মা, বোন আর দুই মেয়েকে হারিয়ে পাথরের মতো অসাড় হয়ে গেছেন আলোরানী। মেয়ের মরদেহ খুঁজতে আজও করতোয়ার পাড়ে গিয়েছেন তাদের বাবা ধীরেন রায়। সঙ্গে ছিলো নিহত জ্যোতি (২) ও জয়া রানীর (৪) বড় ভাই শান্ত।
ধীরেনের দুই মেয়ে নৌকাডুবিতে মারা গেছে।
নৌকাডুবির ২ দিন পর ছোট মেয়ে জ্যোতি রানীর মরদেহ খুঁজে পান তিনি। কিন্তু এখনও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বড় মেয়ে জয়া রানীর মরদেহ। দুই মেয়েকে হারিয়ে শোকে পাথর হয়ে গেছে তাদের পরিবার।পঞ্চগড় সদর উপজেলার ঘাঁটিয়ার পাড়া গ্রামের এই পরিবার এখন নিথর হয়ে পড়েছে।
আক্ষেপ করে আলোরানী বলেন, কখন যে কি হয়ে গেল বুঝতে পারলাম না। নৌকাটা উল্টে যাবার সাথে সাথে মানুষের চাপে জ্যোতি ছিটকে পড়ে গেলো। জ্যোতি কোথায় জানি না। সবাই আমাকে ধরে পানির নিচে টানতে লাগলো। আমি সাঁতার জানতাম। সাঁতার কাটছি আর জয়া জ্যোতিকে খুঁজছি। কোনোমতে ভেসে ভেসে অনেক দূর এসে দেখি কে যেন আমাকে উপরে তুলে এনেছে। পরে জানলাম আমার মেয়ে দুটো নাই। তারপর শুনলাম আমার মাও ডুবে গেছে, আমার ছোট বোনও মারা গেছে। আমার পরিবারের ৫ জন মারা গেছে। আমার আর বেঁচে থাকতে ইচ্ছে করছে না।
পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় মহালয়া পূজা উপলক্ষে বদেশ্বরী মন্দিরে যাওয়ার জন্য নৌকা বেয়ে করতোয় নদী পার হওয়ার সময় নৌকাডুবির ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৬৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এদিকে একই ঘটনায় আরও তিনজন নিখোঁজ রয়েছে। এখন পর্যন্ত উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রেখেছে ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট। তবে নৌ দুর্ঘটনার ৮ম দিনেও নিখোঁজ স্বজনরা মরদেহ পাওয়ার আশায় এখনও করতোয়া নদীর ঘাট এলাকায় অপেক্ষার প্রহর গুনছেন।
ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, অভিযান অব্যাহত থাকবে। আজ রোববার (২ অক্টোবর) রাতেই তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবে তদন্ত কমিটি। সোমবার জানা যাবে এই নৌকাডুবির প্রকৃত কারণ।
news24bd.tv/FA