বাংলাদেশের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান ইউএনএইচসিআর'র

মিয়ানমারে নির্যাতনের মুখে বাংলাদেশে এসে রাস্তায়, বনের মধ্যে সর্বত্র আশ্রয় নেয় রোহিঙ্গারা। ফাইল ছবি

রোহিঙ্গা সংকটের এক বছর

বাংলাদেশের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান ইউএনএইচসিআর'র

নিউজ টোয়েন্টিফোর অনলাইন

রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদয়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর। রোহিঙ্গা সংকটের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে জেনেভায় শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির মুখপাত্র আন্দ্রেস মাহেসিক এই আহ্বান জানান।

আন্দ্রেস মাহেসিক বলেন, সহিংসতা ও সংঘবদ্ধ বৈষম্যের শিকার হয়ে তখন থেকে ৭ লাখের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশের কক্সবাজারে আশ্রয় নেয়। আর আগে থেকেই সেখানে আশ্রয় নেয় আরো ২ লাখ।

তিনি বলেন, এই সংকটের শুরু থেকেই ইউএনএইচসিআর অতিরিক্ত কর্মী নিয়োগ করে। সড়ক ও আকাশপথে শরণার্থীদের জন্য বিভিন্ন ধরনের সহায়তা সরবরাহ করা হয়। পাশাপশি গত এক বছরে আমাদের কর্মীরা বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষকে সার্বক্ষণিক সহায়তা দিয়ে আসছে। কাউন্সেলিং, যৌন ও লৈঙ্গিক সহিংসতা প্রতিরোধসহ বিভিন্ন ধরনের কাজ করে যাচ্ছে আমাদের কর্মীরা।

‘বিশ্বের সবচেয়ে বড় শরণার্থী ক্যাম্প কুতুপালং ৬ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেয়া হয়েছে। ঘনবসতিপূর্ণ এই ক্যাম্পে আশ্রয়ন, পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা, প্রয়োজনীয় সেবা সহ নারী ও শিশুদের সুরক্ষা প্রদানে প্রতিনিয়ত চ্যালেঞ্জর মুখোমুখি হতে হচ্ছে। এছাড়া গত কয়েকমাসে মৌসুমি বৃষ্টি ও ভূমিধসের হাত থেকে রোহিঙ্গাদের রক্ষায় ব্যাপক কর্মতৎপরতা গ্রহণ করা হয়েছে। ’

তিনি বলেন, এখন যদি আমরা এই সময় এসে মূল্যায়ন করি সেখানে কী অর্জন হয়েছে, তাহলে রোহিঙ্গা ও আশ্রয়দাতা বাংলাদেশকে সহায়তার জন্য আমরা নতুন করে আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ প্রত্যাশা করছি। শরণার্থীদের শিক্ষা, আত্মনির্ভরতাসহ বিভিন্ন প্রতিকূলতা মোকাবেলায় এই সহযোগিতা প্রয়োজন। পাশাপাশি পরিবেশগত প্রভাব থেকে রক্ষা পেতে দ্রত জরুরি সহায়তা প্রয়োজন। বনায়ন ধ্বংস ঠেকাতে লাখ লাখ রোহিঙ্গার খাবার রান্নায় বিকল্প জ্বালানির ব্যবস্থায় উদ্যোগ নিতে হবে।

প্রসঙ্গত, গত বছর ২৪ আগস্ট রাতে রাখাইন রাজ্যে জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটে। এতে পাঁচ পুলিশ ও সাত রোহিঙ্গা নিহত হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে রাখাইন। এর পরই রোহিঙ্গাদের ওপর নৃশংস নির্যাতন শুরু করে দেশটির সেনাবাহিনী ও তার দোসররা। তারা নির্বিচারে গণধর্ষণ করে বালিকা, যুবতী ও নারীদের। গুলি করে হত্যা করে অসংখ্য মানুষকে। আগুন ধরিয়ে নিশ্চিহ্ন করে দেয় গ্রামের পর গ্রাম। প্রাণ বাঁচাতে ২৫ আগস্ট থেকে বাংলাদেশে বানের পানির মতো ঢুকতে শুরু করে রোহিঙ্গা। সর্বশেষ হিসেব অনুযায়ী এখন পর্যন্ত ১২ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অবস্থান করছে।

সম্পর্কিত খবর