প্রতিবন্ধী মানুষের উন্নয়নে সবাইকে কাজ করতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

প্রতিবন্ধী মানুষের উন্নয়নে সবাইকে কাজ করতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

অনলাইন ডেস্ক

প্রতিবন্ধী মানুষের সার্বিক উন্নয়নে সরকারের পাশাপাশি সমাজের সর্বস্তরের জনগণ, সংশ্লিষ্ট সব স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও দেশি-বিদেশি সংস্থাগুলোকে সমন্বিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ৩ ডিসেম্বর ‘৩১তম আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস ও ২৪তম জাতীয় প্রতিবন্ধী দিবস’ উপলক্ষে শুক্রবার দেওয়া এক বাণীতে তিনি এ আহ্বান জানান।

বাণীতে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও ৩১তম আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস ও ২৪তম জাতীয় প্রতিবন্ধী দিবস-২০২২ যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করা হচ্ছে জেনে অত্যন্ত সন্তোষ প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী। দিবসটি উপলক্ষে তিনি বাংলাদেশসহ বিশ্বের সব প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।

 

এবারের আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবসের প্রতিপাদ্য ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের জন্য পরিবর্তনমুখী পদক্ষেপ : প্রবেশগম্য ও সমতাভিত্তিক বিশ্ব বিনির্মাণে উদ্ভাবনের ভূমিকা’ অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ও সময়োপযোগী হয়েছে বলে তিনি বাণীতে উল্লেক করেন।  
 
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ১৯ (১) নম্বর অনুচ্ছেদে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিসহ দেশের সব নাগরিকের সুযোগের সমতা নিশ্চিত করেছেন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারেও প্রতিবন্ধী জনগণের জীবনমান উন্নয়নের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠী আমাদের সমাজের অবিচ্ছেদ্য অংশ, তাদের বাদ দিয়ে রাষ্ট্রের সামগ্রিক উন্নয়ন সম্ভব নয়।

তাই তাদের দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তরিত করতে আমাদের সরকার সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ প্রদান এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টিসহ বহুবিধ উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে চলেছে।

তিনি বলেন, দেশের প্রতিবন্ধী ও অটিজম বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন ব্যক্তিদের ওয়ানস্টপ সার্ভিস প্রদানের লক্ষ্যে আমরা দেশের ৬৪টি জেলা ও ৩৯টি উপজেলায় মোট ১০৩টি প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্র চালু করা হয়েছে। প্রত্যন্ত এলাকার প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর দোরগোড়ায় থেরাপি- সংক্রান্ত সেবা পৌঁছানোর লক্ষ্যে ৪৫টি ভ্রাম্যমাণ মোবাইল রিহ্যাবিলিটেশন থেরাপি ভ্যানের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিবন্ধী শিশুদের শিক্ষার পথ অবারিত করতে সারাদেশে ৭৪টি বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ও ১২টি স্পেশাল স্কুল ফর চিলড্রেন উইথ অটিজম পরিচালিত হচ্ছে। প্রতিবন্ধী ব্যক্তির ক্ষমতায়নের প্রতীক হিসেবে ঢাকার মিরপুরে প্রায় ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৫ তলা বিশিষ্ট মাল্টিপারপাস প্রতিবন্ধী কমপ্লেক্স (সুবর্ণ ভবন) নির্মাণ করা হয়েছে। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে অনুপ্রাণিত করতে প্রায় ৪৪৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ঢাকা জেলার অদূরে সাভারে একটি আন্তর্জাতিক মানের ক্রীড়া কমপ্লেক্স নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের উন্নয়ন কার্যক্রমে সম্পৃক্ত করতে বদ্ধপরিকর। আমার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করছে। আগামীর বিশ্বকে আমরা প্রতিবন্ধী/বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য কল্যাণকর বিশ্ব হিসেবে গড়ে তুলবো, যেখানে নিত্য নতুন প্রযুক্তি-জ্ঞান উদ্ভাবনের মাধ্যমে এ ধরনের মানুষের জীবনযাত্রা সহজতর হবে। আমরা ২০২০ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং ২০২১ সালে আমাদের মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করেছি। সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনকালে জাতিসংঘ বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে ঘোষণা করেছে, যা আমাদের জন্য অত্যন্ত গৌরবের। আমরা জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ২০৩০ অর্জনের লক্ষ্যে কাজ করছি। আমাদের সরকারের গৃহীত সকল উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড বাস্তবায়নের ফলে ২০৪১ সালের বাংলাদেশ উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশে উন্নীত হবে ইনশাল্লাহ।  

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সবার সম্মিলিত কর্মপ্রয়াসে সকল বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করে এ দেশকে আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও নিরক্ষরতামুক্ত অসম্প্রদায়িক চেতনার সোনার বাংলাদেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করব।

তিনি ৩১তম আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস ও ২৪তম জাতীয় প্রতিবন্ধী দিবস- ২০২২ উপলক্ষে গৃহীত সব কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।

news24bd.tv/ইস্রাফিল