'মেয়েশিশু সুরক্ষায় প্রয়োজন সামাজিক আন্দোলন'

সংগৃহীত ছবি

'মেয়েশিশু সুরক্ষায় প্রয়োজন সামাজিক আন্দোলন'

অনলাইন ডেস্ক

মেয়েশিশুদের সুরক্ষায় সবার আগে তাদের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। এই অধিকার শুধু আইন, নীতিমালা কিংবা কোনো কার্যক্রমের মাধ্যমে সম্ভব হবে না। মেয়েশিশুর সুরক্ষায় একটি সামাজিক আন্দোলন প্রয়োজন। সেই অন্দোলনে যেমন সামাজিক অবিচার ও কুসংস্কার প্রতিরোধে সব মানুষের জাগ্রত হতে হবে তেমনি সরকারের নীতি উদ্যোগের মধ্যে সমন্বয় থাকতে হবে।

আজ শনিবার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় কালের কণ্ঠ কার্যালয়ে ‘মেয়েশিশুদের সুরক্ষা: যেতে হবে বহুদূর’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে এসব কথা বলেন বক্তারা।

গোলটেবিল বৈঠকটি যৌথভাবে আয়োজন করে দৈনিক কালের কণ্ঠ, পাবলিক হেলথ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (পিএইচএবি), মেরি স্টোপস বাংলাদেশ ও টিম অ্যাসোসিয়েটস।  

শনিবার অনুষ্ঠানে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক আইনুন নাহার ও জন হফকিন্স ব্লুমবার্গ স্কুল অব পাবলিক হেলথের আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য বিভাগের ফ্যাকাল্টি ও সোসাইটি ফর হেলথ প্রমোশন লিংকসের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ড. হালিদা হানুম আখতার।

স্বাগত বক্তব্যে কালের কণ্ঠের সম্পাদক শাহেদ মুহাম্মদ আলী বলেন, গত কয়েক দশকের অর্থনৈতিক ও সামাজিক অগ্রগতির পেছনের ভূমিকায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে নারীরা।

নারীরা এগিয়ে এসেছে। তবে এখনো সমস্যা রয়ে গেছে। কন্যাশিশু সুরক্ষায় আগে তাদের সমস্যার গভীরতাগুলো জানা প্রয়োজন। এ ছাড়া গণমাধ্যমে প্রতিবেদন কিংবা লেখা প্রকাশের ক্ষেত্রে কন্যাশিশু বিষয়ে সঠিক তথ্যের অভাব রয়েছে। তথ্য সংকট দূর করা প্রয়োজন।

পিএইচএবি সভাপতি অধ্যাপক শাহ মনির হোসেন স্বাগত বক্তব্যে বলেন, ‘শিশু অধিকার রক্ষায় অনেকগুলো মন্ত্রণালয় জড়িত। বিভিন্ন হাসপাতালে এডোলেসেন্স কর্নার করা হয়েছে। আরো বাড়াতে হবে। পাশাপাশি মেয়েশিশুর স্বাস্থ্যের সাথে পুষ্টির বিষয়ে দৃষ্টিপাত করতে হবে। এখন আমাদের জন্য বাল্যবিয়ে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। ’

পিএইচএবির মহাসচিব ও আলোক হেলথ কেয়ার লিমিটেডের উপদেষ্টা ডা. এস এম শহীল্লাহ বলেন, ‘আমাদের তথ্য-উপাত্ত নিয়ে সমস্যা আছে। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, মহিলা ও নারী বিষয়ক মন্ত্রণালয়, সুশীল সমাজ ও গণমাধ্যমকে ভূমিকা রাখতে হবে। ’

পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের পরিচালক (এমসিএইচ সার্ভিসেস) ও লাইন ডাইরেক্টর ডা. মো. মাহমুদুর রহমান বলেন, প্রথমত হোম ডেলিভারি বন্ধ করতে হবে। প্রাতিষ্ঠানিক ডেলিভারি আরো বাড়াতে হবে। গ্রাম পর্যায়ে প্রাইমারি হেলথ এনশিওর করতে হিবে। বাল্যবিয়ে, বারবার সন্তান নিতে দেওয়া যাবে না।

পিএইচএবির নির্বাচিত সভাপতি ডা. আবু জামিল ফয়সাল বলেন, আজকের অনুষ্ঠানের সুপারিশগুলো সরকারের নীতি-নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। নারী ও শিশু সুরক্ষায় গণমাধ্যমের ভূমিকার কথা বলেন তিনি।

পিএইচএবির সহসভাপতি ও বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব হেলথ সায়েন্সের অধ্যাপক ডা. এম এস এ মনসুর আহমদ, পিএইচএবির সাধারণ সম্পাদক ডা. এস এম শহীদুল্লাহ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পপুলেশন সায়েন্সেস বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন এবং পিএইচএবির সহসভাপতি ও বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব হেলথ সায়েন্সের ডিন অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন বক্তব্য দেন।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক হেলথ বিভাগের চেয়ারম্যান ও সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. তাজউদ্দীন সিকদার বলেন, জনস্বাস্থ্য ও কন্যাশিশু এবং তাদের সুরক্ষার বিষয়ে গবেষণার ঘাটতি রয়েছে। এসব খাতে গবেষণার জন্য অর্থায়নও করা হচ্ছে না। ফলে দেশের একটি জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সঠিক তথ্য ও রূপান্তরগুলো উঠে আসছে না।

মেরি স্টোপস বাংলাদেশের অ্যাডভোকেসি লিড মনজুন নাহারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন মেরি স্টোপস বাংলাদেশের (বহিঃসম্পর্ক ও নতুন ব্যবসা উন্নয়ন) পরিচালক ডা. ফারহানা আহমেদ, রাজধানীর মুন্সী অব্দুর রউফ পাবলিক কলেজের শিক্ষার্থী মাহিয়া মেহেরাব পূর্ণাভা, টিম অ্যাসোসিয়েটসের প্রগ্রাম কো-অর্ডিনেটর ফাতেমা-তুজ-জোহরা পৃথা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক হেলথ ও ইনফরমেটিকস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রোমেন রায়হান।