লক্ষ্মীপুরে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে

লক্ষ্মীপুরে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে

 লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি:

ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলছে লক্ষ্মীপুরে। ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব ছড়িয়েছে গ্রাম অঞ্চলেও। প্রতিদিনই ভর্তি হচ্ছেন নতুন নতুন রোগী। বর্তমানে জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন তিন শিশুসহ ১৪জন রোগী।

ডেঙ্গু থেকে রক্ষা পেতে মানুষের ঘরবাড়ি ও আশপাশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।  

এদিকে এডিস মশার আতঙ্কে পৌর এলাকার ড্রেনগুলো পরিস্কার করার পাশাপাশি খানাখন্দ ও ডোবায় জমে থাকা পানি নিষ্কাশনের দাবি জানিয়েছে পৌরবাসী।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপকূলীয় জেলা লক্ষ্মীপুরে ডেঙ্গু ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। গত ২৪ ঘন্টায় সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১০জন রোগী।

বর্তমানে শিশু, যুবক, বৃদ্ধসহ বিভিন্ন বয়সী ১৪ জন রোগী মশারি টাঙিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে সংশ্লিষ্টদের। রোগীর চাপে এখানে ডায়রিয়া বিভাগে দুটি ইউনিট চালু করে কর্তৃপক্ষ। বর্তমানে যারা চিকিৎসাধীন রয়েছে, তারা আগের চেয়ে অনেকটা ভালো। আক্রান্তদের মধ্যে অনেকে ঢাকা থেকে এসেছে। কেউ কেউ স্থানীয়ভাবে আক্রান্ত হয়েছে।  

স্থানীয়দের অভিযোগ, পৌর এলাকাসহ গ্রাম অঞ্চলেও মশা নিধনে নেয়া হয়নি প্রয়োজনীয় কোনো ব্যবস্থা।  লক্ষ্মীপুর পৌর এলাকার ড্রেনে ময়লা-আবর্জনা ও পঁচা পানি জমে থাকায় এডিশ মশার আতঙ্কে রয়েছে পৌরবাসী।

সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, লক্ষ্মীপুরে এ মৌসুমে ১৩৯ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ১৩০ জন সদর হাসপাতালে ও ৯ জন কমলনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন। শুধুমাত্র অক্টোবর মাসেই ৬৯ জন রোগী সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। বর্তমানে ৩জন শিশুসহ ১৪ জন রোগীকে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। অন্যরা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। এছাড়া জেলার বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিকে অনেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

ডেঙ্গু আক্রান্ত ইসমাইল হোসেন আলম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জানান, বাড়ির আশে পাশে মশার উপদ্রব বেড়েছে। হঠাৎ করে জ্বর আসলে চিকিৎসকের পরামর্শে রক্ত পরীক্ষা করলে ডেঙ্গু রোগ ধরা পড়ে। পরে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছি। এ রোগে প্রতিদিনই রক্তের কণিকা কমে যায়।

হাসপাতালে ভর্তি আক্রান্ত এমরান হোসেন নামে অপর এক রোগী জানান, ঢাকায় একটি গার্মেন্টেসে কাজ করতেন। সেখানে জ্বর আসলে গ্রামের বাড়িতে আসেন। পরে পরিক্ষায় ডেঙ্গু ধরা পড়ে। এখন হাসপাতালে গত ৫ দিন ধরে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের শিশু কনসালটেন্ট ডা. মোরশেদ আলম হিরু বলেন, লক্ষ্মীপুরে শিশুরাও ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এ জন্য সন্ধ্যার পরপরই ঘরের দরজা জানালা বন্ধ করতে হবে। এছাড়া রাতে অবশ্যই মশারী টাঙিয়ে ঘুমানোর পরামর্শ এ চিকিৎসকের।

সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. আনোয়ার হোসেন বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতন হওয়ার পাশাপাশি মানুষের ঘরবাড়ি ও আশপাশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুতই হাসপাতালে আসার পরামর্শ দেন তিনি।

লক্ষ্মীপুর পৌর মেয়র মোজাম্মেল হায়দার ভূঁইয়া মাসুম বলেন, মশা প্রতিরোধে গত দেড় মাস আগে থেকেই হাসপাতাল ও পৌর এলাকায় ওষুধ ছিটানো হয়েছে। এ কার্যক্রম এখনো চলমান আছে। এছাড়া মানুষকে সচেতন করতে মাইকিংসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে বলে জানান মেয়র।  

news24bd.tv/কামরুল