দুই বলে ‘শিরোপা হারায়’ পাকিস্তান

দুই বলে ‘শিরোপা হারায়’ পাকিস্তান

অনলাইন ডেস্ক

১৯৯২ সাল, মেলবোর্ন। ইংল্যান্ডকে উড়িয়ে বিশ্বকাপ ট্রফি উঁচিয়ে ধরে ইমরান খানের পাকিস্তান। ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি দেখতে আজ আবারও মেলবোর্নে হাজির পাকিস্তানের ক্রিকেট সমর্থকরা। না এবার আর হয়নি।

বারর আজমের দলের বিপক্ষে পূর্বপুরুষদের হারের প্রতিশোধ নিয়েছে জস বাটলারের ইংল্যান্ড। পাকিস্তানের ১৩৮ রানের জবাবে ইংল্যান্ড ম্যাচ জিতেছে ৫ উইকেট ৬ ও বল হাতে রেখেই।

কিন্তু এই ফাইনাল ম্যাচের ফয়সালা হয়েছে মূলত দুটো বলে। দুটো বলেই খেলা বেরিয়ে যায় পাকিস্তানের হাত থেকে।

আর ম্যাচ জিতে যায় ইংল্যান্ড। বিশ্বকাপের ফাইনালে সেই চোটের ধাক্কা পাকিস্তান দলে। চোটের কারণেই বিশ্বকাপ জেতার স্বপ্ন অধরা থেকে গেল বাবর আজমের। তবে লো স্কোরিং টার্গেট নিয়ে ম্যাচ ১৯ ওভার পর্যন্ত টেনে আনার মূল কৃতিত্ব দিতে হবে পাকিস্তানের বোলারদের।  

কিন্তু কোন দুটো বল? ইংল্যান্ডের ইনিংসে ১৬তম ওভারের শেষ দুটো বল যা করার কথা ছিল শাহিন শাহ আফ্রিদির। কিন্তু করতে হলো ইফতিখার আহমেদকে। শাহিন থাকলে হয়তো খেলার ফল অন্য রকম হতো। কিন্তু হলো না। কারণ চোটের জন্য মাঠেই থাকতে পারলেন না শাহিন। চলে গেলেন মাঠ ছেড়ে। সেটাই কাল হলো পাকিস্তানের।

শেষ পাঁচ ওভারে জেতার জন্য ৪১ রান করতে হতো ইংল্যান্ডকে। ক্রিজে ছিলেন বেন স্টোকস ও মঈন আলী। খুব একটা ছন্দে ছিলেন না তারা। মঈন সবে নেমেছিলেন। স্টোকস ৩৫ বলে ২৮ রান করে খেলছিলেন। ১৬তম ওভার করতে আসেন শাহিন। কিন্তু করতে পারলেন না তিনি।  

তিন ওভার আগে হ্যারি ব্রুকের ক্যাচ ধরতে গিয়ে পড়ে যান তিনি। তার পরে দেখা যায় খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটছেন। ফিজিও কিছুক্ষণ মাঠেই তার চিকিৎসা করেন। তার পরে মাঠের বাইরে নিয়ে যান। দেখে বোঝা যাচ্ছিল পুরনো চোটের জায়গায় আবার লেগেছে। শাহিন বল করতে পারবেন কি না তা নিয়ে সংশয় দেখা যায়। কিন্তু ১৬তম ওভারের ঠিক আগেই মাঠে ফেরেন শাহিন। হাঁফ ছেড়ে বাঁচেন পাক সমর্থকরা। কিন্তু প্রথম বল করতে গিয়েই দেখা যায় ভালো করে দৌড়তে পারছেন না তিনি। চেষ্টা করেন, কিন্তু পারেননি। হতাশ হয়ে মাঠ ছাড়েন শাহিন।

এক বল করার পরে শাহিন আর বল করতে না পারায় ইফতিখারকে ওভার শেষ করতে বলেন বাবর। প্রথম তিনটি বল ভালো করলেও পঞ্চম বলে তাকে চার মারেন স্টোকস। পরের বল লং অফের উপর দিয়ে বাউন্ডারির বাইরে ফেলে দেন তিনি। ওই ১০ রান ইংল্যান্ডকে খেলায় ফেরায়। তার পরে লক্ষ্য হয় ২৪ বলে ২৮ রান। সেটা সহজেই তুলে নেন স্টোকসরা। কিন্তু ওই ওভারের শেষ দুই বলেই ম্যাচ পাকিস্তানের হাত থেকে বেরিয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত হেরে মাঠ ছাড়তে হয় বাবরদের।

উল্লেখ্য, অল্প পুঁজি নিয়েও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচের মাঝামাঝি সময়ে ফাইট করেছিল পাকিস্তান। কিন্তু শেষদিকে পুরো ১ ওভার হাতে রেখে হেসেখেলেই ৫ উইকেটে জয় পায় বেন স্টোকসরা। এনিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতল ইংলিশরা, আগেরবার জিতেছিল ২০১০ সালে।

ইংলিশদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে পাকিস্তানের ইনিংসে শাদাব খান ছাড়া কেউই টি-টোয়েন্টিসুলভ খেলতে পারেননি। ফলে ৮ উইকেট হারিয়ে মাত্র ১৩৭ রান করে বাবর আজম বাহিনী। জবাবে ইংল্যান্ডও একটা পর্যায়ে ভীষণ চাপে পড়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বারর আজমের দলের বিপক্ষে পূর্বপুরুষদের হারের প্রতিশোধ নিয়েছে জস বাটলারের ইংল্যান্ড।

news24bd.tv/আলী