আলঝেইমার্স রোগের ওষুধে ঐতিহাসিক সাফল্য

সংগৃহীত ছবি

আলঝেইমার্স রোগের ওষুধে ঐতিহাসিক সাফল্য

অনলাইন ডেস্ক

আলঝেইমার্স হলো মস্তিষ্কের এক ধরনের রোগ। এতে আক্রান্ত ব্যক্তির স্মৃতিশক্তি, মেধা, বিচারক্ষমতা, যুক্তিসংগত আবেগ, সামাজিক দক্ষতা হারাতে থাকে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি ও হার বাড়তে থাকে। তবে এই রোগের একটি ওষুধ আবিষ্কৃত হয়েছে; যেটিকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ঐতিহাসিক সাফল্য বলে গণ্য করা হচ্ছে।

খবর বিবিসির।

প্রতিবেদনে ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যমটি জানায়, কয়েক দশকের ব্যর্থতার পর আলঝেইমার্স রোগের ওষুধে সফলতা পেয়েছে বিজ্ঞানীরা। এতে করে একটি নতুন যুগ দেখতে যাচ্ছে বিশ্ব।

আলঝেইমার্স রোগের আবিষ্কৃত ওষুধের নাম লেকানেমেব।

এই ওষুধটির প্রভাব সামান্য হলেও মানুষের দৈনন্দিন জীবনে এর প্রভাব অনেক বড় হবে। আলঝেইমার্স রোগের প্রথম ধাপে কাজ করবে ওষুধটি।

আলঝেইমার্স রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির মস্তিষ্কের কোষগুলো সংকুচিত হতে থাকে, জট লাগে (বিটা অ্যামাইলয়েড) ও অনাকাঙ্ক্ষিত স্তর পড়ে। আর আবিষ্কৃত ওষুধ লেকানেমেব মস্তিষ্কের জটগুলোকে আক্রমণ করবে।

নতুন ওষুধ আবিষ্কারে কাজ করেছে যুক্তরাজ্যের ফার্ম ‘আলঝেইমার্স রিসার্চ ইউকে’। ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে অংশ নেয় ১ হাজার ৭৯৫ স্বেচ্ছাসেবী, যারা কি না আলঝেইমার্সে আক্রান্ত ছিলেন। দীর্ঘ ১৮ মাস তাদের সবাইকে প্রতি রাতে একটি করে লেকানেমেব দেওয়া হতো।

বিটা অ্যামাইলয়েডকে আক্রমণ করে আলঝেইমার্স রোগের চিকিৎসা করা যাবে এমনটা ৩০ বছর আগে জানিয়েছিলেন অধ্যাপক জন হার্ডি। এই বিশ্ব বিখ্যাত গবেষক বলেন, ‘এটি ঐতিহাসিক আবিষ্কার। এর ফলে আমরা আলঝেইমার্স রোগীদের থেরাপি দিতে পারবো। ’

এডিনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক তারা স্প্রিস-জোনস বলেন, ‘আলঝেইমার্স রোগের চিকিৎসায় আমরা এতদিন শতভাগ ব্যর্থ ছিলাম। স্বল্প আকারে হলেও এই সফলতা বিরাট ব্যাপার। ’

সাধারণত আলঝেইমার্স আক্রান্তদের উপসর্গ বুঝা যায় না। সেই জন্যই বর্তমানে রোগটিতে আক্রান্তদের উপসর্গ বোঝার জন্য ওষুধ দেওয়া হয়। কিন্তু এতে করে আক্রান্ত ব্যক্তি সেরে উঠতে পারে না।

মূলত লেকানেমেব এক প্রকার অ্যান্টিবায়োটিক, যেটি কি না ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়াতে আক্রমণ করে। এই ওষুধটি মস্তিষ্ক থেকে অ্যামাইলয়েড পরিষ্কার করতে অর্থাৎ জট খুলতে আমাদের ইমিউন সিস্টেমকে প্রভাবিত করবে।

সান ফ্রান্সিসকোতে আলঝেইমার্স সম্মেলনে ক্লিনিকাল ট্রায়ালের ফলাফলগুলো উপস্থাপিত করা হয়। এ ছাড়া নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিনে এটি প্রকাশ করা হয়।

গবেষণার ফলাফল নিয়ে ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা (এফডিএ) দ্বারা মূল্যায়ন করা হচ্ছে। ফলাফল সন্তোষজনক হলে চলতি বছরেই যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাপক আকারে ওষুধটি ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হবে। আর আগামী বছরে অন্যান্য দেশেও ওষুধটি ব্যবহারের জন্য অনুমতি চাইবে গবেষক দল।

news24bd.tv/মামুন

এই রকম আরও টপিক