টাইব্রেকারে মার্টিনেজ নৈপুণ্যে সেমিফাইনালে আর্জেন্টিনা

সংগৃহীত ছবি

টাইব্রেকারে মার্টিনেজ নৈপুণ্যে সেমিফাইনালে আর্জেন্টিনা

অনলাইন ডেস্ক

ম্যাচের শুরু থেকেই বল দখলে মুনশিয়ানা দেখলেও শেষটায় স্তব্ধ হতে হয়েছে আর্জেন্টিনাকে। ম্যাচের শেষ বাঁশি বাজার অপেক্ষায় থাকা মেসিদের হতাশই হতে হলো উয়েঘহুষ্টের কাছে। তার জোড়া গোলেই ২-০ গোলে পিছিয়ে থাকা নেদারল্যান্ডস ফেরে সমতায়। ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে।

সেখানে একের পর এক আক্রমণে গিয়েও কাঙ্ক্ষিত গোলের দেখা পায়নি আর্জেন্টিনা। ফলে টাইব্রেকারে গড়ায় ম্যাচ। আর সেখানে প্রথম দুই গোল ঠেকিয়ে আর্জেন্টিনাকে সেমিফাইনালে তোলেন মার্টিনেজ। আর্জেন্টিনা ম্যাচ জেতে ৪-৩ ব্যাবধান।
 

টাইব্রেকারে শুরুতেই আর্জেন্টিনাকে সাফল্য এনে দেন মার্টিনেজ। ডাচ অধিনায়কের নেওয়া শট ঠেকিয়ে দেন তিনি। আর্জেন্টিনাকে প্রথম শটে গোল করে এগিয়ে নেন মেসি। ডাচদের নেওয়া দ্বিতীয় শটটিও ঠেকিয়ে দেন মার্টিনেজ। ব্যবধান বাড়াতে ভুল করেনি পারদেস।

আর্জেন্টিনার হয়ে শেষ শটটি নিতে আসেন এনজো ফার্নান্দেজ। লক্ষ্যে রাখতে পারেননি শট। বিপদে পড়ে আর্জেন্টিনা। তবে সেই বিপদ থেকে রক্ষা করে লাউতারো মার্টিনেজ। তার গোলে ৪-৩ ব্যাবধান জয় পায় আর্জেন্টিনা। উঠে যায় সেমিফাইনালে।

এদিন প্রথমার্ধে এগিয়ে থাকা মেসিরা দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই ব্যবধান বাড়ানোর চেষ্টায় আক্রমণ অব্যহত রাখে। তবে গোল আসছিলো না। পাল্টা আক্রমণে গিয়ে সমতায় ফেরার চেষ্টা চালিয়েছে ডাচরাও, তবে কাজ হয়নি তাতে।

অবশেষে ম্যাচের ৭১ মিনিটে আসে সেই ক্ষণ। গোলের উদ্দেশে বল নিয়ে ডি বক্সে ঢুকে পরে অ্যাকুনিয়া। তার পথ রোধ করতে গিয়ে বিপত্তি বাঁধিয়ে ফেলে ডাচরা। পেনাল্টি পায় আর্জেন্টিনা। পেনাল্টির সুযোগ কাজে লাগাতে কোনো ভুল করেননি মেসি। দারুন গোলে দলকে এগিয়ে নেওয়ার সাথে সাথে  বাতিস্তুতার করা বিশ্বকাপে ১০ গোলের রেকর্ড স্পর্শ করেন মেসি।

ম্যাচের ৮০ মিনিটে ব্যাবধান ৩-০ করার সুযোগ আসে আর্জেন্টিনার সামনে। জুলিয়ান আলভারেজের উদ্দেশে বল বাড়িয়ে দেন মেসি। তবে সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি তিনি। এরপর তাকে উঠিয়ে লাউতারো মার্টিনেজকে মাঠে নামায় স্কালোনি। আক্রমণের পরিবর্তে উল্টো এক গোল হজম করে বসে আর্জেন্টিনা।

ম্যাচের ৮২ মিনিটে উয়েঘহুষ্টের দারুন হেডে ব্যবধান কমায় ডাচরা। গোল দিয়ে সাহসী হয়ে ওঠে ডাচরা। একের পর এক আক্রমণে কেপে ওঠে আর্জেন্টিনার রক্ষণভাগ। ম্যাচের ৮৮ মিনিটে ঝামেলার জড়ায় দুই দলের ফুটবলারা। ডাগ আউট থেকে আর্জেন্টিনা ফুটবলারদের উদ্দেশ্যে তেরে আসে ডাচরা। পরে হলুদ কার্ড দেখিয়ে পরিস্থিতি সমাল দেন রেফারি।

