ইউক্রেনের বিদ্যুৎ স্থাপনায় ফের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। এতে করে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটির বিশাল এলাকা অন্ধকারছন্ন হয়ে পড়ছে। এই হামলার প্রভাব পড়েছে ইউক্রেনের পার্শ্ববর্তী দেশ মলদোভায়ও। সেখানকার কিছু এলাকায়ও বিদ্যুৎ বিভ্রাট দেখা গেছে।
বুধবার (২৩ নভেম্বর) ভার্চুয়ালিভাবে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেন জেলেনস্কি। বৈঠকে তিনি বলেন, ‘যখন তাপমাত্রা শূন্যের নিচে চলে আসবে, ঠিক তখনই কয়েক লাখ ইউক্রেনীয় বিদ্যুৎ ও পানি ছাড়া রয়েছে।
বুধবার নতুন করে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে হামলা চালিয়েছে রুশ বাহিনী। কিয়েভ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যে এলকার পানির সরবরাহ লাইন নষ্ট হয়ে গেছে সেই এলাকায় একটি দোতলা ভবনে রকেট হামলা চালানো হয়েছে। এতে ৬ বেসামরিক ও ৯ জন আহত হয়েছেন।
বুধবার কিয়েভের মেয়র ভিটালি ক্লিটসকো বলেন, ‘হামলায় রাজধানীর একটি জ্বালানি অবকাঠামো আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে। এ ছাড়া শহরের বিভিন্ন জেলায় আরও বেশ কয়েকটি বিস্ফোরণ হয়েছে। ’
আল-জাজিরা বলছে, ইউক্রেনের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে হামলার খবর পাওয়া গেছে। নতুন হামলায় উত্তরের শহর খারকিভ, পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর লভিভ, উত্তর ইউক্রেনের চেরনিহিভ অঞ্চল এবং দক্ষিণের ওডেসা অঞ্চলে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের খবর পাওয়া গেছে। শীতের আগে ইউক্রেনের প্রয়োজনীয় পরিষেবাগুলোকে দুর্বল করার জন্য মস্কো এ হামলা চালাচ্ছে।
জাতিসংঘে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের দূত লিন্ডা থমাস-গ্রিনফিল্ড বলেন, ‘রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন শীতকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে। ইউক্রেনের জনগণকে অপরিসীম দুর্ভোগে ফেলতে তারা এমনটি করছেন। রুশ প্রেসিডেন্ট ইউক্রেনকে ফ্রোজেন করতে চাইছে। ’
অভিযোগের প্রতিক্রিয়ায় জাতিসংঘে নিযুক্ত রুশ দূত ভেসিলি নেভেনজিয়া বলেন, ‘জেলেনস্কির ভার্চুয়ালি উপস্থিত হওয়া কাউন্সিলের নিয়মের বিরুদ্ধে। ইউক্রেন ও তার পশ্চিমা মিত্ররা আমাদের বেপরোয়া হুমকি দিয়ে আসছে। ’
নতুন এসব হামলার আগে রুশ প্রেসিডেন্ট জানিয়েছিলেন, রুশ হামলায় তাদের অর্ধেক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র বিকল হয়ে পড়েছে।
ইউক্রেনীয় কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে আল-জাজিরা বলছে, কনকনে ঠাণ্ডা ও অন্ধকারের জেরে ইউক্রেনের জনগণের মতের পরিবর্তন হবে, এমনটা আশা করছেন পুতিন। তবে এর বিপরীত হচ্ছে। ইউক্রেনের সংকল্প আরও শক্তিশালী হচ্ছে।
মলদোভায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট
প্রতিবেশী দেশ ইউক্রেনের বিদ্যুৎ অবকাঠামোতে রুশ হামলার কারণে মলদোভাতেও বিদ্যুৎ বিভ্রাট দেখা দিয়েছে। গোটা দেশটির অর্ধেকই ব্ল্যাকআউট হয়ে আছে। মলদোভার অবকাঠামো মন্ত্রী আন্দ্রেই স্পিনু বলেছেন, ‘সারা দেশে ব্যাপক বিদ্যুৎ বিভ্রাট রয়েছে। ’
আল-জাজিরা বলছে, মলদোভার বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ইউক্রেনের সঙ্গে সংযুক্ত। সেখানে হামলা হওয়ায় বিদ্যুৎ পাচ্ছে ক্ষুদ্র দেশটি। এর আগেও একই সমস্যার মুখে পড়েছিল মলদোভা। ওই সময় দেশটির ২৬ লাখ লোক বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল।
মলদোভার পশ্চিপন্থী প্রেসিডেন্ট মাইয়া সান্দু বলেন, ‘রাশিয়া আমাদের অন্ধকারে রেখে দিয়েছে। আমাদের জাতিকে মুক্ত বিশ্বের দিকে থাকতে হবে। ’
news24bd.tv/মামুন