রুগ্ন পশু দিয়ে কোরবানি, যা বলে ইসলাম

প্রতীকী ছবি

রুগ্ন পশু দিয়ে কোরবানি, যা বলে ইসলাম

ধর্ম ডেস্ক

সৃষ্টিকর্তার সন্তুষ্টি বিধানে কোরবানি করেন ধর্মপ্রান মুসলমানরা। সেই কোরবানির পশু হতে হবে সুস্থ, সুন্দর ও স্বাভাবিক। যে পশু রোগাক্রান্ত, ত্রুটিযুক্ত, কোরবানির কাছাকাছি সময়েই যেটির মারা যাবার সম্ভাবনা সেটি দিয়ে কোরবানি করা জায়েয নয়। এ ব্যাপারে ইসলামে সুনির্দিষ্ট বিধান রয়েছে।

হযরত বারা ইবনে আযেব (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আদেশ করেছেন, বেশি খোঁড়া, অন্ধ, অধিক রুগ্ণ, অতিশয় ক্ষীণ দুর্বল পশু দ্বারা কোরবানি করা জায়েয নয়। (জামে তিরমিযী, হা. ১৪৯৭)

হযরত আলী (রা.) বলেন, আমাদের রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আদেশ করেছেন, আমরা যেন কোরবানির পশুর চোখ ও কান ভালো করে দেখে নিই এবং কান কাটা, কান ছেঁড়া বা কানে গোলাকার ছিদ্র করা পশু দ্বারা কোরবানি না করি। (সুনানে আবী দাউদ, হাদীস : ২৮০৪)

মাসআলা : অতিশয় ক্ষীণ দুর্বল পশু, যা জবাইয়ের স্থান পর্যন্ত হেঁটে যেতে পারে না তা দ্বারা কোরবানি করা সহীহ নয়। (বাদায়েউস সানায়ে ৫/৭৫, ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/২৯৭)

মাসআলা : যে পশুর দুটি চোখই অন্ধ বা এক চোখ পুরো নষ্ট সে পশু দ্বারা কোরবানি করা সহীহ নয়।

(কাযীখান ৩/৩৫২, বাদায়েউস সানায়ে ৫/৭৫)

মাসআলা : যে পশুর একটি দাঁতও নেই বা এ পরিমাণ দাঁত পড়ে গেছে যে খাদ্য চিবোতে পারে না এমন পশু দ্বারা কোরবানি করা সহীহ নয়। বাদায়েউস সানায়ে ৫/৭৫, ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/২৯৮)

মাসআলা : যে পশুর শিং একেবারে গোড়া থেকে ভেঙে গেছে, যে কারণে মস্তিষ্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সে পশু দ্বারা কোরবানি জায়েয নয়। পক্ষান্তরে যে
পশুর অর্ধেক শিং বা তার চেয়ে কম অংশ ফেটে বা ভেঙে গেছে বা সৃষ্টিগতভাবে শিং একেবারে উঠেইনি সে পশু দ্বারা কোরবানি করা জায়েয। (জামে তিরমিযী ১/২৭৬, সুনানে আবী দাউদ, হাঃ ৩৮৮, রদ্দুল মুহতার ৬/৩২৪)

মাসআলা : দুম্বা ব্যতীত অন্যান্য পশুর ক্ষেত্রে লেজ না থাকলে বা কোনো কান অর্ধেক বা তারও বেশি কাটা হলে সে পশুর কোরবানি জায়েয নয়। আর যদি অর্ধেকের বেশি থাকে তাহলে তার কোরবানি জায়েয। তবে জন্মগতভাবেই যদি কান ছোট হয় তাহলে অসুবিধা নেই। (জামে তিরমিযী ১/২৭৫, কাযীখান ৩/৩৫২, রদ্দুল মুহতার ৫/২০৬)

মাসআলা : কোরবানির নিয়্যাতে ভালো পশু কেনার পর যদি তাতে এমন কোনো দোষ দেখা দেয় যে কারণে কোরবানি জায়েয হয় না তাহলে ওই পশুর কোরবানি সহীহ হবে না। এর স্থলে আরেকটি পশু কোরবানি করতে হবে। তবে ক্রেতা গরিব হলে ত্রুটিযুক্ত পশু দ্বারাই কোরবানি করতে পারবে। (খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৩১৯, বাদায়েউস সানায়ে ৫/৭৬, রদ্দুল মুহতার ৬/৩২৫)

মাসআলা : জবাইয়ের সময় ধস্তাধস্তির কারণে ভালো পশু যদি এমন কোনো ত্রুটিযুক্ত হয়ে যায়, যার দরুন কোরবানি সহীহ হয় না তবুও ধনী-গরিব সকলেই তা দ্বারা কোরবানি করতে পারবে। (বাদায়েউস সানায়ে ৫/৭৬)


সূত্র: মাসিক আল-আবরার, ফকীহুল মিল্লাত ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ।

সম্পর্কিত খবর