মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনি বাংলাদেশকে আবারও গর্বিত করলেন

ডা. ইন্দ্রজিৎ প্রসাদ

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনি বাংলাদেশকে আবারও গর্বিত করলেন

ডা. ইন্দ্রজিৎ প্রসাদ

বিশ্বের প্রথম ‘গ্লোবাল অ্যাম্বাসাডর  ফর ডায়াবেটিস’ হিসেবে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্বীকৃতি প্রদান করল ইন্টারন্যাশনাল ডায়াবেটিক ফেডারেশন। ডায়াবেটিস নিয়ে জীবনযাপনকারীদের জীবনমান উন্নয়নে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এই সম্মানসূচক উপাধি প্রদান করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী দুই বছর ‘গ্লোবাল অ্যাম্বাসাডর ফর ডায়াবেটিস’ হিসেবে বিশ্বব্যাপী ডায়াবেটিস নিয়ে জীবনযাপনকারী মানুষের মুখপাত্রের দায়িত্ব পালন করবেন। গত সোমবার সন্ধ্যায় পর্তুগালের রাজধানী লিসবনে বিশ্ব ডায়াবেটিক সম্মেলন ২০২২-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে পর্তুগালে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত তারিক আহসান আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিক ফেডারেশনের সদ্য নির্বাচিত সভাপতি অধ্যাপক আকতার হোসেনের কাছ থেকে সম্মাননাপত্র গ্রহণ করেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কেন এই উপাধি দেওয়া হলো, তার সুনির্দিষ্ট কারণ নিশ্চয়ই আছে। তাঁঁর এই উপাধি অর্জনের নেপথ্যে রয়েছে বাংলাদেশের কিছু অসামান্য অর্জন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এই উপাধি দেওয়ার নেপথ্যের কারণগুলোর একটি হচ্ছে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জীবনযাত্রার উন্নতিতে অবদানের স্বীকৃতি।

দেশের সব টাইপ-১ ডায়াবেটিস শিশুদের বিনা মূল্যে জীবন রক্ষাকারী ইনসুলিন প্রদান করা হয়।

এটা বাংলাদেশের মতো মধ্যম আয়ের দেশের জন্য অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং। একই সঙ্গে রুগ্ণ শিশুদের প্রতি তাঁর মমতার বহিঃপ্রকাশ।

দেশের সব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এনসিডি কর্নারের মাধ্যমে ডায়াবেটিক রোগীদের সেবা প্রদান ও বিনা মূল্যে ডায়াবেটিসের ওষুধ প্রদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ওষুধের দাম জনগণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে নিয়ন্ত্রিত রাখতে সরকার সচেষ্ট।  

কমিউনিটি ক্লিনিকে বিনা মূল্যে ডায়াবেটিস পরীক্ষা ও এনসিডি কর্নারে প্রদত্ত ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী ওষুধ বিনা মূল্যে সরবরাহ করা হয়ে থাকে।

বাংলাদেশ গত দুই দশকে স্বাস্থ্যসংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে প্রতিবেশী ও বিশ্বের অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের তুলনায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। কমিউনিটি ক্লিনিক সরকার ও জনগণের সম্মিলিত অংশীদারিমূলক একটি কার্যক্রম।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সদ্যঃস্বাধীন দেশের তৃণমূল পর্যায়ে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছানোর লক্ষ্যে কমিউনিটি ক্লিনিক ধারণার প্রবর্তন করেন। এই কমিউনিটি ক্লিনিক আজ ১৩ হাজার ৫০০-র বেশি কেন্দ্রের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার প্রাণকেন্দ্র।

বেসরকারি প্রতিষ্ঠানেও ডায়াবেটিস সেবার সুযোগ তৈরির জন্য প্রধানমন্ত্রী নিরবচ্ছিন্নভাবে আর্থিক সহায়তা প্রদান করে চলেছেন।

ডায়াবেটিস গবেষণায় অর্থায়ন, প্রণোদনা ও উৎসাহ প্রদান করছেন তিনি।

দেশের সব সরকারি মেডিক্যাল কলেজে পর্যায়ক্রমে ডায়াবেটিস সেবার মান উন্নয়ন ও দক্ষ জনবল তৈরির জন্য হরমোন ও ডায়াবেটিক বিভাগ (অ্যান্ডোক্রিনোলজি বিভাগ) প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।

স্বাস্থ্য খাতে সাফল্যের স্বীকৃতিস্বরূপ এমডিজি পুরস্কার, সাউথ সাউথ পুরস্কার ও গ্যাভি পুরস্কার এবং ভ্যাকসিন হিরো পুরস্কারের মতো অনেক সম্মানজনক আন্তর্জাতিক পুরস্কার অর্জনের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মুকুটে আরেকটি পালক ‘গ্লোবাল অ্যাম্বাসাডর ফর ডায়াবেটিস’।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল হয়েছে। বিশ্বদরবারে নানাভাবে সম্মানজনক অবস্থান তৈরি করতে পেরেছে। ডায়াবেটিস নিয়ে জীবনযাপনকারীদের জীবনমান উন্নয়নে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ইন্টারন্যাশনাল ডায়াবেটিক ফেডারেশন ‘গ্লোবাল অ্যাম্বাসাডর ফর ডায়াবেটিস’ সম্মাননা অর্জনে সম্মানিত হয়েছে বাংলাদেশ।     

লেখক : অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান, ডায়াবেটিস, থাইরয়েড  ও হরমোন রোগ বিভাগ, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল।

news24bd.tv/ইস্রাফিল