খেলোয়াড়ের কোলে ভক্তের মৃত্যু

সংগৃহীত ছবি

খেলোয়াড়ের কোলে ভক্তের মৃত্যু

অনলাইন ডেস্ক

ইতিহাসের অন্যতম এক ট্র্যাজেডি দেখেছে ফুটবল বিশ্ব। ইন্দোনেশিয়ার ফুটবল মাঠে পদদলিত হয়ে মৃতের সংখ্যা দু’শ ছাড়িয়ে গেছে। হতাহত হয়েছেন বহু। যাদের মধ্যে বেশ কিছু ফুটবল অনুরাগী গুরুতর আহত অবস্থায় টিম ডক্টরের কাছে গিয়েছিলেন।

তাদের বাঁচাতে এগিয়ে এসেছিল ফুটবলাররাও। তবে শেষ পর্যন্ত বাঁচানো যায়নি তাদের অনেককেই। ফুটবলারদের হাতেই ছটফট করতে করতে মারা গেছেন বেশ কজন। ভয়ঙ্কর সেই অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন চিলির ফুটবল কোচ জাভিয়ের রোকা।

৪৫ বছর বয়সী রোকা ক্যারিয়ারের একটি বড় অংশ ইন্দোনেশিয়ায় কাটিয়েছেন। কাছ থেকে দেখেছেন ভয়াবহ সেই ঘটনাটি। যা তাকে ভীষণভাবে আহত করেছে।

রোকা বলেন, ‘সবচেয়ে ভয়ঙ্কর ব্যাপার ছিল যখন ভুক্তভোগীরা টিম ডাক্তারের কাছে চিকিৎসা করতে এসেছিল। প্রায় ২০ জন সেখানে আসেন এবং যাদের মধ্যে চারজন মারা যান। যাদের মৃত্যু হয়েছে খেলোয়াড়দের হাতের ওপর। আমি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছি। আমি একটি ভারী বোঝা, এমনকি একটি ভারী দায়িত্ব অনুভব করছি। ’

‘ম্যাচের পরে, আমি ড্রেসিংরুমে গিয়েছিলাম, এবং কিছু খেলোয়াড় পিচে ছিলেন। সংবাদ সম্মেলন থেকে ফিরে আমি ট্র্যাজেডি দেখেছি। ছেলেরা আহতদেরকে কোলে নিয়ে পাশ দিয়ে যাচ্ছিল। ফলাফল আমাদের নির্দেশ দেয় এবং শেষ পর্যন্ত কী ঘটবে তা নির্ধারণ করে। দৃশ্যপট যদি আঁকতে পারতাম তাহলে এটা ঘটত না। ’

রোকা পুলিশকে অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া দেখানোর জন্য অভিযুক্ত করেছেন এবং স্টেডিয়ামটি প্রস্তুত ছিল না বলে অভিযোগ তুলেছেন।

তিনি বলেন, ‘এটা প্রমাণিত হয়েছে যে স্টেডিয়ামটি প্রস্তুত ছিল না, তারা এমন বিশৃঙ্খলা আশা করেনি। স্টেডিয়ামে কখনও এরকম কিছু ঘটেনি, এবং পালাতে চেয়েছিলেন এমন লোকের সংখ্যার কারণে এটি ভেঙে পড়েছিল। আমি মনে করি পুলিশ তাদের সীমা অতিক্রম করেছে, যদিও আমি সেখানে ছিলাম না এবং ফলাফলটি অনুভব করিনি। কিন্তু ছবিগুলো দেখলে বুঝা যায়, তারা অন্য কৌশল ব্যবহার করতে পারত। ম্যাচের কোনো ফল হয় না, তা যত গুরুত্বপূর্ণই হোক না কেন, সেটা জীবন হারানোর চেয়ে মূল্যবান নয়। ’

এর আগে শনিবার রাতে আরেমা এফসি ও পেরসেবায়া ফুটবল ক্লাবের মধ্যে খেলা চলছিল। তবে ম্যাচটি ৩-২ গোলে জেতে পারসেবায়া। দুই দশকের বেশি সময় পর পারসেবায়ার কাছে হারায় আরেমার সমর্থকেরা ক্ষুব্ধ হয়ে মাঠে ঢুকে পড়েন। শুরু হয় ঘটনার সূত্রপাত।

সমর্থকরা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে থাকলে এক পর্যায়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য পুলিশ কাঁদুনে গ্যাস ছোড়ে। তাতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এবং হুড়োহুড়ি শুরু হয়। চরম বিশৃঙ্খলার মধ্যে পদদলিত এবং শ্বাসরুদ্ধ হয়ে হতাহতের ঘটনা ঘটে। পুলিশ প্রধানের দাবি, বাধ্য হয়েই তারা কাঁদুনে গ্যাস ছোড়ে।

news24bd.tv/আমিরুল