কারিগরি শিক্ষা আধুনিক এ সময়ে এসেও সামাজিকভাবে অবহেলিত আর গরিবদের শিক্ষা হিসেবেই পরিচিত। সরকারি হিসাবেই ভোকেশনাল শিক্ষা নিতে এসে এখনো প্রতি বছর ঝরে পড়ছেন ৩০ শতাংশ শিক্ষার্থী। বৈষম্য আছে নারীর অংশগ্রহণেও। বিশ্লেষকরা বলছেন, নজরদারি, প্রচার-প্রচারণা ও গুণগত মান নিশ্চিত করতে না পারায় এখনো কারিগরি শিক্ষার প্রতি মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টায়নি।
এ বিষয়ে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, কারিগরি শিক্ষা পদ্ধতির মান উন্নয়নে নতুন কর্মপরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে সরকার।
কল্যাণপুরের একটি পোড়া বস্তির ঘুপচিতে থাকেন মিতু আক্তার। ইচ্ছা ছিল টেইলরিং শিখে হবেন স্বনির্ভর। তবে অর্থের অভাবে তা পূরণ হয়নি।
মিতু আক্তার।
একই বস্তির তরুণ ফরহাদ বছরখানেক আগে ৬ হাজার টাকা দিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন ৩ মাসের টেইলরিং কোর্সে। শিক্ষা পদ্ধতি পছন্দ না হওয়ায় ১ সপ্তাহ ক্লাস করেই বিদায় নিয়েছেন বলে জানান তরুণ।
দেশের ঐতিহ্যবাহী কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র বাংলাদেশ-কোরিয়া টেকনিক্যাল সেন্টার থেকে ২ বছরের এসএসসি ভোকেশনাল শেষ করেছেন স্বপ্না। কোর্স নিয়ে সন্তুষ্টি থাকলেও পরের ধাপে ৪ বছরের ডিপ্লোমা কোর্সে ভর্তি হতে সায় মেলেনি পরিবার থেকে।
বাংলাদেশ শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরো-ব্যানবেইস এর সর্বশেষ হিসাব বলছে, দেশে সরকারি ও বেসরকারি মিলে কারিগরি ও ভোকেশনাল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সাড়ে ৭ হাজারের কিছু বেশি। তবে এখনো কারিগরিতে ঝরে পড়ার হার আশঙ্কাজনক। ২০২১ সালেও ভোকেশনাল থেকে ঝরে পড়েছেন ৩০ শতাংশ শিক্ষার্থী। যার মধ্যে পুরুষ ৩২ শতাংশ আর নারী ২৮ শতাংশ।
তবে মান সম্পন্ন কারিগরি প্রতিষ্ঠান থেকে কোর্স করে সফল হয়েছেন অনেকেই। যাদের মধ্যে উদ্যোক্তাও হয়েছেন কেউ কেউ। তবে তা সংখ্যায় এখনো আশানুরূপ নয়।
ব্যানবেইসের তথ্য বলছে, কারিগরিতে এখনো বড় বৈষম্য আছে নারীর অংশগ্রহণে। সরকারি বেসরকারি মিলে এ খাতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা সাড়ে ১১ লাখের কিছু বেশি। যার বিপরীতে পুরুষ শিক্ষার্থী ৭২ শতাংশ হলেও নারী মাত্র ২৭ শতাংশ।
২০৩০ সাল নাগাদ কারিগরিতে শিক্ষার্থীদের অন্তর্ভুক্তি ৩০ শতাংশে উন্নীত করতে চায় সরকার; যা এখন অর্ধেকে আটকে আছে।
news24bd.tv/ইস্রাফিল