বগুড়ায় আবাদি জমিতে পুকুরখননের অপরাধে একজনের জেল

প্রতীকী ছবি

বগুড়ায় আবাদি জমিতে পুকুরখননের অপরাধে একজনের জেল

বগুড়া প্রতিনিধি

বগুড়ার নন্দীগ্রামে আবাদি জমিতে পুকুরখননকালে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে একজনকে আটক করে জেলে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া এস্কেভেটরের ব্যাটারিসহ মাটি বহনকারী কয়েকটি ট্রাক্টরের চাবি জব্দ করা হয়।

গতকাল সোমবার রাত ১০টার দিকে উপজেলার সদর ইউনিয়নের ডেরাহার কড়ইতলা এলাকার হিন্দুপাড়া সড়কের মাথায় আবাদি জমিতে পুকুরখননের সময় অভিযান চালায় ভ্রাম্যমাণ আদালত। এসময় এস্কেভেটর চালককে আটক করে একলাখ টাকা অর্থদণ্ড ও অনাদায়ে ১০ দিনের বিনাশ্রম কারদণ্ডাদেশ দেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ রায়হানুল ইসলাম।

ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে সহযোগিতা করেন থানার এএসআই আবুল কালাম আজাদ।

দণ্ডিত ব্যক্তি নাটোর সদর উপজেলার গোয়ালদিঘী কৃষ্ণপুর এলাকার আসলাম মন্ডলের ছেলে এস্কেভেটর চালক সুজন আলী (২৩)।  

প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, সরকারের নিয়মনীতি না মেনে ওমরপুর-ডেরাহার কড়ইতলা সড়ক ঘেঁষা জমিতে পৌরসভার বৈলগ্রামের ইউনুস আলী পুকুরখননের জন্য সিংড়া ও রণবাঘার এস্কেভেটর ঠিকাদার মিলনসহ কয়েকজনকে টাকা ও মাটি চুক্তিতে কাজ দেয়। সেখানকার মাটি নিয়ে গিয়ে আশপাশের বেশকিছু আবাদি জমি ভরাট করা হচ্ছিল।

গত চারদিন ধরে অপরিকল্পিতভাবে পুকুরখনন করে প্রত্যেক ট্রাক্টর মাটি ৫শ’ টাকা থেকে ৬শ’ টাকা দরে বিক্রি করে। প্রশাসনের কঠোরতায় দিনের বেলা এস্কেভেটর ও মাটি বহনকাজে ব্যবহৃত ট্রাক্টর ওই জমিতে থাকলেও ঠিকাদার ও জমির মালিক পক্ষের কাউকেই দেখা যায় না। প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিতে রাতের আঁধারে চলছিল পুকুরখনন কাজ। খবর পেয়ে রাতেই অভিযানে যান নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ রায়হানুল ইসলাম। এস্কেভেটর চালককে আটক করে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে বালু মহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইনে দণ্ড দেওয়া হয়।  

রোপা আমন ধান কাটা শেষে না হতেই আবাদি জমিতে ফের এস্কেভেটর সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম শুরু হয়েছে। আবাদি জমিতে পুকুরখননের পাশাপাশি এবার পুকুর সংস্কারের নামেও গভীর গর্ত করে মাটি বিক্রি করা হচ্ছে। সেইসব মাটি দিয়ে আবাদি জমি ভরাট করা হয়। এতে ফসলি জমি কমছে। সরকারের নিয়মনীতি মানা হচ্ছে না। এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে, সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এ নির্দেশনার পরও আবাদি জমিতে পুকুরখনন ও ভরাট বন্ধ হয়নি। মাটি ভর্তি ট্রাক্টর চলাচল করায় কোটি টাকায় নির্মাণকৃত সড়ক ও রাস্তাগুলো বেহাল দশায় পরিনত হচ্ছে। মাটি পরে রাস্তা নষ্ট হলেও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা নিরব।  

পুকুরখনন কাজের বিষয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি আছে কিনা জানতে চাইলে ডেরাহার হিন্দুপাড়া সড়ক ঘেঁষা জমিতে পুকুরখননকারি মালিক পক্ষের ইউনুস আলী জানান, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ সবাইকে ম্যানেজ করেই পুকুরখনন কাজ করছেন।  

এ প্রসঙ্গে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ রায়হানুল ইসলাম বলেন, আবাদি জমিতে পুকুরখননের অপরাধে এস্কেভেটর চালককে একলাখ টাকা অর্থদণ্ড করা হয়। অনাদায়ে দশ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। যদি কোথাও পুকুর সংস্কারের নামে গভীর গর্ত বা আবাদি জমিতে পুকুরখননের তথ্য আসে, তাৎক্ষণিক কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

news24bd.tv/রিমু
 

এই রকম আরও টপিক