ডিআইজি পরিচয়ে পিপি আব্দুল্লাহ আবু’র ফোন হ্যাক, থানায় জিডি

ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি ) এডভোকেট মোঃ আব্দুল্লাহ আবু। ছবি নিউজ টোয়েন্টিফোর

ডিআইজি পরিচয়ে পিপি আব্দুল্লাহ আবু’র ফোন হ্যাক, থানায় জিডি

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি ) এডভোকেট মোঃ আব্দুল্লাহ আবুর ব্যবহৃত দুটি মোবাইল নাম্বার হ্যাক হয়েছে। সংঘবদ্ধ চক্র অত্যন্ত সুকৌশলে কাজটি করে বলে জানিয়েছেন পিপি এডভোকেট মোঃ আব্দুল্লাহ আবু। এই ঘটনায় তিনি রাজধানীর কোতয়ালী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন। রোববার সন্ধ্যায় নিউজ টোয়েন্টিফোরকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তিনি।

পিপি এডভোকেট মোঃ আব্দুল্লাহ আবু’র সাধারণ ডায়েরিতে উল্লেখ করা হয়, ১১ ডিসেম্বর সকাল ১১ টা ১১ মিনিটে অফিসে কর্মরত অবস্থায় ০১৯০২ ৪৪৪ ৯৩৫ নম্বর থেকে ফোন করে আমার থেকে জানতে চাওয়া হয় কয়টা সিম আছে। আমি কয়জনের সাথে প্রতিনিয়ত বেশি কথা বলি। সে সময়ে ফোনের অপর প্রান্তের ব্যাক্তি নিজেকে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টার এর ডিআইজি মাসুদ পরিচয় দিলে, আমি তাকে সরল বিশ্বাসে দুটো সিম ব্যবহারের তথ্য জানাই।  

সাধারণ ডায়েরিতে আব্দুল্লাহ আবু আরও উল্লেখ করেন, কেন আমাকে এসব প্রশ্ন করা হচ্ছে সে কথা জানতে চাইলে ফোনের অপর প্রান্ত থেকে বলা হয়, আপনার নাম্বারগুলো আপগ্রেড করছি, নিরাপত্তার বিষয় আছে।

এ কথা শোনার পর আমি তাকে আমার স্ত্রী ও সন্তানের নাম্বার প্রদান করি। এরপর আমার ফোনের নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তখন আরেকটি মোবাইল নম্বর ০১৯৬১ ৮৮২ ৮০৫ থেকে আমার নম্বরে ফোন করে আমাকে বলে * # সহ আরো কিছু কিছু ডিজিট চাপেন। তখন অপর ব্যবহৃত মোবাইলে থাকা অপর সিম থেকে ডিজিটগুলিতে চাপ দেই। এরপর আবার আবার মোবাইল নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

সাধারণ ডায়েরিতে বলা হয়, এরপর সকাল ১১টা ২০ মিনিটের দিকে পিপি অফিসের মুন্সি এস.এম. মাসুদ পারভেজের নম্বরে পুলিশ হেড কোয়াটার্স এর কথা বলে ০১৯৬১ ৮৮২ ৩২২ এই নম্বর থেকে ফোন দিয়ে আমাকে দেয়ার জন্য বলা হয়। ফোন নিয়ে কথা বলার চেষ্টা করলে সে সময়ে ফোন আবারও নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। একইভাবে একটু পর আবার মহানগর দায়রা জজ আদালতের সাক্ষীর সেলে কর্মরত এসআই মোস্তাফিজুর রহমানকে ডিআইজি মাসুদ পরিচয় দিয়ে পুনরায় ফোন করা হয়। ফোনে তাকে বলা হয় আমার সাথে কথা বলিয়ে দেওয়ার জন্য। কিন্তু যখন আমি কথা বলতে যায় তখন আবারও ফোনের নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

এরপর আমার ছেলে কাজী আহসান উল্লাহ শিবলী বাসা থেকে আমার ড্রাইভার আলমকে ফোন করে জানায়, আমার নাম্বার থেকে অন্য কেউ ফোন করে, “আমি এক্সিডেন্ট করে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালের আইসিইউ'তে ভর্তি আছি এবং আরো জানায় যে, আমার পুত্রবধু আফসানা রূপাকে ফোন দিলে সেটিও অন্য কেউ রিসিভ করে বলে জানায় এবং কথিত দূর্ঘটনার সম্পর্কে একই রকম মিথ্যা ও বিভ্রান্তমূলক তথ্য দেয়’’।

এরপর আমি কথিত ডিআইজি মাসুদকে ফোন দিয়ে এসবের উত্তর জানতে চাইলে সঙ্গে সঙ্গে মোবাইল সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। পরবর্তীতে আমি যাচাই করে দেখি যে, আমার মোবাইল থেকে অন্য কোন নাম্বরে ফোন আসেও না যায়ও না। শুধু কল ফরোওয়াডিং দেখায়। তখন আমি কোতয়ালী থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) মোঃ নাজমুল হকসহ কোর্ট এলাকায় কর্মরত অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থাকে বিষয়টি অবহিত করি। এরপর তাদের পরামর্শে আমি আমার সিম ২টি গ্রামীণ ফোন কাস্টমার কেয়ার সেন্টারে গিয়ে রিপ্লেস করি।

সাধারণ ডায়েরিতে আব্দুল্লাহ আবু উল্লেখ করেন, সাম্প্রতিক রাজনৈতিক কারনে ও পিপি হিসাবে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্পর্শকাতর মামলা পরিচালনা করার জন্য আমারও পরিবারের সদস্যদের ক্ষতি করার  জন্য একটি সংঘবদ্ধ চক্র এই অপরাধকর্মটি করেছে।  

news24bd.tv/আলী