ঢাকায় পৌঁছেছে দেশের প্রথম ড্রিমলাইনার ‘আকাশবীণা’

ঢাকায় পৌঁছেছে দেশের প্রথম ড্রিমলাইনার ‘আকাশবীণা’। ছবি-সংগৃহীত

ঢাকায় পৌঁছেছে দেশের প্রথম ড্রিমলাইনার ‘আকাশবীণা’

নিজস্ব প্রতিবেদক

যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটল পেনফিল্ড থেকে একটানা সাড়ে ১৪ ঘণ্টা উড়ে ঢাকায় এসে পৌঁছেছে দেশের প্রথম ড্রিমলাইনার 'আকাশবীণা'। রোববার স্থানীয় সময় বিকাল ৫টা ১৯ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে ২৭১ আসনের উড়োজাহাজটি।

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রানওয়ে স্পর্শ করার পর ড্রিমলাইনারকে দুটি গাড়ি থেকে রঙিন পানি ছিটিয়ে ওয়াটার ক্যানন স্যালুটের মাধ্যমে স্বাগত জানানো হয়। ‘আকাশবীণা’র মধ্য দিয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বহরে উড়োজাহাজের সংখ্যা দাঁড়ালো ১৫টি।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও এ এম মোসাদ্দিক আহমেদ, পরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মদ মোমিনুল ইসলাম, পরিচালক (গ্রাহক সেবা) আলী আহসান বাবু, পরিচালক (অর্থ) বিনীত সুধ, পরিচালক (পরিকল্পনা) এয়ার কমোডর মোহাম্মদ মাহবুব জাহান খান (অব.), পরিচালক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ম্যাটেরিয়াল ম্যানেজমেন্ট গ্রুপ ক্যাপ্টেন কেএইচ সাজ্জাদুর রহিম (অব.), পরিচালক বিপণন ও বিক্রয় আশরাফুল আলম, মহা ব্যবস্থাপক (কান্টমার সার্ভিস) আতিক সোবহান, মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) শাকিল মেরাজ, নুরুল ইসলাম হাওলাদারসহ বিমান ও সিভিল এভিয়েশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।

বিজি-২৮০১ ফ্লাইটটি পরিচালনা করে বাংলাদেশে নিয়ে আসেন বোয়িংয়ের ক্যাপ্টেন রিচার্ড এম ডেনটন, ক্যাপ্টেন চার্লি ক্রিস্টেনসন, বিমানের ক্যাপ্টেন ফজল ও ফার্স্ট অফিসার আনিতা রহমান ফ্লাইটটি পরিচালনা করেন।

এর আগে সিয়াটলে বোয়িং ফ্যাক্টরি থেকে ড্রিমলাইনার বিমানটি গ্রহণ করেন বিমান পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান এয়ার মার্শাল (অব.) ইনামুল বারীর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল।

আগামী ১ সেপ্টেম্বর বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি সংবলিত সম্পূর্ণ নতুন বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার বিমানের প্রথম ফ্লাইট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করবেন বলে জানিয়েছেন এয়ার মার্শাল ইনামুল বারী (অব.)।

তার পছন্দেই এর নামকরণ হয়েছে ‘আকাশবীণা’।

ড্রিমলাইনার দিয়ে প্রাথমিকভাবে ঢাকা-সিঙ্গাপুর ও ঢাকা-কুয়ালালামপুর রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে বলে বিমান সূত্রে জানা গেছে। আগামী ১ সেপ্টেম্বর রাতে ঢাকা থেকে মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুর ফ্লাইটের মাধ্যমে বাণিজ্যিকভাবে যাত্রা শুরু করবে উড়োজাহাজটি। ট্যাক্স ও চার্জ বাদে ঢাকা-সিঙ্গাপুর-ঢাকা রুটে ইকোনমি ক্লাসের ভাড়া ২০০ মার্কিন ডলার এবং ঢাকা-কুয়ালালামপুর-ঢাকা রুটে ইকোনমি ক্লাসের ভাড়া পড়বে ২৯০ মার্কিন ডলার।

আকাশবীণায় আসন সংখ্যা ২৭১টি। এর মধ্যে বিজনেস ক্লাস ২৪টি আর ২৪৭টি ইকোনমি ক্লাস। বিজনেস ক্লাসের আসনগুলো বানিয়েছে অ্যাসটেলা। আর ইকোনমি ক্লাসের আসনগুলো হেইকোর বানানো। বিজনেস ক্লাসে ২৪টি আসন ১৮০ ডিগ্রি পর্যন্ত সম্পূর্ণ ফ্ল্যাটবেড হওয়ায় যাত্রীরা আরমদায়কভাবে ভ্রমণ করতে পারবেন। দু’পাশের প্রত্যেক আসনের পাশে রয়েছে বড় আকারের জানালা। জানালার বোতাম টিপে আলো নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। দীর্ঘ সময় ভ্রমণেও যাত্রীরা যেন ক্লান্তি অনুভব না করেন সেজন্য এর ভেতরে এয়ার কম্প্রেসার সিস্টেম অন্যান্য বিমানের তুলনায় উন্নত।

ড্রিমলাইনারে ইন-ফ্লাইট এন্টারটেইনমেন্ট (আইএফই) সেবার জন্য প্যানাসনিক এভিওনিকস কর্পোরেশনের সঙ্গে চুক্তি করেছে বিমান। প্রতিটি আসনের সামনে প্যানাসনিকের এলইডি এস-মনিটর রয়েছে। মনিটিরে বিবিসি, সিএনএনসহ ৯টি টিভি চ্যানেল দেখা যাবে। একইসঙ্গে থাকবে ১০০টির বেশি ক্ল্যাসিক থেকে ব্লকবাস্টার চলচ্চিত্র। রয়েছে বিমানের জন্য বিশেষভাবে নির্মিত ভিডিও গেমস।

ড্রিমলাইনার ফ্লাইট উড্ডয়নের পরে বিজনেস ক্লাসে কোনও আসন ফাঁকা থাকলে ইকোনমি ক্লাসের যাত্রীরা সেটিতে যাওয়ার সুযোগ পাবেন। তবে এজন্য উড়ন্ত অবস্থায় একটি নিলামে অংশ নিতে হবে তাদের। নিলামে সর্বোচ্চ দরদাতা টাকা পরিশোধ করে ইকোনমি ক্লাস থেকে বিজনেস ক্লাসের আসনে স্থানান্তরের সুবিধা পেয়ে যাবেন।

সম্পর্কিত খবর