আবারও নীতিনির্ধারণী সুদের হার বাড়াল যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ। বুধবারের (২ নভেম্বর) সর্বসম্মতিক্রমে সুদের হার শূন্য দশমিক ৭৫ বাড়ানো হয়েছে। এ নিয়ে এক বছরের মধ্যে ষষ্ঠবারের মতো সুদের হার বাড়াল দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক। খবর দ্য গার্ডিয়ানের।
প্রতিবেদনে ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যমটি জানায়, ৪০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের মুদ্রাস্ফীতি। এমন পরিস্থিতিতে মুদ্রাস্ফীতি ঠেকাতে সুদের হার তিন চতুর্থাংশ অর্থাৎ শূন্য দশমিক ৭৫ শতাংশ বাড়িয়েছে ফেডারেল ব্যাংক। বর্তমানে সুদের হার দাঁড়িয়েছে ৩.৭৫-৪ শতাংশে।
চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে সবশেষ সুদের হার বাড়িয়েছিল ফেডারেল ব্যাংক।
এ দিকে সুদের হার ফের বাড়ানো হতে পারে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকটির কর্মকর্তারা। এ ছাড়া মুদ্রাস্ফীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য ঋণের খরচ আরও বাড়তে হবে জানান তারা।
গার্ডিয়ান বলছে, মুদ্রাস্ফীতিতে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম ব্যাপকহারে বাড়ছে। আর এই বিষয়টি মধ্যবর্তী নির্বাচনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ভাগ্য নির্ধারণ করবে। এর জেরে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা সুদের হার বাড়িয়েছে। এমনটা সবশেষ দেখা গিয়েছিল ১৯৮০ সনে। ওই সময় মূল্যস্ফীতি ১৪ শতাংশে এবং সুদের হার ২০ শতাংশে পৗঁছেছিল।
সুদের হার বাড়ানোর পর এক সংবাদ সম্মেলনে ফেডারেল ব্যাংকের চেয়ারম্যান জেরোমি পাওয়েল বলেন, ‘আমাদের আত্মতুষ্টির কোনো জায়গা নেই। বৃহত্তর অর্থনীতির প্রভাব মূল্যায়নে সুদের হার বাড়ানো হয়েছে। এটা বাদেও আমাদের কাছে অন্য রাস্তা ছিল। তবে শেষ বৈঠকে আমাদের সামনে যে ডেটা উপস্থাপিত করা হয় তা দেখে সুদের হার বাড়ানো হয়েছে। পরবর্তী বছরে এর পরিমাণ প্রত্যাশার চেয়ে আরও বাড়তে পারে। ’
৮০ এর দশকে মুদ্রাস্ফীতি ও সুদের হার যেভাবে বেড়েছিল এখন এমনটা হবে না বলে আশাবাদী কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তবে জেরোমি পাওয়েল ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, বছরের শেষে নাগাদ সুদের হার ৪ দশমিক ৪-এ গিয়ে ঠেকতে পারে, যা কমতে শুরু করবে ২০২৪ সাল থেকে।
যুক্তরাজ্য ভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম স্কাই নিউজ বলছে, মুদ্রাস্ফীতি সীমিত করার প্রয়াসে সর্বশেষ কঠোর অবস্থান নেওয়া হয়েছে। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে মুদ্রাস্ফীতি ছিল ৮ দশমিক দুই শতাংশের বেশি। মুদ্রাস্ফীতি দুই শতাংশ কমানোর সামগ্রিক পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এই সুদের হার বাড়ানো হয়েছে।
ফেডারেল ব্যাংকের এই পদক্ষেপ এমন সময় এসেছে যখন বিশ্বজুড়ে সরকারগুলো মূল্যস্ফীতির সঙ্গে লড়াই করছে। ক্রমবর্ধমান খাদ্য মূল্য যুক্তরাজ্যে মুদ্রাস্ফীতিকে ১০ শতাংশের উপরে ঠেলে দিয়েছে। বৃহস্পতিবার ব্যাংক অব ইংল্যান্ড সুদের হার বাড়াবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
news24bd.tv/মামুন