ম্যাচের ৯২ মিনিটে ডি বক্সের ঠিক বাইরে ফ্রি কিক পায় ডাচরা। তবে সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি তারা। রেফারির শেষ বাঁশি বাজার অপেক্ষায় তখন আর্জেন্টিনার সমর্থকরা। এমন সময় ডি বক্সের বাইরে আবারও ফ্রি কিক পায় ডাচরা। সেটি কাজেও লাগায় তারা। স্তম্ভিত হয় জয়ের অপেক্ষায় থাকা আর্জেন্টাইন সমর্থকরা। খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে।

অতিরিক্ত সময়ে একের পর এক আক্রমণে গিয়েছে আর্জেন্টিনা। সেই আক্রমণে দিশেহারা তখন ডাচরা। তবুও হয়নি গোল। খেলা গড়ায় টাইব্রেকারে। এদিন ম্যাচে দুই দলের ১২ ফুটবলার দেখেছেন হলুদ কার্ড।  

এর আগে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে মেসি ম্যাজিকের অপেক্ষায় ছিল ফুটবল প্রেমীরা। মেসিও খেলেছেন দলকে জেতানোর লক্ষ্যেই। তবে গোল পাচ্ছিলেন না তিনি। গোলের উদ্দেশে শট নিয়েও হতাশ হতে হচ্ছিল তাকে।

তবে ম্যাচের ৩৪ মিনিটে আর হতাশ হতে হয়নি তাকে। তার কল্যাণেই গোল পায় আর্জেন্টিনা।
মলিনার উদ্দেশে ডি বক্সে বাড়ানো বলটি ছিল ডাচদের জন্য মরণ ফাঁদ। সেই ফাঁদে পরেই গোল হজম করতে হয়েছে ডাচদের।

প্রথমার্ধ শেষে ১-০ তে এগিয়ে আর্জেন্টিনা। এখন লক্ষ্য লিড ধরে রেখে দ্বিতীয়ার্ধে ব্যবধান বাড়িয়ে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করা।

এদিন ম্যাচের শুরু থেকেই গোলের উদ্দেশ্যে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে আক্রমণে গিয়েছে আর্জেন্টিনা। ম্যাচের ১০ মিনিটে গোলের উদ্দেশে মার্কোস অ্যাকুনাকে বল বাড়িয়ে দেন লিওনেল মেসি। তবে সুযোগ লুফে নিতে পারেননি অ্যাকুনা।   

ম্যাচের ২১ মিনিটে ডি বক্সের বাইরে থেকেই শট নেন মেসি। তবে গোল পোস্টে ছিল না সেই শট। ২৩ মিনিটে আর্জেন্টিনা রক্ষণের ভিত নাড়িয়ে দিয়েছিলেন মেমফিস ডিপাই। তবে শেষ পর্যন্ত তার  বাড়ানো বলটিকে লক্ষ্যে রাখতে পারেনি ডাচরা।

ম্যাচের ৩০ মিনিটে হলুদ কার্ড দেখেন আর্জেন্টাইন সহকারি কোচ।   

৩২ মিনিটে আক্রমণে গিয়েছিল আর্জেন্টিনা। তবে গোল করতে পারেননি। এ যাত্রায় হতাশ করেন ডি পল। এরপর মেসি ম্যাজিক দেখে ফুটবল ভক্তরা।

ম্যাচের ৩৪ মিনিট। মাঝ মাঠ থেকে বল কাটিয়ে ডি বক্সে মলিনার উদ্দেশে বল বাড়ান মেসি। বাস এতটুকুই। দারুণ ফিনিশিংয়ে সেটি জালে জড়ান মলিনা। ম্যাচে এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা। এরপর সমতায় ফেরার চেষ্টা চালিয়েও আর কাজ হয়নি ডাচদের। ৪৪ মিনিটে সমতায় ফেরার সুযোগ তৈরি হলেও তা ঠেকিয়ে দেন আর্জেন্টাইন বাজপাখি মার্টিনেজ। ১-০ গোলে লিড নিয়ে স্বস্তিতে থেকে বিরতিতে যায় আর্জেন্টিনা।