প্রতিদিন করোনা শনাক্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা এখন থেকে আর প্রকাশ করবে না চীন। করোনাভাইরাস মোকাবেলায় দেওয়া কঠোর বিধিনিষেধ শিথিল করার পরপরই সৃষ্ট ভয়াবহ সংক্রমণ পরিস্থিতিতে তাদের দেওয়া তথ্য নিয়ে সন্দেহের সৃষ্টি হয়। এমন পরিস্থিতিতে দৈনিক সংক্রমণ-মৃত্যুর তথ্য দেয়া বন্ধ করলো চীনের স্বাস্থ্য কমিশন (এনএইচসি)। খবর দ্যা গার্ডিয়ানের।
তবে গবেষণার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য প্রকাশ করবে চীনের সেন্টার ফর ডিসিস কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন। কেন এই পরিবর্তন, আর চীনের সিডিসি কতদিন পরপর কোভিডের হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করবে সে সম্বন্ধে কিছু বলেনি তারা।
কোভিড সংক্রমণ প্রতিরোধে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ চীনের অসংখ্য শহরের কোটি কোটি বাসিন্দাকে মাসের পর মাস ক্লান্তিহীন লকডাউন ও কঠোর সব বিধিনিষেধের ভেতর দিয়ে যেতে হয়েছে।
এর আগে করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে চীন সরকার।
সংক্রমণের ব্যাপক ঊর্ধ্বগতির মধ্যে দৈনিক শনাক্ত-মৃত্যুর তথ্য প্রকাশ বন্ধের আগের চারদিন এনএইচসি দেশজুড়ে কোভিডে কোনো মৃত্যু হয়নি বলেও জানিয়েছিল।
চীন অবশ্য তাদের কোভিডে মৃত্যুর সংজ্ঞা বদলে কেবল করোনাভাইরাসজনিত নিউমোনিয়া ও শ্বাসযন্ত্র বিকল হয়ে মৃত্যুকেই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল; তাদের এই সিদ্ধান্তে বিশ্বজুড়ে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের চোখ কপালেও উঠে গিয়েছিল।
ব্রিটিশ স্বাস্থ্যতথ্য প্রতিষ্ঠান এয়ারফিনিটি কয়েকদিন আগে চীন এখন কোভিডে প্রতিদিন ১০ লাখের বেশি আক্রান্ত ও ৫ হাজারের বেশি মৃত্যু দেখছে বলে ধারণা দিয়েছিল। ব্লুমবার্গ ও ফিনান্সিয়াল টাইমসের বরাত দিয়ে সিএনএন জানিয়েছে, ডিসেম্বরের প্রথম ২০ দিনে করোনা সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে ২৫ কোটি। বৃহস্পতিবার সরকারি হিসেবে দেশটিতে সংক্রমণের সংখ্যা ৩ হাজার ৩৯ জন হলেও সিএনএন বলছে, সেদিন সংক্রমণের সংখ্যা ৩ কোটি ৭০ লাখ।
সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি সত্ত্বেও চীনজুড়ে এখন কোভিড শনাক্তে পরীক্ষার পরিমাণ কমেছে, যে কারণে তাদের তথ্যে এমনিতেও বিশ্বাস রাখা যাচ্ছিল না; চীন তাদের আক্রান্ত ও মৃত্যুর পরিমাণ কমিয়ে বলে বলেও অনেকের সন্দেহ আছে।
এদিকে রোগীর সংখ্যা চীনের স্বাস্থ্য কাঠামোর ওপরও ব্যাপক চাপ সৃষ্টি করেছে, অনেক জায়গায় অসুস্থ কর্মীদের কাজে যোগ দিতে বলা হয়েছে, কোথাও কোথাও অবসর নেওয়া কর্মীদেরও ফের নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম।
জানুয়ারিতে চান্দ্র নববর্ষের সময়, যখন বিপুল সংখ্যক লোক বাড়ি ফিরবে, তখন রোগীর চাপ ঠেকাতে এখন থেকেই ব্যবস্থা নেওয়ারও তাগিদ দিয়েছে তারা।
news24bd.tv/আজিজ