দুর্নীতি একটি ক্যানসার, রাষ্ট্রের ভিত্তিকে দুর্বল করে দেয়: প্রধান বিচারপতি 

সংগৃহীত ছবি

দুর্নীতি একটি ক্যানসার, রাষ্ট্রের ভিত্তিকে দুর্বল করে দেয়: প্রধান বিচারপতি 

অনলাইন ডেস্ক

প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেছেন, দুর্নীতি এমন একটি ক্যানসার যা গণতন্ত্রকে নষ্ট করে, দেশকে ধ্বংসের দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়। রাষ্ট্রের ভিত্তিকে দুর্বল করে দেয়, জনগণকে বিক্ষুব্ধ করে, জন্ম দেয় ক্রোধের। আমাদের দুর্নীতি নির্মূল করতে হবে। রোববার (২৭ নভেম্বর) সুপ্রিম কোর্ট বার মিলনায়তনে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

 

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি এই আলোচনা সভার আয়োজন করে। বারের সভাপতি মোমতাজ উদ্দিন ফকির এতে সভাপতিত্ব করেন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন বারের সম্পাদক আব্দুন নূর দুলাল।  

প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘রাষ্ট্রের প্রতিটি অঙ্গের প্রতি জনগণের আস্থা দৃঢ় করতে সবাইকে সামান্যতম দুর্নীতি থেকেও দূরে থাকতে হবে।

সামান্যতম দুর্নীতিও আস্থার জায়গা ধ্বংস করে দেয়। আসুন, আমরা বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ পতাকাবাহীদের জন্য একটি দুর্নীতিমুক্ত রাষ্ট্রযন্ত্র রেখে যাই, যাতে তারা আরও উজ্জ্বল আলোয় প্রজ্বলিত হয়। ’ 

প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘অগণতান্ত্রিক সামরিক শাসন আমলে এ দেশে বিচার বিভাগ নিয়ে অশুভ ও অবাস্তব অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছিল। এরই অংশ হিসেবে অসাংবিধানিক উপায়ে হাইকোর্ট বিভাগকে খণ্ড খণ্ড করে দেশের বিভিন্ন জেলায় বেঞ্চ স্থাপন করা হয়েছিল। গণতন্ত্র নস্যাতের সেই দুর্যোগপূর্ণ সময়ে আইনজীবীরা তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন। বাংলাদেশের বিচার বিভাগের ইতিহাসে আশির দশকে আইনজীবীদের সেই আন্দোলন এক গৌরবময় অধ্যায়। আইনজীবীদের সেই আন্দোলন গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের বৃহত্তর আন্দোলনকে বেগবান করতে সক্ষম হয়েছিল। ’ 

একটি শক্তিশালী বিচার বিভাগ যা বাংলার মানুষের আজন্মলালিত স্বপ্ন উল্লেখ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘রাষ্ট্রের একটি অঙ্গ হিসেবে কাজ করা সত্ত্বেও বিচার বিভাগ-সংবিধানের রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করে থাকে। আর বাংলাদেশের আইনজীবী সমাজ সেই বিচার বিভাগেরই অবিচ্ছেদ্য অংশ। বিচার বিভাগকে আইনজীবীগণ এর আগে যেরুপ সমর্থন ও সহযোগিতা করেছে, তা সব সময় অব্যাহত থাকবে বলে আমি দৃঢ় আশবাদ ব্যক্ত করছি। ’ 

প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় দৃঢ় প্রত্যয়, নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গি ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ চর্চার সংগ্রামের জন্য যুগে যুগেই আইনজীবীগণ আমাদের সমাজে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছেন। এ জন্যই তারা সমাজের চোখে শ্রদ্ধেয় ও বরণীয়। ’ আইনজীবী সমাজের অর্জিত এই সুনামে যেন কোন প্রকার কালিমা লিপ্ত না হয়, সে বিষয়ে সকলকে সজাগ দৃষ্টি রাখার আহ্বান জানান প্রধান বিচারপতি।  

অনুষ্ঠানে আপিল বিভাগের বিচারপতি মো. নুরুজ্জামান, বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। এছাড়া অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও সিনিয়র আইনজীবী ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন এতে বক্তব্য দেন। উপস্থিত ছিলেন উভয় বিভাগের বেশ কয়েকজন বিচারপতি।  

তবে দেখা যায়নি অন্যতম সংবিধান প্রণেতা ড. কামাল হোসেন ও ব্যারিস্টার এম আমীর উল ইসলামকে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বারের সভাপতি মোমতাজ উদ্দিন ফকির আজকের পত্রিকাকে বলেন, বারের সব সদস্যকে সাধারণ দাওয়াত দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তাদের দুজনকে বিশেষভাবে দাওয়াত দেওয়া হয়নি।  

news24bd.tv/ইস্রাফিল