ওয়াশিংটনে আওয়ামী লীগের শোক দিবস পালন

ওয়াশিংটনে আওয়ামীলীগের শোক দিবস পালন

ওয়াশিংটনে আওয়ামী লীগের শোক দিবস পালন

শিব্বীর আহম্মেদ, ওয়াশিংটন

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৩তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে মেট্রো ওয়াশিংটন আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক শোক সভা, দোয়া ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১৮ আগষ্ট শনিবার ভার্জিনিয়ার ফলসচার্চ শহরের কাবাব কিং রেষ্টুরেন্টে ওই সভা অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পন করা হয়। পরে ১৫ আগষ্ট ও ২১শে আগষ্ট নিহতদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।

এরপর ১৫ আগষ্ট ও ২১শে আগষ্ট নিহতদের আত্মার মাগফেরাত কামনায় বিশেষ দোয়া পরিচালনা করেন দলের সহ সভাপতি বদরুল আলম। শোক দিবসের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জুয়েল বড়ুয়া এবং সভা পরিচালনা করেন যুগ্ম সম্পাদক হারুনুর রশীদ। সভা মঞ্চে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সিনিয়র সহ সভাপতি শিব্বীর আহমেদ এবং বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সহ সভাপতি আনোয়ার হোসাইন, মজিবুর রহমান ও বদরুল আলম।

এসময় বক্তব্য রাখেন দলের সভাপতি ও অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি আনোয়ার হোসাইন, মজিবুর রহমান, বাঙালি ফাউন্ডেশনের সভাপতি জীবক বড়ুয়া সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

স্বাধীনতা বিরোধীদের বিরুদ্ধে জাতীয় জাগরণ সৃষ্টি হয়েছে উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, ‘বাঙালি একাত্তরে একতাবদ্ধ ছিল, আজও আছে। বঙ্গবন্ধুর বাংলায় স্বাধীনতা বিরোধীদের স্থান হবে না। ’

আলোচনা সভায় বক্তারা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের খুনিদের দেশে এনে সাজা কার্যকর করার দাবি জানান। বক্তারা বলেন, বঙ্গবন্ধুর সপরিবারে হত্যাকান্ডের মূল পরিকল্পনাকারীদেরও বিচার করতে হবে। ৭৫-এর ১৫ আগস্ট ব্যক্তি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করা সম্ভব হলেও তাঁর আদর্শকে হত্যা করা যায়নি। বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে হত্যা করা যাবে না। মৃত বঙ্গবন্ধু জীবিত বঙ্গবন্ধুর চেয়ে শক্তিশালী।

আলোচনা সভায় বক্তারা আরও বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর নীতি ও আদর্শ বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশে আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তাঁর স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারী স্বাধীনতাবিরোধীরা এখনও দেশ-বিদেশে বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। কিন্তু তারা যতই ষড়যন্ত্র করুক, বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে কিছুতেই ব্যাহত করতে পারবে না। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা সম্ভব হলেই তাঁর রক্তের ঋণ কিছুটা শোধ হবে বলে বক্তারা উল্লেখ করেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্ততৃতায় সংগঠনের সিনিয়র সহ সভাপতি শিব্বীর বলেন, যারা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে অস্বীকার করেন, তারা বাংলাদেশকেই অস্বীকার করেন। বঙ্গবন্ধু শুধু জাতির পিতা নন, তিনি একজন বহুমাত্রিক নেতা ছিলেন। এটাই বাস্তবতা।

তিনি আরও বলেন, ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে ৩০ লাখ মানুষ জীবন দিয়েছেন। তাঁর কথায় দেশের অগণিত মানুষ মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। জয়বাংলা শ্লোগানে সবাইকে এক করে দেশের মানুষকে মুক্তি সংগ্রামে জাগ্রত করেছেন। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ হচ্ছে তাঁর স্বাধীনতার ঘোষণা। স্বাধীনতা পরবর্তী হাজারও সমস্যার মাঝেও তিনি দেশকে সাজিয়েছেন। এসব বঙ্গবন্ধুর দ্বারাই সম্ভব হয়েছিল। এখন দেশের আর্থিক উন্নয়ন হচ্ছে। কৃষিতে বিপ্লব ঘটেছে। সারের পিছনে মানুষ ঘুরে না, সার নিতে গিয়ে মানুষ আর মরে না। সবশেষে প্রধান অতিথি শিব্বীর আহমেদ জননেত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে তার লেখা কবিতা ”ক্ষনজন্মা শেখ হাসিনা" পাঠ করে তার বক্তব্য শেষ করেন।

সবশেষে দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জুয়েল বড়ুয়া তার সভাপতির বলেন, জেনারেল জিয়া, খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমান একাত্তর এবং বঙ্গবন্ধুর খুনিদের আশ্রয় প্রশ্রয়দেয়াসহ একুশে আগস্ট প্রেনেড হামলায় শেখ হাসিনাকে হত্যা চেষ্টা ,জঙ্গি সন্ত্রাস এবং মানুষ পোড়ানোর ঘটনার সাথে সরাসরি জড়িত।

তিনি বলেন, এইসব দুষ্কর্মের সাথে তারা জড়িত কেউ এই বিষয়টি অস্বীকার করতে পারবে না। এসব অস্বীকার করার কোন উপায় নেই কিন্তু তারপরেও যারা অস্বীকার করে কার্যত তারা তাদের ও বিএনপির দুষ্কর্মকে গণতন্ত্রের ধূয়া তুলে আড়াল করতে চান। এদের বিচার করে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি প্রদান করতে হবে।

পরিশেষে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জুয়েল বড়ুয়া দলকে শক্তিশালী করার জন্য মেট্রো ওয়াশিংটন আওয়ামী লীগের সবাইকে সংবিধানের আলোকে ঐক্যবদ্ধ হবার আহবান জানান। পরে তিনি অনুষ্ঠানে আগত অতিথিদেরকে রাতের খাবারে আমন্ত্রন জানিয়ে সভার সমাপ্তি ঘোষনা করেন।


(নিউজ টোয়েন্টিফোর/কামরুল)

সম্পর্কিত খবর