আগামী শীতে গ্যাস সংকটে পড়বে ইউরোপ? 

সংগৃহীত ছবি

আগামী শীতে গ্যাস সংকটে পড়বে ইউরোপ? 

অনলাইন ডেস্ক

ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ শুরুর পর রাশিয়ার উপর ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একের পর এক অবরোধ আরোপ করতে থাকে। অবরোধের প্রতিবাদ হিসেবে রাশিয়াও ইউরোপে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। এর ফলে ইউরোপে দেখা দেয় জ্বালানি সংকট। সঙ্গে প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম এই বছর নতুন উচ্চতায় পৌঁছে যায়।

তবে সামনের শীতে ইউরোপে গ্যাস সংকট প্রকট আকার ধারন করবে কি না তা নিয়ে চলছে নানা পর্যালোচনা। সেই পর্যালোচনায় বলা হচ্ছে, ২০২৩ সালের মার্চে ইউরোপে গ্যাস সংকট দেখা দিতে পারে।  

গ্যাস সংকট মোকাবেলা করতে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো ইতিমধ্যে শক্তি সংস্থাগুলোর লাভের উপর জরুরি শুল্ক আরোপ করতে সম্মত হয়েছে। একই সঙ্গে জ্বালানির ব্যবহার ৫ শতাংশ কমাতে সম্মত হয়েছে।

 

ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রভাব ব্যাপকভাবে পড়েছে যুক্তরাজ্যে ওপর। এর প্রভাবে তীব্র জ্বালানি সংকটে পড়েছে যুক্তরাজ্য। বেড়ে গেছে মূল্যস্ফীতি। ফলে মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়েছে অসহনীয়ভাবে। দেশের অর্থনীতিও হুমকির মুখে পড়েছে। এ অবস্থা থেকে মুক্ত পেতে গত সপ্তাহে কর কমানোর নীতিগত সিদ্ধান্ত নেন প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস। দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়াতে কর কমানোর সিদ্ধান্ত নেয় যুক্তরাজ্য সরকার।

ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের প্রভাব শুধু যুক্তরাজ্যেই পড়েনি, পড়েছে পুরো ইউরোপজুড়ে। যুদ্ধের প্রভাবে সবচেয়ে সংকটে ফেলেছে জ্বালানি খাতকে। এই সংকট আগামী শীতে আরও প্রকট আকারে দেখা দিতে পারে বলে রয়টার্সের বাজার বিশ্লেষক জন কেম্পের আলোচনায় উঠে এসেছে। তবে জ্বালানি সংকট সামাল দিতে পাল্টা ব্যবস্থা নিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।

রাশিয়ান গ্যাসের উপর নির্ভরতা কমাতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ন্যূনতম গ্যাস সংরক্ষণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। বর্তমানে ইউরোতে গ্যাস সংরক্ষণ সক্ষমতা হল ৮৯ দশমিক ৬ শতাংশ, যা পহেলা অক্টোবর থেকে লক্ষ্যমাত্রার ৮০ শতাংশ সংরক্ষিত থাকবে।

শুধু তাই নয়, আসছে শীত মৌসুমে জ্বলানি সংকট মোকাবেলায় ইইউ শক্তি সংস্থাগুলোর লাভের উপর জরুরি শুল্ক আরোপ করতে সম্মত হয়েছে। এছাড়া বিদ্যুতের ব্যবহারে বাধ্যতামূলকভাবে ৫ শতাংশ কমানোর বিষয়েও সম্মত হয়েছে ইইউ নেতারা।  

একই সময়ে ইউরোপীয় দেশগুলো শীতে ঘর গরম রাখা, বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং কারখানাগুলো চালু রাখতে বিকল্প শক্তির সন্ধানের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।

এ দিকে গ্যাসের চাহিদা কামানো গেলে সংকট মোকাবেলায় একটু হলেও সুফল পাওয়ার আশা দেখাচ্ছে ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সির (আইইএ) গবেষণা। চলতি সপ্তাহে সংস্থাটির প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ইউরোপে জ্বালানির চাহিদা ১০ শতাংশ কমাতে পারলে ২০২২ সালে বিশ্বব্যাপী গ্যাসের ব্যবহার দশমিক ৮ শতাংশ হ্রাস পাবে।

তবে রাশিয়া থেকে আমদানি সম্পূর্ণ বন্ধের ফলে ২০২৩ সালের মার্চ শেষ হওয়ার আগে গ্যাসের সংকট হবে বলে জানানো হয়েছে ওই প্রতিবেদনে।


উল্লেখ্য, ইউক্রেনে রাশিয়া আগ্রাসনের কারণে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্র মস্কোর ওপর একাধিকবার অবরোধ আরোপ করে। এই অযুহাতে গত আগস্টে রাশিয়া নর্ড স্ট্রিম ওয়ান পাইপলাইনের মাধ্যমে জার্মানিসহ ইউরোপে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। সে সময় রাশিয়ার পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, পাইপলাইন মেরামতের জন্য গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে। পরে বলা হয়, মস্কোর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত সরবরাহ শুরু করা হবে না।

news24bd.tv/হারুন