নেপাল থেকে ফ্রান্সে ‘বিকিনি খুনি’ চার্লস

সংগৃহীত ছবি

নেপাল থেকে ফ্রান্সে ‘বিকিনি খুনি’ চার্লস

অনলাইন ডেস্ক

‘বিকিনি খুনি’ হিসেবে পরিচিত ফরাসি সিরিয়াল কিলার চার্লস শোভরাজ নেপালে প্রায় ২০ বছর কারাভোগের পর মুক্তি পেয়ে শনিবার ফ্রান্সে পৌঁছেছেন। গত শতাব্দীর সত্তরের দশকে এশিয়ার বিভিন্ন দেশে একাধিক হত্যার জন্য দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন তিনি।

বিবিসি জানিয়েছে, শোভরাজের বয়স ও স্বাস্থ্য বিবেচনা করে নেপালের সর্বোচ্চ আদালত গত বুধবার তাকে মুক্তির আদেশ দিয়ে ১৫ দিনের মধ্যে ফ্রান্সে ফিরে যেতে বলেন। এরপর গতকাল শুক্রবার তাকে মুক্তি দেওয়া হয় এবং কাঠমাণ্ডু বিমানবন্দরে তার জন্য একটি ফ্লাইট বরাদ্দ রাখা হয়।

ফ্লাইটটি কাতের রাজধানী দোহা হয়ে প্যারিসে গিয়েছে। কাঠমাণ্ডু ত্যাগ করার আগে শোভরাজ সাংবাদিকদের বলেছেন, তিনি নিরপরাধ ছিলেন।

উড়োজাহাজে ওঠার আগে সাংবাদিকদের শোভরাজ বলেন, আমি এখন ভালো বোধ করছি। আমার অনেক কিছু করার আছে।

অনেক লোকের বিরুদ্ধে মামলা করতে হবে।

সাংবাদিকেরা তাকে জিজ্ঞেস করেন, আপনাকে ভুলভাবে সিরিয়াল কিলার হিসেবে পরিচিত করা হয়েছে কিনা?’ জবাবে তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, হ্যাঁ।

আজ সকালে তিনি ফ্রান্সের রাজধানীতে পৌঁছেছেন বলে এএফপির একজন সাংবাদিক নিশ্চিত করেছেন। প্যারিস বিমান বন্দরের একটি সূত্র এএফপিকে বলেছেন, প্যারিসে পৌঁছার পর তার পরিচয় পরীক্ষার জন্য শোভরাজকে তুলে নিয়ে গেছে সীমান্ত পুলিশ। প্রয়োজনীয় পরীক্ষার পর তাকে ছেড়ে দেওয়া হবে।

শোভরাজের জন্ম ভিয়েতনামের সাইগনে। তার বাবা ভারতীয় এবং মা ছিলেন ভিয়েতনামের নাগরিক। তবে শোভরাজ ফ্রান্সের নাগরিক। তার হাতে খুন হওয়া অধিকাংশ নারীর পরনেই থাকত বিকিনি, তাই তার নাম হয়ে যায় ‘বিকিনি কিলার’। খুন করে সরীসৃপের মতো নিঃশব্দে পালিয়ে যেতেন শোভরাজ। তাই বিবিসি তাকে নিয়ে নির্মিত নাটকটির নাম দিয়েছিল ‘দ্য সারপেন্ট’। গত বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৮ পর্বে সিরিজটি প্রচার করেছিল বিবিসি।

শোভরাজের বয়স এখন ৭৮। ১৯৭০ সালের মাঝামাঝি সময়ে পাতায়া সমুদ্র সৈকতে বিকিনি পরা ছয় নারীকে মাদক খাওয়ানোর পর হত্যার অভিযোগে শোভরাজের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিল থাই সরকার।

তবে তিনি প্রথম গ্রেপ্তার হয়েছিলেন ভারতে। ১৯৭৬ সালে দিল্লিতে তিন পর্যটককে বিষ খাওয়ানোর অভিযোগে তাকে তিহার কারাগারে পাঠানো হয়েছিল। ১৯৮৬ সাল থেকে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত তিনি ভারতের কারাগারে ছিলেন।

ভারতের কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পরে শোভরাজ ফ্রান্সে ফিরে গিয়েছিলেন। কিন্তু ২০০৩ সালে তিনি নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর একটি ক্যাসিনোতে গ্রেপ্তার হন এবং মার্কিন পর্যটক কোনি জো ব্রোনজিককে হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত হন। সেই থেকে তিনি কাঠমাণ্ডুর কারাগারে বন্দী ছিলেন।  
সুত্র : বিবিসি ও এএফপি

news24bd.tv/আলী