রেমিট্যান্স বৃদ্ধির বিষয়ে পর্তুগাল প্রবাসীদের সাথে মতবিনিময়

রেমিট্যান্স বৃদ্ধির বিষয়ে পর্তুগাল প্রবাসীদের সাথে মতবিনিময়

প্রেস বিজ্ঞপ্তি

পর্তুগালে বাংলাদেশি প্রবাসীদের সাথে রেমিট্যান্স বৃদ্ধির বিষয়ে এক মতবিনিময় সভার আয়োজন করেছে দেশটিতে অবস্থিত বাংলাদেশি দূতাবাস। স্থানীয় সময় বুধবার দেশটির রাজধানী লিসবনে এ আয়োজন করা হয়।

দূতাবাসের চ্যান্সারি ভবনের অডিটোরিয়ামে এ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। এতে লিসবন, পোর্তো এবং পর্তুগালের বিভিন্ন স্থান থেকে বাংলাদেশি কমিউনিটির নেতৃবৃন্দ, ব্যবসায়ী, উদ্যোক্তা, সাংবাদিক এবং অন্যান্য সদস্যরা অংশ নেন।

অধিবেশনের শুরুতে বাংলাদেশি প্রবাসীদেরকে আইনি চ্যানেলের মাধ্যমে বাংলাদেশে রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধির বিষয়ে তাদের ধারণা এবং সুপারিশ প্রকাশ করার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়। এতে বক্তব্য রাখেন বিভিন্ন কমিউনিটি নেতৃবৃন্দ, ব্যবসায়ী ও সাধারণ প্রবাসীরা।

এসময় বক্তারা প্রবাসীরা তাদের রেমিট্যান্সের মাধ্যমে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারছে বলে সন্তোষ প্রকাশ করেন। ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে দেশে রেমিট্যান্স পাঠানোর গুরুত্বের বিষয়ে আলোচনা করেন তারা।

বক্তারা একইসাথে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে প্রবাসীদের অবদানকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেওয়ার ওপর জোর দেন। এসময় তারা বাংলাদেশের বিমানবন্দরে প্রবাসীদের যে হয়রানি ও বাধার সম্মুখীন হয় তা দূর করার দাবি জানান। একইসাথে প্রবাসীদের মৃতদেহ প্রত্যাবাসনের জন্য আরও তহবিল এবং অভাবী প্রবাসীদের জন্য আর্থিক সহায়তার দাবি জানান।

বাংলাদেশে ক্রমবর্ধমান রেমিট্যান্সের বিষয়ে বক্তারা প্রবাসী বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের তাদের ব্যবসায় আরও বাংলাদেশী কর্মী নিয়োগের আহ্বান জানান। এসময় তারা পর্তুগালে একটি বাংলাদেশি ব্যবসায়ী সমিতি গঠনের বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন। তারা জানান, এটা যদি গঠিত হয় তাহলে তাদের সমিতি পর্তুগিজ কর্তৃপক্ষের সাথে স্বার্থ সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।

কয়েকজন জানান, পর্তুগিজ সরকার একটি শিগগিরই রেমিট্যান্সের পরিমাণের উপর একটি সর্বোচ্চ সীমা নির্ধারণ করেছে। যার ফলে ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে দেশে রেমিট্যান্স প্রেরণে বিশাল বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। এসময় অবিলম্বে তারা এই বিষয়টি শিথিল করার জন্য দূতাবাসকে পর্তুগিজ সরকারের সাথে আলোচনার অনুরোধ জানান।

সভায় রাষ্ট্রদূত তারিক আহসান কষ্টার্জিত অর্থ বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেশের উন্নয়নে সহায়তা করার জন্য প্রবাসী বাংলাদেশিদের ধন্যবাদ জানান। তিনি বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বিশেষ করে বহির্বিশ্বের অর্থ দেশে পাঠিয়ে দেশের অর্থনীতির সাথে ভারসাম্য রক্ষায় তাদের অবদানের কথা স্বীকার করেন।

তারিক বলেন, বাংলাদেশ বর্তমানে বিশ্বের সপ্তম বৃহত্তম রেমিট্যান্স গ্রহণকারী দেশ। তিনি বলেন, ২০২০-২১ অর্থবছরে বাংলাদেশ ২৪ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার পেলেও ২০২১-২২ অর্থবছরে তা নেমে ২১ দশমিক ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হয়েছে। তবে সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে রেমিট্যান্স প্রবাহ কমে গেলেও নভেম্বরে আবার বেড়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, বাংলাদেশের রেমিট্যান্স-টু-জিডিপি অনুপাত এখন ৬ শতাংশ যা প্রতিবেশী কিছু রাষ্ট্রের সমান। যদি সেটা কমপক্ষে ৯ শতাংশ হয় তাহলে বাংলাদেশের বার্ষিক রেমিট্যান্স ৪০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে যাবে। এসময় তিনি বাংলাদেশকে বিশ্বের শীর্ষ রেমিট্যান্স গ্রহীতা দেশে পরিণত করতে এবং পর্তুগালকে বাংলাদেশে একটি উল্লেখযোগ্য রেমিট্যান্স প্রেরণকারী দেশে পরিণত করতে এগিয়ে আসার জন্য বাংলাদেশের প্রবাসী সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান।

/FA

এই রকম আরও টপিক