আইডিএলসি-প্রথম আলো এসএমই পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত

আইডিএলসি-প্রথম আলো এসএমই পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত

অনলাইন ডেস্ক

দেশের সর্ববৃহৎ আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইডিএলসি ফাইন্যান্স এবং সর্বাধিক প্রচারিত দৈনিক প্রথম আলো মিলে অদম্য এসএমই–দের বিজয়ের পথে স্বীকৃতির আলো জ্বালাতে আবারও নিয়ে এল ‘আইডিএলসি–প্রথম আলো এসএমই পুরস্কার ২০২২।

সাধারণের মধ্য থেকেও যারা অসাধারণ, এমন সব ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের সম্মানিত করতে দ্বিতীয়বারের মতো আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে দেশব্যাপী ছড়িয়ে থাকা অগণিত উদ্যোক্তার মধ্য থেকে খুঁজে আনা হয়েছে সেরা ছয়জনকে, যারা অক্লান্ত পরিশ্রম ও নিষ্ঠার মাধ্যমে নিজেদের নিয়ে গেছেন অনন্য উচ্চতায়।

রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে অনুষ্ঠিত এই আয়োজনের চূড়ান্ত পর্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের বাণিজ্যমন্ত্রী-টিপু মুনশি, এমপি। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন উল্লেখযোগ্য সংখ্যক এসএমই উদ্যোক্তা, অতিথিগণ ও সাংবাদিকবৃন্দ।

আরও ছিলেন আইডিএলসি ফাইন্যান্স লিমিটেড এর সিইও এবং এমডি এম জামাল উদ্দিন এবং প্রথম আলো এর সম্পাদক মতিউর রহমানসহ আইডিএলসি ফাইন্যান্স লিমিটেড এবং প্রথম আলো এর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ।

অগণিত আবেদনের মধ্য থেকে বিচারক মণ্ডলীর নিখুঁত যাচাই বাছাই এর মাধ্যমে শিক্ষা, কৃষি, স্বাস্থ্য, উৎপাদন শিল্প, তথ্য প্রযুক্তি ও সেরা নারী উদ্যোক্তা সহ ৬টি ক্যাটাগরির মোট ৬ জন সেরা উদ্যোক্তাকে চূড়ান্ত বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।

দ্বিতীয় বারের মতো আয়োজিত এই অনুষ্ঠানের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল দেশের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে থাকা এসএমই উদ্যোক্তাদের উৎসাহ প্রদানের মাধ্যমে সম্মানিত করা এবং নতুন নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখা।

জুরিবোর্ডের সভাপতি ছিলেন জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) বাংলাদেশের কান্ট্রি ইকোনমিস্ট ড. নাজনীন আহমেদ এবং সদস্য ছিলেন বাইবিট লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা এবং আইডিএলসি–প্রথম আলো এসএমই পুরস্কার–২০২১–এর বিজয়ী অধ্যাপক ড. খোন্দকার সিদ্দিক–ই–রব্বানী, বাংলাদেশ ব্যাংকের এসএমই অ্যান্ড স্পেশাল প্রোগ্রামস ডিপার্টমেন্টের পরিচালক মো. জাকের হোসেন, জাতীয় ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প সমিতি বাংলাদেশের সভাপতি ও সিআইপি মির্জা নূরুল গণী শোভন, এসএমই ফাউন্ডেশনের মহাব্যবস্থাপক ফারজানা খান ও এফএম প্লাস্টিক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও জাতীয় এসএমই উদ্যোক্তা পুরস্কার–২০১৮–এর বিজয়ী মুহাম্মদ গাজী তৌহিদুর রহমান।

এ বছর ছয়টি ক্যাটাগরিতে বিজয়ীরা হলেন কৃষি খাতে মোহাম্মদ ইমরুল হাসান, অর্গানিক চিকেন; শিক্ষা খাতে আয়মান সাদিক, টেন মিনিট স্কুল; স্বাস্থ্য খাতে মোসাম্মাৎ বিউটি বেগম, ইজি লাইফ ফর বাংলাদেশ; তথ্যপ্রযুক্তি খাতে সুবীর নকরেক, নকরেক আইটি ইনস্টিটিউট; উৎপাদনশিল্প খাতে আল–মামুন ও নাসিমুল হক, মাস্টার র‍্যাকস অ্যান্ড ফার্নিচার এবং সেরা নারী উদ্যোক্তা মাকসুদা খাতুন, শাবাব লেদার।

উল্লেখ্য, একটি দেশের অর্থনীতিতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের (এসএমই) অবদান কেমন? বৈশ্বিক হিসাবে মোট ব্যবসার ৯০ শতাংশ এবং কর্মসংস্থানের ৫০ শতাংশ। ভারতে এসএমইদের জিডিপিতে অবদান ৬০ শতাংশ, অস্ট্রেলিয়াতে ৫৭ শতাংশ। বাংলাদেশে প্রায় ১ কোটি এমন প্রতিষ্ঠানের জিডিপিতে অবদান মাত্র ২৩ থেকে ২৭ শতাংশ। অথচ শিল্প খাতের কর্মসংস্থানের ৮০ শতাংশই এসএমই খাতে। আর পুরো শ্রম খাতের ২৫ শতাংশ–ই তাদের।

বাংলাদেশের অর্থনীতি ক্রমে বড় হচ্ছে। বড় হচ্ছে শিল্প খাতে কর্মসংস্থানের সুযোগ। আর সেই কর্মসংস্থানের সবচেয়ে বড় জোগানদার দেশের প্রায় ৮০ লাখ ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা (এসএমই)। দেশের শিল্প-কর্মসংস্থানের ৮০ শতাংশ ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের অবদান। তবে অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের জিডিপিতে এই খাতের অর্জন মাত্র ২৫ শতাংশ। সরকার নতুন এসএমই নীতিমালা: ২০১৯-এ জিডিপিতে ২০২৪ সালের মধ্যে এই খাতের অবদান ৩২ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে। স্বপ্ন মনে হলেও, এটি অসম্ভবও নয়।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, বিভিন্ন প্রতিকূলতা সত্ত্বেও একদল ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা আমাদের চমৎকৃত করে চলেছেন প্রতিনিয়ত। তাদের কেউ কেউ প্রতিজ্ঞায় অটল থাকতে কয়েক লাখ টাকা লোকসানও দিয়েছেন। উদ্যোক্তাদের অনেকে নিজেই তার প্রয়োজনীয় উপকরণ তৈরি করে নিচ্ছেন, কেউ সোনালি আঁশের পুনর্জাগরণের প্রচেষ্টা নিয়েছেন। আবার কেউ একেবারে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর মধ্যে প্রযুক্তির সহায়তায় নতুন দিনের আলো জ্বালাচ্ছেন।

এই রকম আরও টপিক