‘আমি সমস্ত মৃতদেহ অনুসন্ধান করতে থাকি, তারপর আমি আমার দত্তক নেওয়া দুই কন্যা নাতাস্যা এবং নায়লাকে খুঁজে পাই। আমি তাদের মাকে হন্নে হয়ে খুঁজছিলাম। পরে তাকে পেলেও হাসপাতালে মারা যান তিনি। আমি আর কখনই ফুটবল ম্যাচ দেখব না।
গত সপ্তাহেই ইতিহাসের অন্যতম এক ট্র্যাজেডি দেখেছে ফুটবল বিশ্ব। কর্তৃপক্ষের দেওয়া হিসেব মতে, ইন্দোনেশিয়ার ফুটবল মাঠে পদদলিত হয়ে মৃতের সংখ্যা ১৩১।
এর আগে শনিবার রাতে আরেমা এফসি ও পেরসেবায়া ফুটবল ক্লাবের মধ্যে খেলা চলছিল। তবে ম্যাচটি ৩-২ গোলে জেতে পারসেবায়া। দুই দশকের বেশি সময় পর পারসেবায়ার কাছে হারায় আরেমার সমর্থকেরা ক্ষুব্ধ হয়ে মাঠে ঢুকে পড়েন। শুরু হয় ঘটনার সূত্রপাত।
সমর্থকরা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে থাকলে এক পর্যায়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য পুলিশ কাঁদুনে গ্যাস ছোড়ে। তাতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এবং হুড়োহুড়ি শুরু হয়। চরম বিশৃঙ্খলার মধ্যে পদদলিত এবং শ্বাসরুদ্ধ হয়ে হতাহতের ঘটনা ঘটে। পুলিশ প্রধানের দাবি, বাধ্য হয়েই তারা কাঁদুনে গ্যাস ছোড়ে।
ঘটনাবহুল ম্যাচটি পরিবার নিয়ে স্টেডিয়ামে বসে দেখছিলেন অ্যান্ডি। আর সাক্ষী হয়েছেন নির্মম সত্যের। দর্শক স্ট্যান্ডে পদদলিত হয়ে হারিয়েছেন স্ত্রী, দুই কিশোরী কন্যা এবং এক চাচাতো ভাইকে।
ঘটনার সময় স্ট্যান্ডে অবস্থান করেছিল অ্যান্ডি। তিনি জানান, ‘ছেলেকে শক্ত করে বাহুতে ধরে রেখেছিলেন তিনি। তখন টিয়ার গ্যাস ও ধোয়ায় তার স্ত্রী এবং কন্যারা তার থেকে আলাদা হয়ে যায়। তারা সেখান থেকে পালানোর চেষ্টা করেছিল। এসময় গেট তালাবন্ধ ছিল। পরে পদদলিত ও শ্বাসরোধে শিকার হয় তারা। তবে তাদের কখনই স্ট্যান্ডে টিয়ার গ্যাস বা গুলি করা উচিত ছিল না কারণ, সমস্ত বিশৃঙ্খলা মাঠে হয়েছিল। ’
এ ঘটনার পর ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা ম্যাচগুলিতে ‘ভিড় নিয়ন্ত্রণ গ্যাস’ ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে। একটি ইন্দোনেশিয়ান পুলিশ ওয়াচডগ জানিয়েছে, কিছু অফিসার স্টেডিয়ামের ভেতরে ভুলভাবে টিয়ার গ্যাস ব্যবহার করেছিল যার কোনও আদেশ ছিল না।
news24bd.tv/আমিরুল