সিলিকন ভ্যালিতে ছাঁটাই আতঙ্ক, এ বুঝি চাকরিটা গেল! 

সংগৃহীত ছবি

সিলিকন ভ্যালিতে ছাঁটাই আতঙ্ক, এ বুঝি চাকরিটা গেল! 

অনলাইন ডেস্ক

গত কয়েক সপ্তাহে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় তথ্য প্রযুক্তি সংস্থাগুলো হাজার হাজার কর্মী ছাঁটাই করছে অথবা নিয়োগ বন্ধ করে দিয়েছে। মেটা কিংবা টুইটার; সব প্রযুক্তি সংস্থারই একই প্রতিচ্ছবি।  কিন্তু কেন সংস্থাগুলো এভাবে ছাঁটাই এবং নিয়োগ বন্ধের রাস্তায় হাঁটছে? মূলত, কোভিড মহামারি এবং লকডাউনের পর তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলিতে নিয়োগের জোয়ার এসেছিল। কারণ সেই সময় চাহিদার ব্যাপক বৃদ্ধি ঘটেছিল।

তাহলে এখন কী ঘটল? 

বিশ্লেষকদের মতে, আগামী দিনে বড় সমস্যা আসতে চলেছে বলে আশঙ্কা করছে তথ্য প্রযুক্তি সংস্থাগুলো। আর তাই ধীরে ধীরে তারা খরচ কমানোর লক্ষ্যে ব্যবস্থা নিচ্ছে। কোভিড মহামারি এবং ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের ফলে বিশ্ব জুড়ে এখন উচ্চ মুদ্রাস্ফীতির লক্ষ করা যাচ্ছে। বৈশ্বিক অর্থনীতি ক্রমে মন্দার দিকে এগিয়ে চলেছে বলে মনে করা হচ্ছে।

গত দুই বছরের মধ্যে, বিশ্বজুড়ে তথ্য প্রযুক্তি সংস্থাগুলোর আয় এখন তার সবচেয়ে ধীর গতিতে বাড়ছে। সেই সঙ্গে কোভিড পরবর্তী সময়ে তথ্য় প্রযুক্তি সংস্থাগুলিতে মাত্রাতিরিক্ত হারে নিয়োগ করা হয়েছিল বলে মনে করা হচ্ছে, যা সংস্থাগুলি এখন সংশোধন করছে।

সম্ভাব্য মন্দা, ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতি, ক্রমবর্ধমান সুদের হার, বিজ্ঞাপনে ব্যয়-সহ এই অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জগুলোই তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলোকে খরচ কমানোর দিকে ঠেলে দিয়েছে। আর তারই রেশ পড়ছে কর্মীদের উপর।

টুইটার
বিশ্বের ধনীতম ব্যক্তি ইলন মাস্ক টুইটারের দায়িত্ব নিয়েই প্রায় ৫০ শতাংশ কর্মীকে বরখাস্ত করেছেন। টেসলা সিইও টুইটার অধিগ্রহণ করার পর ছাঁটাই প্রত্যাশিতই ছিল। কিন্তু যেভাবে গণহারে ছাঁটাই হয়েছে, তা অনেকেই ভাবতে পারেননি।

মেটা
ফেসবুকের মূল সংস্থা মেটা সম্প্রতি তার মোট কর্মশক্তির ১৩ শতাংশ বা ১১ হাজারেরও বেশি কর্মী ছাঁটাই করেছে। সংস্থার ডিজিটাল বিজ্ঞাপনের থেকে আয় বড় অঙ্কে কমে যাওয়ার পরই এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। মেটার ১৮ বছরের ইতিহাসে এরকম গণ ছাঁটাই আগে দেখা যায়নি।

গুগল
গুগলে এখনও কোনো ছাঁটাই হয়নি। তবে, গুগলের মূল সংস্থা অ্যালফাবেট-এর চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার সুন্দর পিচাই জানিয়েছেন, ২০২২ সালের চতুর্থ ত্রৈমাসিকে এবং পুরো ২০২৩ সাল জুড়ে নিয়োগের হার কমানোর পরিকল্পনা করছে তার সংস্থা।

স্ন্যাপ
স্ন্যাপচ্যাটের মূল সংস্থা, স্ন্যাপই প্রথম ছাঁটাইয়ের কথা ঘোষণা করেছিল। গত আগস্টে সংস্থাটি কর্মী সংখ্যা প্রায় ২০ শতাংশ কমিয়েছে। ছাঁটাইয়ের আগে স্ন্যাপের মোট কর্মী সংখ্যা ছিল প্রায় ৬ হাজার ৪০০ জন।

অ্যামাজন
চলতি সপ্তাহের শুরুতে অ্যামাজন সংস্থা প্রায় ১০হাজার কর্মী ছাঁটাই করেছে। এর দুই সপ্তাহ আগেই, ক্লাউড কম্পিউটিং বিভাগ-সহ বিভিন্ন বিভাগে পরবর্তী কয়েক মাসের জন্য কর্পোরেট নিয়োগ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। বর্তমানে বিশ্বব্যাপী অ্যামাজনের প্রায় ১৫ লাখ কর্মী রয়েছে।

অ্যাপল
অ্যাপলও এখনও পর্যন্ত কোনো ছাঁটাইয়ের কথা ঘোষণা করেনি। তবে তারা ব্যাপক হারে নিয়োগ কমিয়ে দিয়েছে।

ইন্টেল
ব্লুমবার্গের রিপোর্ট অনুসারে ইন্টেল কর্পোরেশনও হাজার হাজার কর্মীকে ছাঁটাইয়ের পরিকল্পনা করেছে। সেলস এবং মার্কেটিং-সহ ইন্টেলের বেশ কিছু বিভাগ থেকে প্রায় ২০ শতাংশ কর্মীকে ছাঁটাই করা হতে পারে।

news24bd.tv/আলী