পেনাল্টিতে জাপানের স্বপ্ন ভঙ্গ, কোয়ার্টার ফাইনালে ক্রোয়েশিয়া

পেনাল্টিতে জাপানের স্বপ্ন ভঙ্গ, কোয়ার্টার ফাইনালে ক্রোয়েশিয়া

অনলাইন ডেস্ক

কাতার বিশ্বকাপে প্রথম টাইব্রেকার। নির্ধারিত সময়ের খেলা অমীমাংসিত ভাবে শেষ হওয়ায় জাপান-ক্রোয়েশিয়ার খেলা গড়ায় টাইব্রেকারে। কিন্তু শেষ ষোলোর লড়াইয়ে টাইব্রেকারে ছন্দ হারিয়ে ৩-১ গোলে হারে জাপান। চার শটের মধ্যে তিন শুটআউট মিস করায় কোয়ার্টার ফাইনালের স্বপ্নভঙ্গ হয় এশিয়ান জায়ান্টদের।

এর আগে দুর্দান্ত খেলা উপহার দিয়ে জাপান-ক্রোয়েশিয়া দুই দলই এক গোল করে সমতায় থেকে নির্ধারিত সময়ের খেলা শেষ করে। ম্যাচের ফল বের করার জন্য ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত ৩০ মিনিটে। এরপরও দুই দলের কেউ গোলের না দেখা পেলে পেনাল্টি শুটআউটের সিদ্ধান্ত হয়।  এই হারে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার স্বপ্ন হাতছাড়া হলো জাপানের।

২০০২ ও ২০১০ ও ২০১৮ বিশ্বকাপের মতো এবারও শেষ ষোলো থেকে বিদায় নিল এশিয়ার দলটি।

জাপানের হয়ে প্রথম পেনাল্টি শুটআউট মিস করেন তাকুমি মিনামিনো। তবে কোনো ভুল করেননি ক্রোয়েশিয়ার হয়ে প্রথম শট নেয়া নিকোলা ভ্লাসিচ। এরপর দ্বিতীয় শুটআউটে কাউরো মিতোমা পেনাল্টি মিস করে হতাশ করেন এশিয়ার সমর্থকদের। অন্যদিকে মার্সেলো ব্রোজোভিচের নিখুঁত শটে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় ক্রোয়েশিয়া।

তৃতীয় পেনাল্টি শুটআউটে এসে আশা বাঁচিয়ে রাখেন তাকুমা আসানো। এরপর মার্কো লিভাজা জালে বল জড়াতে ব্যর্থ হলে সুযোগ আসে জাপানের পক্ষে। কিন্তু মায়া ইয়োশিদা ফের গোল করতে ব্যর্থ হলে স্বপ্নভঙ্গ হয় জাপানের। মারিও পাসালিচ এসে ১(৩)-১(১) ব্যবধানে ক্রোয়েশিয়ার জয় নিশ্চিত করেন।

কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে প্রথমার্ধে বল দখলে এগিয়ে থাকলেও গোল করার মতো খুব বেশি সুযোগ তৈরি করতে পারেনি লুকা মদ্রিচের দল। মাঝমাঠ থেকে খেলা গুছিয়ে ওপরে ওঠার চেষ্টা চালিয়েছে মদ্রিচ-কোভাচিচরা। অন্যদিকে সুযোগ বুঝে কাউন্টার অ্যাটাকে উঠে ভীতির সঞ্চার করে জাপানিরা। তবে দুদলই প্রতিপক্ষের রক্ষণের সামনে গিয়ে হারিয়েছে বল।

প্রথমার্ধে দুদলই প্রতিপক্ষের গোলে মাত্র ৩টি করে শট নিতে সমর্থ হয়েছে, যার মধ্যে একটি করে শট ছিল লক্ষ্যে। প্রথমার্ধের খেলা যখন গোলশূন্য সমতায় শেষ হওয়ার পথে তখনই চমক দেখান ডেইজেন মায়েদা। ৪৩ মিনিটে কর্নার পায় জাপান। ছোট করে কর্নার নেয়ার পর রুতু দোয়ান ডিবক্সে ক্রস করেন। মায়া ইয়োশিদা প্রথমে হেড নেন। বল পেয়ে আলতো ছোঁয়ায় জালে পাঠান মায়েদা।

ইয়োশিদা ৩৪ বছর ১০৩ দিন বয়সে গোলটি অ্যাসিস্ট করে জাপানের পক্ষে সবচেয়ে বেশি বয়সে অ্যাসিস্ট করার রেকর্ড গড়েন।

দ্বিতীয়ার্ধে নিজেদের খুঁজে পায় ক্রোয়াটরা। দারুণ গতিতে আক্রমণে উঠে আসতে থাকেন পেরিসিচ-বুডিমিররা। তারই ধারাবাহিকতায় পেরিসিচ গোল করে সমতায় ফেরান দলকে। দেজান লভ্রেনের ক্রসে জোরাল হেডে গোল করে রেকর্ডবুকে জায়গা করে নেন টটেনহ্যামে খেলা পেরিসিচ। প্রথম ক্রোয়াট হিসেবে বিশ্বকাপ ও ইউরো মিলিয়ে পাঁচটি আসরে গোল পেলেন তিনি।

দ্বিতীয়ার্ধে দুদলই আক্রমণে মনোযোগ দেয়। ফলে প্রতিপক্ষ বারবার আঘাত চালায় রক্ষণে। তবে দুই গোলরক্ষকই দলকে বাঁচিয়েছেন বারবার। জাপানের বিপক্ষে শারীরিকভাবে এগিয়ে থাকা ক্রোয়াটরা ফিজিক্যাল অ্যাডভান্টেজ কাজে লাগানোর চেষ্টা করলেও খুব একটা সুবিধা করে উঠতে পারেনি। তাতে ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে।

কিন্তু ক্রোয়েশিয়া ও জাপান নিজেদের ভাগ্য নির্ধারণ করতে পারেনি অতিরিক্ত ৩০ মিনিটেও। ১০১তম মিনিটে গোলের দারুণ সুযোগ পেয়েছিল ক্রোয়েশিয়া। তবে পেরিসিচের নেয়া শট গোলবারে প্রবেশের আগেই ব্লক করে দেন সাকাই। তিন মিনিট পর মাঝমাঠ থেকে দ্রুত গতিতে বল নিয়ে ছুটে বক্সের সামনে থেকে গোলের উদ্দেশে জোরালো শট নেন মিতোমা।

তবে ক্রোয়েশিয়ান গোলরক্ষক লিভাকোভিচ দারুণ নৈপুণ্যে সেটি ঠেকিয়ে দলকে বিপদমুক্ত করেন। অতিরিক্ত সময়ের যোগ করা সময়ে লভ্র মাজেরের শট বার ঘেষে যায়। আক্রমণ ও প্রতি-আক্রমণে দুই দল গোলের উদ্দেশে ১২০ মিনিটে সব মিলিয়ে ২৯টি শট নিলেও আর কেউ পায়নি জালের দেখা। তাতে ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। সেখানেই স্বপ্নভঙ্গ হয় জাপানের।

এই রকম আরও টপিক

সম্পর্কিত খবর