ঢাকায় বিএনপির গণসমাবেশ আজ, আসতে পারে নতুন কর্মসূচি 

সংগৃহীত ছবি

ঢাকায় বিএনপির গণসমাবেশ আজ, আসতে পারে নতুন কর্মসূচি 

অনলাইন ডেস্ক

রাজধানীর সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালের কাছে গোলাপবাগ মাঠে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ আজ সকাল ১১টায় শুরু হবে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন। এরই মধ্যে সমাবেশস্থলে জড়ো হতে শুরু করেছেন দলটির নেতাকর্মীরা। কেন্দ্রীয় নেতারা জানান, দাবি আদায়ে এই সমাবেশ থেকে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

শুক্রবার থেকে গোলাপবাগ মাঠে আসতে শুরু করেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। এরই মধ্যে ওই মাঠে নেতাকর্মীদের ভিড় লক্ষ করা যাচ্ছে।  

এই মাঠে সমাবেশের অনুমতি পাওয়ার পরই কর্মীদের নিয়ে গোলাপবাগ মাঠে চলে আসেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা সেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মো. আশরাফ উদ্দিন। তিনি গণমাধ্যমেকে বলেন, ‘মালবাহী গাড়িতে করে ঢাকায় এসেছি।

অনুমতি মিলেছে জেনেই দ্রুত মাঠে চলে আসি। ’ 

সিলেট থেকে ট্রেনে এসেছেন সিলেট জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক রেজওয়ান আহমেদ। তিনি বলেন, ‘৭ ডিসেম্বর রাতেই ঢাকায় এসেছি। পুলিশের তল্লাশির কারণে যে বাসায় উঠেছিলাম, তা ছেড়ে দিয়ে নতুন জায়গায় যেতে হয়েছিল। ’

সমাবেশস্থলে আসা একাধিক নেতাকর্মীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা বেশিরভাগই ঢাকা বাইরের বিভিন্ন জেলা থেকে এসেছেন।  

এর আগে শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে ডিএমপি কমিশনারের সঙ্গে বৈঠকে বসে বিএনপির একটি প্রতিনিধিদল। সেখানে গোলাপবাগে বিএনপিকে সমাবেশ করতে অনুমতি দেয় পুলিশ।

বৈঠক থেকে বেরিয়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, ‘গোলাপবাগে গণসমাবেশ করতে আমরা অনুমতি পেয়েছি। শনিবার বেলা ১১টার দিকে এ সমাবেশ শুরু হবে। ’

বিএনপিকে সমাবেশ করার অনুমতি দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পুলিশও। ডিবিপ্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, বিএনপির প্রস্তাবিত দাবির পরিপ্রেক্ষিতে তাদের গোলাপবাগ মাঠে সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে বিএনপি বিভিন্ন বিভাগীয় শহরে গণসমাবেশ কর্মসূচি করে। এরই ধারাবাহিকতায় শনিবার (১০ ডিসেম্বর) ঢাকায় গণসমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নেয় বিএনপি। দলটি নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশের জন্য পুলিশের কাছে অনুমতি চায়।

তবে পুলিশ নয়াপল্টনে বিএনপিকে সমাবেশের অনুমতি দেয়নি। এর বদলে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করতে বলা হয় বিএনপিকে। তবে বিএনপি নয়াপল্টনে সমাবেশে অনড় থাকে।

একপর্যায়ে বুধবার দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপি নেতাকর্মীরা জমায়েত হলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এতে মকবুল হোসেন নামে স্বেচ্ছাসেবক দলের একজন মারা যান। আহত হন অনেকে। এরপর বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অভিযান চালায় পুলিশ।

এ সময় দলটির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, প্রচার সম্পাদক ও মিডিয়া সেলের সদস্য সচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানীসহ গ্রেফতার করা হয় প্রায় ৪০০ নেতাকর্মীকে।

এদিকে, বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) দিনগত রাতে উত্তরার বাসা থেকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং শাহজাহানপুরের বাসা থেকে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে আটক করে পুলিশ। পরে ডিবি কার্যালয়ে তাদের জিজ্ঞাসাবাদের পর তাদের গ্রেফতার দেখানো হয়।

এরপর বিএনপির গণসমাবেশ নিয়ে সংশয়ের সৃষ্টি হয়। তবে শুক্রবার বিকেলে অবশেষে বিএনপি ও পুলিশ সমঝোতায় পৌঁছে। বিএনপির প্রস্তাবিত গোলাপবাগ মাঠে সমাবেশের অনুমতি দেয় পুলিশ।

এদিকে নাশকতা এড়াতে ঢাকার প্রবেশমুখে তল্লাশি চালাচ্ছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। বাস, কার বা বাইক যে যেভাবেই ঢাকায় ঢুকছেন, তাদের তল্লাশি করা হচ্ছে।  

পুলিশ জানায়, নগরবাসীর নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখেই পুলিশ সক্রিয়ভাবে দায়িত্ব পালন করছে। রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে তল্লাশি করা হচ্ছে, সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করেই। কাউকে হয়রানি করা পুলিশের উদ্দেশ্য নয়।

এদিকে, বিএনপির যেকোনো ধরনের অপতৎপরতা রুখতে সতর্ক পাহারায় রয়েছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। মোড়ে মোড়ে অবস্থান নিয়েছেন তারা।

news24bd.tv/ইস্রাফিল

এই রকম আরও টপিক