ঝুঁকিতে বাগেরহাটের ১৫০ কি মি বেড়িবাঁধ, আতঙ্কে এলাকাবাসী

সংগৃহীত ছবি

ঝুঁকিতে বাগেরহাটের ১৫০ কি মি বেড়িবাঁধ, আতঙ্কে এলাকাবাসী

অনলাইন ডেস্ক

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটে গতরাত থেকে টানা বৃষ্টি হচ্ছে। ঝড়ের প্রভাবে নদ-নদীতে জোয়ারের পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পেলে বেড়িবাঁধ উপচে বা ভেঙে নদী তীরবর্তী এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। ১৫০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ। তারা বাঁধ মেরামতের জন্য ১৫ হাজার জিও ব্যাগ ও ৫ হাজার সিনথেটিক ব্যাগ প্রস্তুত রেখেছে বলে জানিয়েছে।

সোমবার (২৪ অক্টোবর) সকালে সরেজমিনে দেখা গেছে, খুব বেশি প্রয়োজন ছাড়া সাধারণ মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছে না। বৈরী আবহাওয়ায় সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছে খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষ। মাছ ধরার ট্রলার ঘাটে অবস্থান করছে।  

ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেওয়া সিত্রাং মোকাবিলা করতে উপকূলীয় জেলা বাগেরহাট প্রস্তুতি নিয়েছে।

রোববার বিকেলে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি একটি জরুরি সভা করে। তারা জানায়, ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় সাধারণ মানুষকে আশ্রয় দিতে জেলার ৩৪৪টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হচ্ছে। এসব কেন্দ্রে আশ্রয় নিতে পারবে দুই লাখের বেশি মানুষ। প্রস্তুত রাখা হয়েছে শুকনো খাবারও।

বাগেরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাসুম বিল্লাহ বলেন, বাগেরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে ২২০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ রয়েছে। এর মধ্যে শরণখোলা উপজেলার ৬৫ কিলোমিটার বাঁধ সুরক্ষিত রয়েছে। মোংলা উপজেলাতে কোন বাঁধ নেই। মোরেলগঞ্জ ও রামপাল উপজেলার কিছু অংশে বাঁধ রয়েছে। এসব এলাকা ঝুঁকিতে রয়েছে।  

আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী- তিন থেকে সাত ফুট পর্যন্ত জোয়ারের পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাবে। এ কারণে এসব এলাকা প্লাবিত হবে। মোরেলগঞ্জ উপজেলার দৈবজ্ঞহাটিতে যে বেড়িবাঁধ রয়েছে তা ঝুঁকিপূর্ণ তা মেরামতের জন্য কাজ চলমান রয়েছে বলে জানান প্রকৌশলী মো. মাসুম বিল্লাহ। পানির চাপে কোনো অংশে বাঁধ ভেঙে গেলে তা মেরামতের জন্য ১৫ হাজার জিও ব্যাগ ও ৫ হাজার সিনথেটিক ব্যাগ প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার মাস্টার ক্যাপ্টেন শাহীন মজিদ জানান, মোংলা বন্দরে ইউরিয়া সার, কন্টেইনার, কয়লা, গ্যাস, সিমেন্ট তৈরির কাঁচামালসহ মোট ১৪টি দেশি বিদেশি জাহাজ বন্দরে অবস্থান করছে। টানা বৃষ্টির কারণে জাহাজে পণ্য ওঠানামার কাজ ব্যাহত হচ্ছে। বন্দরে থাকা দেশি-বিদেশি জাহাজ ও ছোটবড় নৌযানগুলোকে নিরাপদে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে।  

বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান বলেন, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং ২৫ অক্টোবর ভোরে উপকূল অতিক্রম করতে পারে বলে আবহাওয়া অধিদপ্তর আশঙ্কা করছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এবং দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে যে নির্দেশনা পেয়েছি সেই অনুযায়ী একটি প্রস্তুতিমূলক সভা করা হয়েছে। বাগেরহাট জেলায় ৩৪৪টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রে রয়েছে। এই আশ্রয় কেন্দ্রের ধারণ ক্ষমতা ২ লাখ আট হাজার ৪৩০ জন। আশ্রয় কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত রাখা হচ্ছে। এসব কেন্দ্রে মানুষদের নিয়ে যাওয়ার নির্দেশনা পেলে তাদের নিয়ে যাওয়া হবে। বিভিন্ন সেচ্ছাসেবী সংগঠন, এনজিও, জনপ্রতিনিধিরা স্থানীয় জনগনকে সচেতন করবে এবং তারা দুর্যোগের সময় আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নেবে।  

দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য নগদ ৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা ও প্রায় ৩০০ মেট্রিক চাল মজুদ রয়েছে। এছাড়া ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয় শুকনো খাবার বরাদ্দ দিচ্ছে। এই বরাদ্দ স্ব স্ব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের কাছে পৌঁছে দেয়া হবে। সবাইকে শুকনো খাবার চিড়া, মুড়ি ও গুড় মজুদ করতে বলা হয়েছে। আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী সব প্রস্তুতি গ্রহণ করবে প্রশাসন।

আরও পড়ুন..সরাসরি ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং দেখুন এখানে

সারাদেশে নৌ চলাচল বন্ধের নির্দেশ

ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং, আঘাত হানতে পারে মঙ্গলবার ভোরে

 সেন্টমার্টিনে জাহাজ চলাচল বন্ধ

 অবশেষে 'সিত্রাংয়ে' পরিণত গভীর নিম্নচাপটি, ৪ নং সতর্কতা জারি

 বিশ্বের বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড়ের বেশির ভাগই বাংলাদেশে

অতিবৃষ্টিতে পাহাড় ধ্বসের শঙ্কা

আগামী ৪৮ ঘণ্টায় ৬ বিভাগে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস

ধেয়ে আসছে সিত্রাং, ৭ নম্বর বিপদ সংকেত

কোন সতর্ক বার্তার অর্থ কী

১০ জেলায় দুপুরের মধ্যে ঝড়োবৃষ্টি-বজ্রপাতের শঙ্কা

ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’য়ের অবস্থান দেখুন সরাসরি 

news24bd.tv/ইস্রাফিল