভণ্ড ফ্লোরিডা

অনলাইন ডেস্ক

সাউথ ক্যারোলাইনায় আঘাত হেনেছে ঘূর্ণিঝড় ইয়ান। তবে এর শক্তি কমেছে। এক মাত্রার হারিকেনে পরিণত হয়ে মার্কিন অঙ্গরাজ্যটিতে আঘাত হেনেছে হারিকেনটি। এর আগে ফ্লোরিডায় ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে ঘূর্ণিঝড়টি।

গত বুধবার চার মাত্রার হারিকেন হিসেবে ফ্লোরিডায় আঘাত হানে ইয়ান। এটি যুক্তরাষ্ট্রে আঘাত হানা সবচেয়ে শক্তিশালী ঝড়গুলোর মধ্যে একটি বলে দাবি করা হচ্ছে। প্রবল ঝড়ো বাতাস ও জলোচ্ছ্বাসে অঙ্গরাজ্যটির উপকূলীয় বিভিন্ন শহরের কোনো ভবন ধ্বংসের হাত থেকে রেহাই পায়নি। এতে ৪৫ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে মার্কিন সংবাদ মাধ্যম সিএএন।

মার্কিন সংবাদ মাধ্যমটির তথ্য মতে, ফ্লোরিডার লি কাউন্টিতে ১৬ জন, ক্যারলোটেতে ১২ জন, কলিউর কাউন্টিতে আটজন ও ভোলোসিয়াতে চারজন মারা গেছে। এ ছাড়া পোল্ক, লেক, মানাতি কাউন্টিতে একজন করে ও সারাসোতা কাউন্টিতে দুজন মারা গেছে।  

ঘূর্ণিঝড় পূর্বাভাসকেন্দ্র ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টার (এনএইচসি) জানিয়েছে, গত বুধবার  স্থানীয় সময় ৩টার দিকে ফ্লোরিডার ফোর্ট মায়ার্স শহরের পশ্চিমে কায়োকাস্তা উপকূলে আছড়ে পড়ে ইয়ান। সে সময় ফোর্ট মায়ার্স ও তার আশপাশের এলাকায় বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ২৪০ কিলোমিটার।

হারিকেনটি প্রথম যে শহরে আছড়ে পড়েছিল, সেই ফোর্ট মায়ার্স শহর প্রায় হ্রদে পরিণত হয়েছে। এ ছাড়া জলোচ্ছ্বাসের পাশাপাশি মুষলধারে বর্ষণের কারণে ফ্লোরিডার অরল্যান্ডোসহ সমুদ্র থেকে দূরবর্তী শহরগুলোতেও বন্যা দেখা দিয়েছে।

এ দিকে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে ফ্লোরিডার মেয়র। তিনি বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে হাজার হাজার মানুষকে নিরাপদস্থানে সরিয়ে আনতে পেরেছি, কিন্তু তারপরও অনেককেই আনা সম্ভব হয়নি। ফলে প্রকৃত নিহতের সংখ্যা আরও বেশি হবে বলে আশঙ্কা করছি। ’

ইয়ানে সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ফোর্ট মায়ার্স ও তার লাগোয়া শহর ন্যাপলসে। উভয় শহরই ফ্লোরিডার লি জেলা অন্তর্গত। লির মেয়র রজার ডেসজারলেইস বলেন, ‘কোনো কিছুকে ওপরে তুলে প্রবল জোরের সঙ্গে আছড়ে ফেললে সেটির যে অবস্থা হয়, লির প্রায় সব ভবনেরই তেমন অবস্থা। কোনো ভবন আর আস্ত নেই। ’

এ দিকে হারিকেনে ফ্লোরিডাজুড়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থার গুরুতর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। রাজ্যের লি, শার্লটি, ডেসোটো ও হার্ডিসহ বিভিন্ন জেলায় ১৬ লাখেরও বেশি গ্রাহক বর্তমানে বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় রয়েছেন। একই সঙ্গে শুরু হয়েছে ব্যাপক বন্যা।  
ফ্লোরিডার আবহাওয়া দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, রাজ্যের সব শহর বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে এবং এর আগে এত বড় পরিসরে বন্যা ফ্লোরিডায় দেখা যায়নি।

এ দিকে সাউথ ক্যারোলাইনায় কম মাত্রায় আঘাত হানলেও সতর্ক অবস্থানে রাজ্যটির কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত রাজ্যটির প্রায় দুই লাখ বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বিদ্যুতহীন ছিল। ক্যারোলাইনার চার্লসটন শহরের রাস্তা পানি তলিয়ে গেছে। সেখানে কয়েকটি গাড়ি পানিতে ভেসে গেছে বলে বিবিসি জানিয়েছে।

এনএইচসি বলছে, শুক্রবার হারিকেনটি দুর্বল হয়েছে। তবে এখনও এটি বিপজ্জনক। ফ্লোরিডায় আগামী সপ্তাহে রেকর্ড বন্যা দেখা দিতে পারে বলে সতর্ক করেছে সংস্থাটি। এমনকি শনিবার সকালে ক্যারোলাইনার বিভিন্ন শহরে বন্যা দেখা দিতে পারেও বলে জানিয়েছে তারা।

এনএইচএসের তথ্য অনুযায়ী, ইয়ান নর্থ ক্যারোলাইনা ও ভার্জিনিয়ায় টর্নেডোর জন্ম দিতে পারে। পরে এটি উত্তর দিকে অগ্রসর হবে।

আরও পড়ুন: ‘ইয়ানে’ অন্তত ১৫ জনের মৃত্যু

news24bd.tv/মামুন