মিরাজের সেঞ্চুরিতে জয়ের ভিত পেল বাংলাদেশ

ফাইল ছবি

মিরাজের সেঞ্চুরিতে জয়ের ভিত পেল বাংলাদেশ

অনলাইন ডেস্ক

মাত্র ৬৯ রানেই নেই ৬ উইকেট। মিরপুরে ভারতের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে আগে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ পড়ে চরম ব্যাটিং বিপর্যয়ে। এক শ ছোঁয়াই তখন দুরূহ ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায় টাইগারদের সামনে। তবে ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে লড়লেন মাহমুদউল্লাহ-মিরাজ।

গড়লেন ভারতের বিপক্ষে রেকর্ড ১৪৮ রানের জুটি। মিরাজ পেলেন ওয়ানডে ক্যারিয়ারের তার প্রথম সেঞ্চুরি।  তাতে জয়ের ভিত পেয়ে গেল বাংলাদেশ।

আজ বুধবার শেরে বাংলায় সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে জয়ের জন্য ভারতকে ২৭২ রানের লক্ষ্য ছুঁড়ে দিয়েছে বাংলাদেশ।

নির্ধারিত ৫০ ওভারে মেহেদী হাসান মিরাজের অপরাজিত ১০০, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ৭৪ এবং ইনিংসের শেষ দিকে নাসুম আহমেদের ক্যামিওতে ১১ বলে ১৮ রানের ক্যামিওতে ৭ উইকেটের বিনিময়ে স্কোরবোর্ডে ২৭১ রান তোলে টাইগাররা।

সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে ভারতের মুখ থেকে জয় কেড়ে নেয় বাংলাদেশ এই মিরাজের বীরত্বেই। কঠিন চাপের মুখ থেকে অবিশ্বাস্য এক ইনিংস খেলে দলকে জেতান তিনি। আজও মিরাজ যখন ব্যাটিংয়ে আসেন, তখন কাঁপছে বাংলাদেশ। মাত্র ৬৯ রানেই নেই পরীক্ষিত ব্যাটাররা। ওই অবস্থায় নিজেকে হারিয়ে খোঁজা মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে গড়লেন জুটি। ইনিংস শেষ হওয়ার আগে মাহমুদউল্লাহ ফিরেছেন বটে, তবে মিরাজ থামেননি। ক্যারিয়ারের প্রথম ওয়ানডে সেঞ্চুরি তুলেই মাঠ ছাড়েন তিনি। ৮৩ বলে ৮ চার আর ৪ ছক্কার মারে শতরানের মাইলফলকে পৌঁছান মিরাজ।

শেষ উইকেট জুটিতে লেজের সারির ব্যাটার নাসুম আহমেদকে নিয়ে মিরাজ স্কোরবোর্ডে যোগ করেন ৫৪ রান। এতে অবদান ছিল নাসুমেরও। ১১ বলে ১৮ রান করেন তিনি। এর আগে, মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে রেকর্ড ১৪৮ রানের জুটি গড়ে দলকে বাঁচান মিরাজ। ভারতের বিপক্ষে যেকোনো উইকেটে বাংলাদেশের পক্ষে যা সর্বোচ্চ। মাহমুদউল্লাহ ফেরার আগে করেন ৭৪ রান। ৭৪ বলেই আবার ফিফটি করেন তিনি। ওয়ানডে ক্যারিয়ারের এটা মাহমুদউল্লাহর ২৭তম ফিফটি।

মাহমুদউল্লাহর পরে নামলেও তার আগেই ফিফটি তুলে নেন মিরাজ। ৫৫ বলে ফিফটি তুলে নেন তিনি। এরপর আরও বাড়ান রান তোলার গতি। মিরাজ প্রথম পঞ্চাশ থেকে পরের পঞ্চাশে যেতে খেলেন আর মাত্র ২৮ বল! ইনিংসের শেষদিকে মিরাজ-নাসুমের ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশের রানের গতি রীতিমতো দৌড়াচ্ছি। শেষ পাঁচ ওভারে বাংলাদেশ মাত্র ১ উইকেট হারিয়ে তোলে ৭০ রান।

মিরাজ-মাহমুদউল্লাহয় ঘুরে দাঁড়ানোর আগে বাংলাদেশের শুরুর দিকের ব্যাটিং ছিল হতাশাময়। ভারতের বোলাররাও করেছেন দারুণ বোলিং। তাতে টস জিতে লিটন দাসের ব্যাটিং নেওয়া প্রশ্নবিদ্ধও হতে শুরু করে। বাংলাদেশ প্রথম উইকেট হারায় ১১ রানে। মোহাম্মদ সিরাজের ভেতরে ঢোকা বলে লেফ বিফোরের ফাঁদে পড়ে দলীয় স্কোরের সমান রানে বিদায় নেন এনামুল হক বিজয়। ভারতকে দ্বিতীয় সাফল্যও এনে দেন সিরাজ। এবার দারুণ এক ডেলিভারিতে ৭ রান করা লিটন দাসকে বোল্ড করেন তিনি।

সাকিব আল হাসান হাল ধরার চেষ্টা করেছেন। তবে শুরু থেকেই ভারতীয় পেসারদের তোপ সামলাতে পারছিলেন তিনি। কখনো সিরাজ, কখনো উমরান-সাকিবকে উইকেটে সেট হওয়ার সুযোগ দিচ্ছিলেন না কেউ। বাউন্সে রীতিমতো কাবু করে ফেলেন সাকিবকে। সেই সাকিব উইকেট দেন স্পিনার ওয়াশিংটন সুন্দরকে। মারতে গিয়ে ৮ রানে বিদায় নেন তিনি। সাকিবের আগে উমরান মালিকের ঘণ্টাপ্রতি ১৫১ কিলোমিটার গতিতে ছোড়া বলে ক্লিন বোল্ড হন ২১ রান করা শান্ত।  

সাকিব বিদায় নেওয়ার পর আর তিন রান যোগ হতে ফেরেন মুশফিকুর রহিম এবং আফিফ হোসেনও। মুশফিক তাও দুই অঙ্ক স্পর্শ করেছেন (১২ রান), কিন্তু আফিফ রানের খাতা খোলার আগেই বিদায় নেন। ওয়াশিংটন পরপর দুই বলে ফেরান এই দুই ব্যাটারকে। ভারতের হয়ে সর্বোচ্চ তিন উইকেটে পেয়েছেন ওয়াশিংটনই। দুটি করে উইকেট পেয়েছেন উমরান এবং সিরাজ।  

news24bd.tv/সাব্বির