জার্মান ক্লাসিকো: জয়ের সমান ড্র ডর্টমুন্ডের   

সংগৃহীত ছবি

জার্মান ক্লাসিকো: জয়ের সমান ড্র ডর্টমুন্ডের   

অনলাইন ডেস্ক

এই না হলে ক্লাসিকো! এল ক্লাসিকোর মতো বিশ্বব্যাপী অত জনপ্রিয় না হলেও, ‘ডের ক্লাসিকের’ বা জার্মান ক্লাসিকো নিয়ে উন্মাদনার কমতি থাকে না। সেই উন্মাদনাকে আজ শ্বাসরুদ্ধকর এক লড়াইয়ে আরও বাড়িয়ে দিল বায়ার্ন মিউনিখ এবং বরুসিয়া ডর্টমুন্ড।

জার্মান বুন্দেসলিগার ম্যাচে ডর্টমুন্ডের মাঠ সিগনাল ইদুনা পার্ক থেকে জয় নিয়ে বাড়ি ফেরার সব বন্দোবস্ত সেরে রেখেছিল বায়ার্ন। তবে রেফারি যখন শেষ বাঁশি বাজানোর অপেক্ষায়, তখনই ডর্টমুন্ডের অবিশ্বাস্য এক গোল! যে গোলে বায়ার্ন হারায় নিশ্চিত ২ পয়েন্ট।

আর স্বাগতিকদের নামের পাশে জমা হয় ১ পয়েন্ট।

ইদুনা পার্কে শুরু থেকেই জমজমাট জার্মান ক্লাসিকো, আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে জমে ওঠে ম্যাচ। প্রতিপক্ষকে সামলাতে ম্যাচের ১৩ মিনিটেই তাই হলুদ কার্ড দেখেন দুই দলের তিন ফুটবলার। ৩১ মিনিটে গোলমুখে প্রথম শট নেয় ডর্টমুন্ড।

রাফায়েল গুরেরর সেই শট আটকাতে খুব বেশি বেগ পেতে হয়নি বায়ার্ন গোলরক্ষক ম্যানুয়েল নয়্যারকে।

উল্টো ৩৩ মিনিটে আক্রমণে ওঠা বায়ার্ন পেয়ে যায় গোল। প্রথমে সাদিও মানের কারিকুরির পর বল পেয়ে যান জামাল মুসিয়ালা। ডি বক্সে তিনিও দেখান নিজের কারিশমা। পাস দেন ডি বক্সের বাইরে জটলা থেকে দূরে থাকা লিওন গোরেৎজাকে। ডি বক্সের বাইরে থেকেই এই মিডফিল্ডারের মাটি কামড়ানো শটে বল স্বাগতিক গোলরক্ষককে ফাঁকি দিয়ে ঢুকে যায় জালে।

এক গোলের লিড নিয়ে বিরতিতে যাওয়া বায়ার্ন মিউনিখ দ্বিতীয়ার্ধেই শুরুতেই বাড়ায় ব্যবধান। ৫৩ মিনিটে মুসিয়ালাকে থামাতে গেলে বল চলে যায় লেরয় সানের পায়ে। সানে বল পায়ে বেশিদূর এগোননি। শট নেন ডি বক্সের বেশ বাইরে থেকেই। ২০ গজ দূর থেকে তার নেওয়া শট ডর্টমুন্ড গোলরক্ষক আলেকজান্দার মেয়ারের গ্লাভস ছুঁয়ে পৌঁছে যায় জালে।

সানের সেই গোলের পর ডর্টমুন্ডের ম্যাচে ফেরার আশা কার্যত শেষ হয়ে গিয়েছিল। তবে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের বিপক্ষে এত সহজে হাল দিলে হয়? ছাড়ল না ডর্টমুন্ডও। তার ফলও এলো কতক্ষণের মধ্যে। ৭৪ মিনিটে বায়ার্নের রক্ষণ ভেঙে বাঁ প্রান্ত থেকে অ্যান্থনি মদেস্তে ডি বক্সে বল বাড়ান ইউসউফা মৌকোকোর দিকে। বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ঠাণ্ডা মাথার গতিময় শটে নয়্যারকে পরাস্ত করেন ১৭ বছর বয়সী এই জার্মান স্ট্রাইকার।

৮৩ মিনিটে মদেস্তে নিজেই পারতেন ম্যাচে সমতা ফেরাতে। তবে গোললাইনের ছয় গজ দূর থেকেও বলে ঠিকঠাক শট নিতে না পাড়ায় নয়্যার বিপদমুক্ত করেন অতিথিদের। ৯০ মিনিটে ঘুরে যায় ম্যাচের দৃশ্যপট। লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন কিংসলে কোমান। করিম আদিয়েমির সঙ্গে দৌড়ে না পেরে তাকে অবৈধভাবে আটকাতে যেয়ে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে বায়ার্নকে বিপদে ফেলেন তিনি।

শেষ পর্যন্ত একজন কম নিয়ে খেলার মাশুল দিতে হয় বায়ার্নকে। ৪ মিনিটের ইনজুরি সময়ও তখন শেষ, আক্রমণ থামলেই শেষ বাঁশি বাজাবেন রেফারি। এমন সময় আদেয়েমি ডি বক্সের মধ্যে উড়ন্ত বল পাঠালেন। ডিফেন্ডার নিকো শ্লটটেরবেক বল প্রথমবার ঠিকঠাক নিয়ন্ত্রণে না নিতে পারলেও কোনমতে আটকান গোলকিক থেকে। এরপর রাইট-চ্যানেলের একদম কানায় থেকে তার দেওয়া ক্রস থেকে আগের ভুলের প্রায়শ্চিত্ত করেন মদেস্তে।

শ্লটটেরবেকের ক্রস দারুণ এক হেডে কাছের পোস্ট থেকে জালে জড়ান মদেস্তে। অকল্পনীয় সেই গোলের পর ডর্টমুন্ডের উদযাপন দেখে কে। ইদুনা পার্কে থাকা স্বাগতিক দর্শকরদের অবস্থা তখন পাগলপ্রায়। ডর্টমুন্ড কোচ এডিন টেরজিক উল্লাস করতে মাঠে নেমে পড়েন। বুনো উল্লাস চলে স্বাগতিকদের ডাগআউটেও। আর তা হবে নাই বা কেন? চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের বিপক্ষে এই ড্র যে তাদের কাছে জয়ের সমানই।

news24bd.tv/সাব্বির