ভারতে শুরু নাকে দেয়ার করোনা টিকা কার্যক্রম

সংগৃহীত ছবি

ভারতে শুরু নাকে দেয়ার করোনা টিকা কার্যক্রম

অনলাইন ডেস্ক

ইন্ট্রা-ন্যাজাল বা নাকে নেয়া করোনার টিকা চালু হচ্ছে ভারতে। গত বৃহস্পতিবার (২২ ডিসেম্বর) রাতে বুস্টার ডোজ হিসেবে জরুরিভাবে এই টিকার অনুমোদন দিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। শুক্রবার (২৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা থেকে ১৮ বছরের বেশি যেকোনো ভারতীয় নাগরিক তাদের করোনা ভ্যাকসিন সংক্রান্ত জাতীয় অ্যাপ কো-উইনে গিয়ে রেজিস্ট্রেশন করার সুযোগ পাচ্ছেন।

যারা সুচের মাধ্যমে ভ্যাকসিন নিতে ভয় পাচ্ছিলেন কিংবা ভয় পান, তাদের জন্য নাকের এই ভ্যাকসিন (ন্যাজাল ভ্যাকসিন) সুবিধাজনক হবে।

একই সঙ্গে এই ভ্যাকসিনটি করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট বিএফ.৭ কে রুখতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে বলে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন।

প্রথম দিকে বেসরকারি হাসপাতাল থেকে নেয়া যাবে এই নাকের স্প্রে ভ্যাকসিন। পরে সরকারি হাসপাতালেও পাওয়া যাবে। ভ্যাকসনটি ইতোমধ্য ৯ দফায় ট্রায়াল সম্পন্ন করে এবং এতে চিকিৎসকরা আশানুরূপ ফল পেয়েছেন।

ভারত বায়োটেক নামের সংস্থা তৈরি করেছে এই ভ্যাকসিন। যারা ভারতের প্রথম করোনা ভ্যাকসিন ‘কো-ভ্যাকসিন’ বাজারে এনেছিল।

শিবব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় নামে কলকাতার একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দাবি করেছেন, যারা অন্য ভ্যাকসিনও নিয়েছিলেন তারাও এখন নাকের এই বুস্টার ভ্যাকসিন নিতে পারবেন।

এদিকে চীনে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের হার বেড়ে যাওয়ায় সতর্ক অবস্থানে ভারত। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির খবর, ভারতে এখনো দ্রুত গতিতে করোনাভাইরাস ছাড়াচ্ছে এমন খবর পাওয়া যায়নি। তারপরও পূর্ব সতর্কতা হিসেবে দেশটিতে করোনা পরীক্ষার হার বাড়ানোর নির্দেশেনা দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ভাইরাসের জিনোম সিকুয়েন্স নিয়ে গবেষণা কার্যক্রম বাড়ানোর নির্দেশও দিয়েছেন তিনি। বৃহস্পতিবার (২২ ডিসেম্বর) কোভিড-১৯ সংক্রান্ত একটি কমিটির বৈঠকে এই নির্দেশ দেন। মোদি বৈঠকে সাধারণ জনগণকে মাস্ক ব্যবহারের অনুরোধ করেন।

দেশটির সরকারি পর্যায়ে জানানো হয়, করোনার আশঙ্কায় পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব ধরনের পদক্ষেপ নিতে বদ্ধপরিকর সরকার। গত কয়েক দিন ধরে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার ও রাজ্য সরকার করোনা সংক্রমণ নিয়ে সরকারি পর্যায়ে দফায় দফায় বৈঠকে মিলিত হচ্ছে।  

করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে ভারত জনস্বাস্থ্য চরম ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। এরই মধ্যে দক্ষিণ ভারতে চারজনের শরীরে বিএফ.৭ ভ্যারিয়েন্ট মিলেছে বলে দেশটির বিভিন্ন গণমাধ্যমে জানানো হয়েছে।

করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট অতীতের সব ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণের গতিকেও হার মানাচ্ছে বলে দাবি বিশেষজ্ঞদের। বিএফ.৭ একজনের শরীর থেকে দ্রুত অন্তত ১৮ থেকে ২২ জনের শরীরে সংক্রমিত করবে। ১৩০ কোটি মানুষের দেশে এই ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়লে বড় ধরনের বিপর্যয় নেমে আসতে পারে।

পরিস্থিতি মোকাবিলায় নতুন করে বেশ কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করেছে দেশটির প্রশাসন। বিশেষ করে বিদেশ থেকে আসা যাত্রীদের অবশ্যই দুটো ডোজের ছাড়পত্র দেখাতে হচ্ছে। করতে হচ্ছে আরটিপিআর টেস্ট। অস্বাভাবিক তাপমাত্রা পেলেই পাঠানো হচ্ছে আইসোলেশনে। নতুন করে থার্মাল গান দিয়ে তাপ মেপে বিমান বন্দরে ঢুকানো হচ্ছে যাত্রীদের।

ভারতে এখন পর্যন্ত করোনা আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় সাড়ে চার কোটি। মারা গেছেন প্রায় সাড়ে ৫ লাখ মানুষ। এখন পর্যন্ত দেশটির ৭৪ শতাংশ মানুষ প্রথম ডোজ, ৬৮ শতাংশ মানুষ দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন। দেশজুড়ে জারি রয়েছে টিকাকরণ কর্মসূচি।

news24bd.tv/আমিরুল

এই রকম আরও টপিক