'ফোনে কথা বলছিলেন সেই চালক'

প্রতীকী ছবি

'ফোনে কথা বলছিলেন সেই চালক'

নাটোর প্রতিনিধি

নাটোরের লালপুর উপজেলায় বাসের ধাক্কায় এক পরিবারের তিনজনসহ লেগুনার ১৫ যাত্রী নিহতের ঘটনায় চালকের ফোনালাপকে দায়ী করেছেন এক যাত্রী। তিনি বলেন, যাত্রী নিয়ে রওনা হওয়ার পর থেকেই লেগুনার চালক এলোমেলো গাড়ি চালাচ্ছিল। দুর্ঘটনার সময় তিনি মুঠোফোনে কথা বলছিলেন। এ নিয়ে যাত্রীরা তাকে ধমকও দেয়।

এছাড়া বাসটিও বেপরোয়া গতিতে চলছিল বলে জানিয়েছেন বাসের আহত যাত্রীরা।

ওই দুর্ঘটনায় ১৫ জন নিহতের পাশাপাশি আহত হন বাসটির ২০ আরোহী।

লালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম জানান, চ্যালেঞ্জার পরিবহনের একটি বাস যাত্রী নিয়ে পাবনা থেকে রাজশাহী যাচ্ছিল। এদিকে লেগুনাটি যাচ্ছিল বনপাড়া থেকে ঈশ্বরদী।

ক্লিক মোড়ে সাদিয়া ফিলিং স্টেশনের সামনে বাসটি লেগুনাকে ধাক্কা দেয়। বাসের ধাক্কায় লেগুনাটি দুমড়ে-মুচড়ে যায়। এতে অন্তত ১৫ জন নিহত এবং ২০ জন আহত হয়।

নিহতদের মধ্যে তিন শিশু ও ছয়জন নারী রয়েছেন। বাসটির চালক পলাতক। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানান ওসি নজরুল।

প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় সাদিয়া ফিলিং স্টেশনকর্মী জাহের আলী সাংবাদিকদের বলেন, দুর্ঘটনার সময় বৃষ্টি ছিল। ওই সময় বিকট শব্দ শুনে তারা রাস্তায় যান।

নুরসেদ সরদার (৭২) নামের লেগুনার এক আহত যাত্রী সাংবাদিকদের বলেন, লেগুনাটি বড়াইগ্রামের বনপাড়া থেকে পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার দাশুড়িয়া যাচ্ছিল। ছাড়ার পর থেকে চালক এলোমেলো গাড়ি চালাচ্ছিল। দুর্ঘটনার সময় চালক মোবাইল ফোনে কথা বলছিল। দুর্ঘটনায় নিহত লগেনা বেগম নুরসেদ সরদারের স্ত্রী।

বনপাড়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সামসুন নূর সাংবাদিকদের জানান, লেগুনাটির নিবন্ধন ও ফিটনেস ছিল না বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। এছাড়া দুর্ঘটনাবকলিত বাসটি এ সড়কে নিয়মিত চলাচল করে।

এদিকে, ঘটনা তদন্তে জেলা প্রশাসন থেকে একটি কমিটি এবং অপরটি বগুড়া হাইওয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে গঠন করা হয়েছে। এই দুই কমিটিকে আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে এ বিষয়ে বিস্তারিত তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
 
নাটোর জেলা প্রশাসক শাহিনা খাতুন ও বগুড়া হাইওয়ে পুলিশের পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান কমিটির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

জেলা প্রশাসনের কমিটিতে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সাইদুজ্জামানকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। অপর সদস্যরা হলেন- অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বড়াইগ্রাম সার্কেল) হারুনুর রশিদ, বিআরটিএর সহকারী পরিচালক সাইদুর রহমান।

দুর্ঘটনার খবর পেয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সাবির্ক) মো. রাজ্জাকুল ইসলাম ও হারুনুর রশিদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। অপরদিকে বগুড়া হাইওয়ে পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।  
 
এছাড়া জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহত প্রত্যেক পরিবারকে ২০ হাজার টাকা, আহতদের ১০  হাজার টাকা এবং বিনা খরচে চিকিৎসা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন জেলা প্রশাসক শাহিনা খাতুন।

সম্পর্কিত খবর